সোনালী জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি, পিছিয়ে পড়েছে রূপালী
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার খানিকটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়েছে রূপালী ব্যাংক।
বিগত বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের আমলে রূপালী ব্যাংক বিক্রির প্রচেষ্টায় ব্যাংকটির সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে না পারায় এ দফায় রূপালী ব্যাংকের পরিস্থিতি খারাপ হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রস্তুত প্রতিবেদনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্য তিন ব্যাংক মোটামুটি ভালো পর্যায়ে এলেও রূপালী ব্যাংক প্রান্তিক পর্যায়েই পড়ে থাকার তথ্য মিলেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের মে মাসে তত্কালীন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে নিবিড় তত্ত্বাবধানে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এক সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত অনুসারে রাষ্ট্র খাতের এসব ব্যাংককে সমস্যাকবলিত ব্যাংকের পর্যায়ে এনে বাংলাদেশ ব্যাংক তখন থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। এর পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি তিন মাস অন্তর ব্যাংকগুলোর অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছিল। দীর্ষ সাড়ে ছয় বছরে প্রথম তিনটি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালো মানে পৌঁছেছে। এর মধ্যে অবশ্য বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে ২০০৭ সালের মে-জুন মাসে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংককে কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয় এবং একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে উচ্চ বেতনে চুক্তিভিত্তিক একজন শীর্ষ নির্বাহী নিয়োগ করা হয়। যদিও এখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাতেই ব্যাংকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। নিয়োগ, পদোন্নতি, মহাব্যবস্থাপকদের (জিএম) প্যানেল তৈরি সবক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ই আগের মতো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই ব্যাংকগুলোকে পরিচালনা করছে। বিধি অনুসারে কোম্পানির ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদই এসব কাজে ক্ষমতাবান হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, রূপালী ব্যাংক অনেক আগে থেকে কোম্পানি হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় রূপালী বাদে অন্য ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। সর্বশেষ ক্যামেল রেটিংয়ে তিনটি ব্যাংকের সংযুক্ত মান হয়েছে ৩ বা মোটামুটি ভালো। কিন্তু সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ত্রৈমাসিক হিসাবে রূপালী ব্যাংকের সংযুক্ত মান হয়েছে ৪ বা প্রান্তিক।
বাংলাদেশ ব্যাংক মূলত ‘ক্যামেল রেটিং’-এ মূলধন-পর্যাপ্ততা (সি), সম্পদের গুণগতমান (এ), ব্যবস্থাপনা (এম), উপার্জন ক্ষমতা (ই), তারল্য (এল) এবং বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা (এস) পরিস্থিতি বিবেচনা করে।
সোনালী ব্যাংক: জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে সেপ্টেম্বর ’০৯ প্রান্তিকে সোনালী ব্যাংকের মূলধন-পর্যাপ্ততা, ব্যবস্থাপনা, উপার্জন ক্ষমতা ও তারল্যে ব্যাংকটির অবস্থা মোটামুটি ভালো উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতায় সন্তোষজনক ও সম্পদের মানে অসন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে ব্যাংকটি।
সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ৩১ দশমিক ৬২ শতাংশ, পরিমাণে যা প্রায় ছয় হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। এই খারাপ মানের সম্পদ ছাড়া ব্যাংকটির আর বাকি আর্থিক মানদণ্ডগুলো যেমন—কোনো ঝুঁকিনির্ভর সম্পদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মূলধন রয়েছে, পুঞ্জীভূত ক্ষতি নেই, ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত পরিস্থিতি ভালো এবং উপার্জন ক্ষমতাও ভালো। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, তবে পোশাকশিল্প খাতে তা সন্তোষজনক মাত্রার মধ্যেই আছে অর্থাত্ ১৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সন্তোষজনক মাত্রা হলো ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
জনতা ব্যাংক: জনতা ব্যাংকের পরিস্থিতি চার ব্যাংকের মধ্যেই ভালো। মূলধন-পর্যাপ্ততা ও উপার্জন ক্ষমতার দিক থেকে ব্যাংকটির অবস্থান সন্তোষজনক। ব্যবস্থাপনা ও বাজার ঝুঁকির বিবেচনায় ব্যাংকটির পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো। তারল্য পরিস্থিতি শক্তিশালী। তবে সম্পদের গুণগতমানে ব্যাংকটি এখনো প্রান্তিক পর্যায়ে রয়েছে।
জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা পরিমাণে এক হাজার ৪১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। প্রয়োজনীয় মূলধন ব্যাংকটিতে রয়েছে, পুঞ্জীভূত ক্ষতি নেই, ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত পরিস্থিতি ভালো এবং উপার্জন ক্ষমতাও ভালো। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, তবে পোশাকশিল্প খাতে তা সন্তোষজনক মাত্রার মধ্যেই আছে অর্থাত্ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
অগ্রণী ব্যাংক: জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে সেপ্টেম্বর ’০৯ প্রান্তিকে অগ্রণী ব্যাংকের মূলধন-পর্যাপ্ততা, ব্যবস্থাপনা ও উপার্জন ক্ষমতা মোটামুটি ভালো উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা ও তারল্যে ব্যাংকটির পরিস্থিতি শক্তিশালী। আর সম্পদের মানে অসন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে ব্যাংকটি।
অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশ, পরিমাণে যা দুই হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। এই খারাপ মানের সম্পদ ছাড়া ব্যাংকটির আর বাকি আর্থিক মানদণ্ডগুলো যেমন—কোনো ঝুঁকিনির্ভর সম্পদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মূলধন রয়েছে, পুঞ্জীভূত ক্ষতি নেই, ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উপার্জন ক্ষমতাও ভালো। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, পোশাকশিল্প খাতে তবে তা সন্তোষজনক মাত্রার মধ্যেই আছে অর্থাত্ ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
রূপালী ব্যাংক: বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে মূলধন-পর্যাপ্ততা ও সম্পদের গুণগতমানে রূপালী ব্যাংকের পরিস্থিতি অসন্তোষজনক। ব্যবস্থাপনা ও উপার্জন ক্ষমতায় প্রান্তিক। তারল্য পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো এবং বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতায় সন্তোষজনক।
রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ, পরিমাণে যা এক হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। ঝুঁকিনির্ভর সম্পদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মূলধন ৫৩১ কোটি টাকার বিপরীতে ব্যাংকটি সংরক্ষণ করতে পেরেছে ৪৪৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। পুঞ্জীভূত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তবে ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত পরিস্থিতি ভালো। কিন্তু মুনাফা ও পুঞ্জীভূত ক্ষতি সমন্বয় করার পর উপার্জন ক্ষমতা শূন্যতে রয়েছে। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, পোশাকশিল্প খাতে যা ঝুঁকিপূর্ণ, ৩০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সন্তোষজনক মাত্রা হলো ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
বিগত বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের আমলে রূপালী ব্যাংক বিক্রির প্রচেষ্টায় ব্যাংকটির সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে না পারায় এ দফায় রূপালী ব্যাংকের পরিস্থিতি খারাপ হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রস্তুত প্রতিবেদনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্য তিন ব্যাংক মোটামুটি ভালো পর্যায়ে এলেও রূপালী ব্যাংক প্রান্তিক পর্যায়েই পড়ে থাকার তথ্য মিলেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের মে মাসে তত্কালীন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে নিবিড় তত্ত্বাবধানে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এক সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত অনুসারে রাষ্ট্র খাতের এসব ব্যাংককে সমস্যাকবলিত ব্যাংকের পর্যায়ে এনে বাংলাদেশ ব্যাংক তখন থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। এর পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি তিন মাস অন্তর ব্যাংকগুলোর অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছিল। দীর্ষ সাড়ে ছয় বছরে প্রথম তিনটি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালো মানে পৌঁছেছে। এর মধ্যে অবশ্য বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে ২০০৭ সালের মে-জুন মাসে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংককে কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয় এবং একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে উচ্চ বেতনে চুক্তিভিত্তিক একজন শীর্ষ নির্বাহী নিয়োগ করা হয়। যদিও এখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাতেই ব্যাংকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। নিয়োগ, পদোন্নতি, মহাব্যবস্থাপকদের (জিএম) প্যানেল তৈরি সবক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ই আগের মতো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই ব্যাংকগুলোকে পরিচালনা করছে। বিধি অনুসারে কোম্পানির ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদই এসব কাজে ক্ষমতাবান হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, রূপালী ব্যাংক অনেক আগে থেকে কোম্পানি হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় রূপালী বাদে অন্য ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। সর্বশেষ ক্যামেল রেটিংয়ে তিনটি ব্যাংকের সংযুক্ত মান হয়েছে ৩ বা মোটামুটি ভালো। কিন্তু সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ত্রৈমাসিক হিসাবে রূপালী ব্যাংকের সংযুক্ত মান হয়েছে ৪ বা প্রান্তিক।
