ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে: এএনআইকে মির্জা ফখরুল
প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা পানি বণ্টন ইস্যু, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, বাণিজ্যে অসামঞ্জস্যতা নিয়ে কথা তুলেছি। একই সঙ্গে ভারতের প্রধান ইস্যু হলো নিরাপত্তা সমস্যা। আমরা নিশ্চয়তা দিয়েছি যে, আমরা যদি ক্ষমতায় আসি তাহলে এটা নিশ্চিত করবো যে- আমাদের এই দেশ ব্যবহার করতে পারবে না বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
মির্জা ফখরুল বলেন, সব সময়ই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে। কিন্তু বিএনপি ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে। আমি মনে করি বরফ গলতে শুরু করেছে। আমি আশা করি এই সম্পর্ক এ সময়ে আরও উন্নত হবে। আমাদের পরিস্থিতি তারা বোঝার চেষ্টা করবে। আমরা বিশেষ করে পুনর্ব্যক্ত করেছি যে, বাংলাদেশের জনগণের পালস বোঝার চেষ্টা করা উচিত ভারতের। সব ডিম তাদের একটি বাস্কেটে রাখা উচিত হবে না। তাদের উচিত হবে জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক গড়ে তোলা।
এরই মধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের এক ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তারপরই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই এটা খুব বড় বিষয়। বাংলাদেশে ক্ষমতার রাজনীতিতে এই পরিবর্তনের পর জয়শঙ্করের সঙ্গে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টার সাক্ষাৎ বড় একটি বিষয় এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি- এই বৈঠকের পর সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত। দুই দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের তিক্ত বিরোধী বিএনপি। তারা মনে করে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দেয়া উচিত, যাতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মুখোমুখি হন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি এখনো জানি না যে, সরকার এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করেছে কিনা। কিন্তু আমি মনে করি, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর উচিত ফেরত এসে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মুখোমুখি হওয়া এবং তার জবাবদিহিতার মুখোমুখি হওয়া।
৯ থেকে ১৩ই অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা উৎসব। তাকে সামনে রেখে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সব ইউনিটকে সতর্ক করেছে বিএনপি। বাংলাদেশে ৩২,৬৬৬টি প্যাভিলিয়নে এই পূজা উদ্যাপন করা হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় ভয়াবহ সমস্যা মোকাবিলা করছেন এমন ভুল প্রচারণা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। ভয়াবহ কোনো সমস্যা এখনো চলমান- এমনটা আমি মনে করি না। প্রতিটি পরিবর্তনের পরই কিছু সমস্যা হয় রাজনৈতিক, সেটা ধর্মীয় বা সম্প্রদায়গত নয়। কিছু ঘটনা ঘটে। এর প্রকৃতি রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক নয়। পূজাকে সামনে রেখে বিশেষ করে সারা দেশে আমাদের ইউনিটগুলোকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দিয়েছি। বিএনপি আরও বিশ্বাস করে বাংলাদেশ শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকার থেকে একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারে ফিরে যাবে।
No comments