দুজনেরই আইনি ভাগ্য অনিশ্চিত
গণফোরাম
তাদের নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্যকে নিয়ে কী করবে, সেটা একটি বিরাট প্রশ্ন
হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদল থেকে নির্বাচিত হওয়ার পরে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী হওয়া
বাংলাদেশ রাজনীতিতে নতুন নয়। তবে তর্কটা গুরুত্ব বেশি পাচ্ছে এই কারণে যে
দুজনকে নিয়ে কথা উঠেছে, তাদের একটা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আছে। রাজনীতিতে
তারা যতটা সম্ভব নীতি-নৈতিকতার কথা বলেছেন। তাদের একজন সুলতান মোহাম্মদ
মনসুর, অন্যজন মোকাব্বির খান।
দুজনের মধ্যে আবার সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের অবস্থান অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক বড় মাপের নেতা। আবার গণফোরামেও তিনি ছিলেন পাদপ্রদীপে। দুজনেই ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ।
নির্বাচনের পরেও যখনই কথা উঠেছে, তখনই সুলতান এবং মোকাব্বির উভয়ে বলেছেন, তারা ড. কামাল হোসেনের কথার বাইরে যাবেন না। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে, ড. কামাল হোসেন শুরু থেকেই সংসদে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তিনি তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে এ নিয়ে শলা-পরামর্শও করেন। তাদের মধ্যে যারা প্রত্যক্ষ রাজনীতিক, তারা সবাই ‘না’ করছেন। আর যারা রাজনীতি বিযুক্ত তারা ‘হাঁ’ বলেছেন। এই প্রক্ষাপটে ড. কামাল হোসেন গোড়াতে শপথ নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
কিন্তু এই মনোভাব ব্যক্ত করার পরে তিনি প্রকৃত উভয় সংকট হাড়ে হাড়ে টের পান। কারণ, ৩০শে ডিসেম্বরের অবাক নির্বাচনী ফলাফলকে ‘বৈধতা’ দিতে রাজনীতির মাঠের সক্রিয় কুশলীবগণ যুক্তি দেন যে, বিএনপি বয়কট করলে সেখানে গণফোরামের যাওয়াটা ‘বেইমানি’ হবে। তাই তাদেরকেও বয়কট করতে হবে। এরপরে ড. কামাল হোসেন আর ঝুঁকি নিতে রাজি হননি। তিনি মনে করেন, সংসদ যাওয়াটা ইতিবাচক রাজনীতির অংশ। আবার দেশের প্রধান এবং প্রকৃত বিরোধী দলের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত উপেক্ষা করাটাও সমীচীন হবে না। বাংলাদেশের রাজনীতি পরিবারতন্ত্র এবং আবেগ নির্ভর। এর পরিণাম সব মহল যুগ যুগ ধরে বুঝতে পারলেও এই রূঢ় বাস্তবতাকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। সুতরাং অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে ড. কামাল হোসেন বুঝে নিয়েছেন, ঐক্যফ্রন্টকে টিকিয়ে রাখা গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বা সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য সংসদে গিয়ে কয়েকটি আসন অলংকৃত করার থেকে ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য টিকিয়ে রাখাটা বেশি দরকারি।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা একমত যে, ড. কামাল হোসেন শুধু রাজনৈতিক নয়, আইনগত দিকও বিবেচনায় নিয়ে থাকবেন। কারণ দলের নির্দেশ না মেনে শপথ নিলে গণফোরাম বহিষ্কার করবে। আর যদি নাও করে তাহলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সামনে ইসিকে চিঠি লেখা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।
শপথ নেয়ার পথে মূল বাধা হলো: ১. গণফোরাম সভাপতি হিসেবে ড. কামাল চাইলেও দুজনকে বাঁচাতে পারবেন না। কারণ, সুলতান ধানের শীষে এবং মোকাব্বির সূর্যোদয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তারা গণফোরামের সদস্য হিসেবেই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন।
২. ড. কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক সভাপতি ছিলেন না। সুতরাং তাকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে কোনো মনেনায়নপত্রে সই দেয়ার জন্য উপযুক্ত নিয়মে ক্ষমতা দেয়া হয়নি।
৩. সুলতানের জন্য দুটি কঠিন দেয়াল। তিনি গণফোরামের সদস্য। এখন সম্পর্ক নেই বললেই হবে না। আদালতে এটা সহজে প্রমাণ করা যাবে, তিনি সদস্য ছিলেন। তার ব্যালট পেপারই তার সাক্ষ্য দেবে। কারণ সেখানে ঐক্যফ্রন্ট নয়, গণফোরাম আছে। প্রতীকটি অবশ্য ধানের শীষ। সেটা দ্বিতীয় এবং আরো বড় বাধা। সুলতানের মনোনয়নপত্রে সই দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। কিন্তু মোকাব্বিরের মনোনয়ন পত্রে সই দিয়েছেন গণফোরাম সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু।
৪. আইন উভয়ের ক্ষেত্রে দুই মহাসচিবকে সুযোগ দিয়েছে, তারা দলত্যাগ করেছেন গণ্য করে ইসিকে চিঠি দেয়া। কেউ বলছেন, সুলতান মনসুর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তিনি গণফোরামের কেউ নন।
৫. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সংসদে তাহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।
তবে প্রশ্নটি চূড়ান্ত অর্থে ইসি নির্ধারণ করবে। কারণ, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ বলেছে, এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হইবে কি না, সে সম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরিত হইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