বাংলাদেশ ব্যাংক মূলত ‘ক্যামেল রেটিং’-এ মূলধন-পর্যাপ্ততা (সি), সম্পদের গুণগতমান (এ), ব্যবস্থাপনা (এম), উপার্জন ক্ষমতা (ই), তারল্য (এল) এবং বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা (এস) পরিস্থিতি বিবেচনা করে।
সোনালী ব্যাংক: জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে সেপ্টেম্বর ’০৯ প্রান্তিকে সোনালী ব্যাংকের মূলধন-পর্যাপ্ততা, ব্যবস্থাপনা, উপার্জন ক্ষমতা ও তারল্যে ব্যাংকটির অবস্থা মোটামুটি ভালো উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতায় সন্তোষজনক ও সম্পদের মানে অসন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে ব্যাংকটি।
সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ৩১ দশমিক ৬২ শতাংশ, পরিমাণে যা প্রায় ছয় হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। এই খারাপ মানের সম্পদ ছাড়া ব্যাংকটির আর বাকি আর্থিক মানদণ্ডগুলো যেমন—কোনো ঝুঁকিনির্ভর সম্পদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মূলধন রয়েছে, পুঞ্জীভূত ক্ষতি নেই, ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত পরিস্থিতি ভালো এবং উপার্জন ক্ষমতাও ভালো। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, তবে পোশাকশিল্প খাতে তা সন্তোষজনক মাত্রার মধ্যেই আছে অর্থাত্ ১৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সন্তোষজনক মাত্রা হলো ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
জনতা ব্যাংক: জনতা ব্যাংকের পরিস্থিতি চার ব্যাংকের মধ্যেই ভালো। মূলধন-পর্যাপ্ততা ও উপার্জন ক্ষমতার দিক থেকে ব্যাংকটির অবস্থান সন্তোষজনক। ব্যবস্থাপনা ও বাজার ঝুঁকির বিবেচনায় ব্যাংকটির পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো। তারল্য পরিস্থিতি শক্তিশালী। তবে সম্পদের গুণগতমানে ব্যাংকটি এখনো প্রান্তিক পর্যায়ে রয়েছে।
জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা পরিমাণে এক হাজার ৪১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। প্রয়োজনীয় মূলধন ব্যাংকটিতে রয়েছে, পুঞ্জীভূত ক্ষতি নেই, ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত পরিস্থিতি ভালো এবং উপার্জন ক্ষমতাও ভালো। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, তবে পোশাকশিল্প খাতে তা সন্তোষজনক মাত্রার মধ্যেই আছে অর্থাত্ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
অগ্রণী ব্যাংক: জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে সেপ্টেম্বর ’০৯ প্রান্তিকে অগ্রণী ব্যাংকের মূলধন-পর্যাপ্ততা, ব্যবস্থাপনা ও উপার্জন ক্ষমতা মোটামুটি ভালো উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা ও তারল্যে ব্যাংকটির পরিস্থিতি শক্তিশালী। আর সম্পদের মানে অসন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে ব্যাংকটি।
অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশ, পরিমাণে যা দুই হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। এই খারাপ মানের সম্পদ ছাড়া ব্যাংকটির আর বাকি আর্থিক মানদণ্ডগুলো যেমন—কোনো ঝুঁকিনির্ভর সম্পদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মূলধন রয়েছে, পুঞ্জীভূত ক্ষতি নেই, ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উপার্জন ক্ষমতাও ভালো। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, পোশাকশিল্প খাতে তবে তা সন্তোষজনক মাত্রার মধ্যেই আছে অর্থাত্ ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
রূপালী ব্যাংক: বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে মূলধন-পর্যাপ্ততা ও সম্পদের গুণগতমানে রূপালী ব্যাংকের পরিস্থিতি অসন্তোষজনক। ব্যবস্থাপনা ও উপার্জন ক্ষমতায় প্রান্তিক। তারল্য পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো এবং বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতায় সন্তোষজনক।
রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ, পরিমাণে যা এক হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। ঝুঁকিনির্ভর সম্পদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মূলধন ৫৩১ কোটি টাকার বিপরীতে ব্যাংকটি সংরক্ষণ করতে পেরেছে ৪৪৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। পুঞ্জীভূত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তবে ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে (প্রভিশন) ঘাটতি নেই, আমানত পরিস্থিতি ভালো। কিন্তু মুনাফা ও পুঞ্জীভূত ক্ষতি সমন্বয় করার পর উপার্জন ক্ষমতা শূন্যতে রয়েছে। ব্যাংকটির ঋণ সর্বাধিক পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, পোশাকশিল্প খাতে যা ঝুঁকিপূর্ণ, ৩০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সন্তোষজনক মাত্রা হলো ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
No comments