‘একাধিকবার বলেছি, ড্রাইভার সাহেব আস্তে চালান’ by অজয় কুন্ডু
মাদারীপুর
সদর হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতেই কান্নার আওয়াজ। বৃহস্পতিবার বেলা একটা। প্রিয়
মানুষকে খুঁজে না পেয়ে কেউ হাউমাউ করে কান্নাকাটি করছে, কেউবা স্বজনের
মরদেহ দেখেই আহাজারি করছে। ক্রমেই বাড়ছিল আহত রোগীর সংখ্যা। রোগীদের
চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরাও। হাসপাতালের শয্যা না
থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অন্তত ১৫ জন নারী ও পুরুষ।
তাঁদের একজন মুজাম হাওলাদার (৪০)। তিনি কালকিনি উপজেলার আদিপাড়া এলাকার সেকাম হাওলাদারের ছেলে। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার পরিস্থিতি বলতে গিয়ে মুজাম বলছিলেন, ‘বাসটি শুরু থেকেই খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। আমরা একাধিকবার বলেছি যে ড্রাইভার সাহেব আস্তে চালান। এ কথা বলায় আমাদের সঙ্গে হেলপার ও চালকের বাগ্বিতণ্ডাও হয়। কিন্তু কোনো কথাই চালক শোনেননি। এমনকি স্টিয়ারিং হাতে চালক একাধিকবার ফোনে কথাও বলেছেন। তাঁর বেপরোয়া গতি আর অসচেতনতার কারণেই আমরা আজ সঙ্গীদের হারালাম।’
বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া এলাকায় অনুষ্ঠিত ওরস মাহফিল শেষ করে সুবিন-নবিন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসে মাদারীপুর সদরের ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকায় ফিরছিলেন মুসল্লিরা। সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি ট্রাককে জায়গা দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায় বাসটি। ঘটনাস্থলে ৮ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৩০ জন। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত আরেক যাত্রী রুনি বেগম। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ। তারপর গাড়ি উল্টে চলে গেল খাদে। কী থেকে যে কী হলো, কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। ভাবছি মরেই গেছি। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি। তবে খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে বুধবার সকালে একসঙ্গে সবাই মিলে ওরস মাহফিলে গেলাম। আজ (বৃহস্পতিবার) ফেরার সময় হারাতে হলো স্বজনদের।’
তামান্না নামে এক স্কুলছাত্রী বলে, ‘আমি মা-বাবার সঙ্গে ছিলাম। ওয়াজ হচ্ছিল। হঠাৎ চালক অন্য গান ছাড়ায় যাত্রীরা চটে যায়। কিন্তু চালক কারও কথা না শুনে দ্রুতগতিতে বাস চালাচ্ছিল। এরপরই হঠাৎ সব অন্ধকার হয়ে গেল। পরে আমি কীভাবে হাসপাতালে এলাম, নিজেও জানি না।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল রাজ্জাক। তাঁর বাড়ি কালকিনি উপজেলায়। রাজ্জাক বলেন, ‘যাত্রীবাহী ওই বাসের পেছনে আমরা একটা মাইক্রোবাসে ছিলাম। বাসটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। চোখের সামনে এমন দুর্ঘটনা সত্যি মর্মান্তিক।’ রাজ্জাক নিজেও উদ্ধারকাজে অংশ নেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. মাহফুজার রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার কবলে পড়া সুবিন-নবিন বাসটির নম্বর নাটোর ব-০০৬৪। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে আমাদের ধারণা, গাড়িটির কাগজপত্র ঠিক নেই। আমরা মালিকপক্ষকে গাড়িটির কাগজ দেখাতে বলেছি। কিন্তু তারা দেখায়নি। আমরা তাদের এক দিন সময় দিয়েছি।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বাসটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। চালক কোনো সচেতনতা অবলম্বন করেনি। এ কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতদের লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক অখিল সরকার বলেন, তাঁরা আহতদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
তাঁদের একজন মুজাম হাওলাদার (৪০)। তিনি কালকিনি উপজেলার আদিপাড়া এলাকার সেকাম হাওলাদারের ছেলে। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার পরিস্থিতি বলতে গিয়ে মুজাম বলছিলেন, ‘বাসটি শুরু থেকেই খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। আমরা একাধিকবার বলেছি যে ড্রাইভার সাহেব আস্তে চালান। এ কথা বলায় আমাদের সঙ্গে হেলপার ও চালকের বাগ্বিতণ্ডাও হয়। কিন্তু কোনো কথাই চালক শোনেননি। এমনকি স্টিয়ারিং হাতে চালক একাধিকবার ফোনে কথাও বলেছেন। তাঁর বেপরোয়া গতি আর অসচেতনতার কারণেই আমরা আজ সঙ্গীদের হারালাম।’
বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া এলাকায় অনুষ্ঠিত ওরস মাহফিল শেষ করে সুবিন-নবিন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসে মাদারীপুর সদরের ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকায় ফিরছিলেন মুসল্লিরা। সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি ট্রাককে জায়গা দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায় বাসটি। ঘটনাস্থলে ৮ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৩০ জন। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত আরেক যাত্রী রুনি বেগম। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ। তারপর গাড়ি উল্টে চলে গেল খাদে। কী থেকে যে কী হলো, কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। ভাবছি মরেই গেছি। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি। তবে খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে বুধবার সকালে একসঙ্গে সবাই মিলে ওরস মাহফিলে গেলাম। আজ (বৃহস্পতিবার) ফেরার সময় হারাতে হলো স্বজনদের।’
তামান্না নামে এক স্কুলছাত্রী বলে, ‘আমি মা-বাবার সঙ্গে ছিলাম। ওয়াজ হচ্ছিল। হঠাৎ চালক অন্য গান ছাড়ায় যাত্রীরা চটে যায়। কিন্তু চালক কারও কথা না শুনে দ্রুতগতিতে বাস চালাচ্ছিল। এরপরই হঠাৎ সব অন্ধকার হয়ে গেল। পরে আমি কীভাবে হাসপাতালে এলাম, নিজেও জানি না।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল রাজ্জাক। তাঁর বাড়ি কালকিনি উপজেলায়। রাজ্জাক বলেন, ‘যাত্রীবাহী ওই বাসের পেছনে আমরা একটা মাইক্রোবাসে ছিলাম। বাসটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। চোখের সামনে এমন দুর্ঘটনা সত্যি মর্মান্তিক।’ রাজ্জাক নিজেও উদ্ধারকাজে অংশ নেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. মাহফুজার রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার কবলে পড়া সুবিন-নবিন বাসটির নম্বর নাটোর ব-০০৬৪। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে আমাদের ধারণা, গাড়িটির কাগজপত্র ঠিক নেই। আমরা মালিকপক্ষকে গাড়িটির কাগজ দেখাতে বলেছি। কিন্তু তারা দেখায়নি। আমরা তাদের এক দিন সময় দিয়েছি।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বাসটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। চালক কোনো সচেতনতা অবলম্বন করেনি। এ কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতদের লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক অখিল সরকার বলেন, তাঁরা আহতদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
No comments