দেখেশুনে অনেকে বলেন, তারা দলত্যাগ করে শপথ নিলে সংবিধান বা আইনকানুন ততটা নয়, দেশের চলমান রাজনীতিই হয়তো তাদের ভাগ্য ঠিক করবে। অতীতেও তেমন নজির তৈরি হতে দেখা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদদের কেউ যদি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের কেউ নই। তাহলে যা ঘটবে, তা অন্য সবার ক্ষেত্রেও ঘটবে তা মনে করার কারণ নেই।
দুজনের মধ্যে আবার সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের অবস্থান অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক বড় মাপের নেতা। আবার গণফোরামেও তিনি ছিলেন পাদপ্রদীপে। দুজনেই ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ।
নির্বাচনের পরেও যখনই কথা উঠেছে, তখনই সুলতান এবং মোকাব্বির উভয়ে বলেছেন, তারা ড. কামাল হোসেনের কথার বাইরে যাবেন না। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে, ড. কামাল হোসেন শুরু থেকেই সংসদে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তিনি তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে এ নিয়ে শলা-পরামর্শও করেন। তাদের মধ্যে যারা প্রত্যক্ষ রাজনীতিক, তারা সবাই ‘না’ করছেন। আর যারা রাজনীতি বিযুক্ত তারা ‘হাঁ’ বলেছেন। এই প্রক্ষাপটে ড. কামাল হোসেন গোড়াতে শপথ নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
কিন্তু এই মনোভাব ব্যক্ত করার পরে তিনি প্রকৃত উভয় সংকট হাড়ে হাড়ে টের পান। কারণ, ৩০শে ডিসেম্বরের অবাক নির্বাচনী ফলাফলকে ‘বৈধতা’ দিতে রাজনীতির মাঠের সক্রিয় কুশলীবগণ যুক্তি দেন যে, বিএনপি বয়কট করলে সেখানে গণফোরামের যাওয়াটা ‘বেইমানি’ হবে। তাই তাদেরকেও বয়কট করতে হবে। এরপরে ড. কামাল হোসেন আর ঝুঁকি নিতে রাজি হননি। তিনি মনে করেন, সংসদ যাওয়াটা ইতিবাচক রাজনীতির অংশ। আবার দেশের প্রধান এবং প্রকৃত বিরোধী দলের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত উপেক্ষা করাটাও সমীচীন হবে না। বাংলাদেশের রাজনীতি পরিবারতন্ত্র এবং আবেগ নির্ভর। এর পরিণাম সব মহল যুগ যুগ ধরে বুঝতে পারলেও এই রূঢ় বাস্তবতাকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। সুতরাং অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে ড. কামাল হোসেন বুঝে নিয়েছেন, ঐক্যফ্রন্টকে টিকিয়ে রাখা গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বা সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য সংসদে গিয়ে কয়েকটি আসন অলংকৃত করার থেকে ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য টিকিয়ে রাখাটা বেশি দরকারি।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা একমত যে, ড. কামাল হোসেন শুধু রাজনৈতিক নয়, আইনগত দিকও বিবেচনায় নিয়ে থাকবেন। কারণ দলের নির্দেশ না মেনে শপথ নিলে গণফোরাম বহিষ্কার করবে। আর যদি নাও করে তাহলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সামনে ইসিকে চিঠি লেখা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।
শপথ নেয়ার পথে মূল বাধা হলো: ১. গণফোরাম সভাপতি হিসেবে ড. কামাল চাইলেও দুজনকে বাঁচাতে পারবেন না। কারণ, সুলতান ধানের শীষে এবং মোকাব্বির সূর্যোদয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তারা গণফোরামের সদস্য হিসেবেই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন।
২. ড. কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক সভাপতি ছিলেন না। সুতরাং তাকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে কোনো মনেনায়নপত্রে সই দেয়ার জন্য উপযুক্ত নিয়মে ক্ষমতা দেয়া হয়নি।
৩. সুলতানের জন্য দুটি কঠিন দেয়াল। তিনি গণফোরামের সদস্য। এখন সম্পর্ক নেই বললেই হবে না। আদালতে এটা সহজে প্রমাণ করা যাবে, তিনি সদস্য ছিলেন। তার ব্যালট পেপারই তার সাক্ষ্য দেবে। কারণ সেখানে ঐক্যফ্রন্ট নয়, গণফোরাম আছে। প্রতীকটি অবশ্য ধানের শীষ। সেটা দ্বিতীয় এবং আরো বড় বাধা। সুলতানের মনোনয়নপত্রে সই দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। কিন্তু মোকাব্বিরের মনোনয়ন পত্রে সই দিয়েছেন গণফোরাম সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু।
৪. আইন উভয়ের ক্ষেত্রে দুই মহাসচিবকে সুযোগ দিয়েছে, তারা দলত্যাগ করেছেন গণ্য করে ইসিকে চিঠি দেয়া। কেউ বলছেন, সুলতান মনসুর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তিনি গণফোরামের কেউ নন।
৫. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সংসদে তাহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।
তবে প্রশ্নটি চূড়ান্ত অর্থে ইসি নির্ধারণ করবে। কারণ, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ বলেছে, এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হইবে কি না, সে সম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরিত হইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
দেখেশুনে অনেকে বলেন, তারা দলত্যাগ করে শপথ নিলে সংবিধান বা আইনকানুন ততটা নয়, দেশের চলমান রাজনীতিই হয়তো তাদের ভাগ্য ঠিক করবে। অতীতেও তেমন নজির তৈরি হতে দেখা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদদের কেউ যদি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের কেউ নই। তাহলে যা ঘটবে, তা অন্য সবার ক্ষেত্রেও ঘটবে তা মনে করার কারণ নেই।
No comments