সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি নিজে নির্বাচন করবেন না। সংস্কার বিষয়ক কমিশনের সুপারিশের পর তিনি নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করবেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে তার বিচার করা হবে। নিউ ইয়র্ক টাইমস ক্লাইমেট ফরোয়ার্ড সামিটে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। উল্লেখ্য, গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে তাকে আসামি করে শতাধিক মামলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ওই সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান- সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে নেবে কিনা বাংলাদেশ। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন- কেন তাকে ফেরানো হবে না? যদি তিনি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে ফেরানো উচিত হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হবে। বুধবার আয়োজিত ওই সামিটে ড. ইউনূস ছিলেন অন্যতম বক্তা। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে রয়েছেন নিউ ইয়র্কে। সেখানে তার ব্যস্ত সময় কাটছে। তার মধ্যে তিনি ওই সামিটে যোগ দেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চাওয়া হয়- নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো পরিকল্পনা তার আছে কিনা। এ প্রশ্নে নেতিবাচক জবাব দেন ড. ইউনূস। পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আমাকে দেখে কি এমন মনে হয় যে, আমি নির্বাচন করবো? কখন বাংলাদেশে নির্বাচন হবে তার কোনো টাইমফ্রেম তার কাছে নেই বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি জানান, কয়েক মাসের মধ্যে সংস্কার সুপারিশ দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তা হাতে পাওয়ার পর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে সীমাবদ্ধ করার জন্য বিশ্বব্যাপী হয়েছে প্যারিস চুক্তি। কিন্তু এই চুক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ করবে না, যতক্ষণ বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে বিশ্ব লেগে থাকবে। তিনি বলেন, এই ব্যবস্থার লক্ষ্যই হলো সর্বোচ্চ লাভ করা। ক্ষুদ্র একটি গ্রুপের লক্ষ্য থাকে সম্পদ অর্জন। একই সঙ্গে এই ব্যবস্থা ব্যাপক মাত্রায় বর্জ্য তৈরি করে। প্রফেসর ড. ইউনূস বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি তা এই গ্রহের ধ্বংসের মূল। মানবজাতি সৃষ্টি করেছে নিজেকে ধ্বংসকারী এক সভ্যতা। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ও ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা ড. ইউনূস বলেন- চুক্তির ফলে কি পরিবর্তন হলো তা কোনো বিষয় নয়। এটা কোনো পার্থক্য তৈরি করবে না যতক্ষণ বিশ্বের ব্যবস্থাগুলোকে নতুন করে ডিজাইন না করা হয়। ধনী দেশগুলো জলবায়ুর যে ক্ষতি করছে তার দায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাঁধে চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন- আপনারা যেসব ধ্বংসাত্মক কাজ করছেন তার বোঝা কেন আমরা কাঁধে নিয়ে নেবো? আপনারা হলেন এসবের কারণ। আর আমরা তার ফল ভোগ করছি। তিনি বলেন, ব্যক্তিবিশেষকেও কম বর্জ্য তৈরির দায়িত্ব নিতে হবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানি কমাতে হবে। 
mzamin

No comments

Powered by Blogger.