কাউন্সিলর একরামের মৃত্যু: পুরো টেকনাফ বলছে ভিন্ন কথা
টেকনাফ
পৌরসভার কাউন্সিলর একরামের মৃত্যু নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে এলাকায়।
স্থানীয়রা বলছেন, একরাম মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। বরং তিনি মাদকের
বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে
প্রকাশ্যে তিনি কথা বলতেন। এলাকার সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার
হয়েছেন একরাম। যদিও র্যাব দাবি করেছে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তার
বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছিল। নিহত একরামের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার
গোয়েন্দা তথ্য ছিল। র্যাবের ও আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার
মুফতি মাহমুদ খান গতকাল রাতে মানবজমিনকে বলেন, ‘একরাম সশস্ত্র মাদক
ব্যবসায়ী। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
টেকনাফ থানা পুলিশ বলছে, একরামের বিরুদ্ধে কোন মাদক মামলা বা অভিযোগ নেই।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারাও ক্ষুব্ধ এ ঘটনায়। এদিকে ঘটনার
পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেগঘন খোলা চিঠি লিখেছেন টেকনাফ পৌর
চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে মা সম্বোধন করে তিনি বলেন, আপনার মাধ্যমেই প্রশাসনকে বলতে চাই, যদি সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে চান তবে প্রকৃত ইয়াবা কারবারিদের শেষ করুন। পারলে টেকনাফের সাইফুল করিম, এমপি বদির ভাই আবদুর রহমান ও আবদুর শুক্কুর, কক্সবাজার শহরের শাহজাহান আনসারী ও কামাল আনসারী, লারপাড়ার আবুল কালাম কন্ট্রাক্টর, পেকুয়ার মগনামার ওয়াসিমের মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকাভুক্ত ও সমাজ স্বীকৃত ইয়াবা কারবারিদের ক্রসফায়ার দিন। দয়া করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে কলঙ্কিত করবেন না। একরামের মতো নিরপরাধ ও জনপ্রিয় নেতাকে ক্রসফায়ার দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গায়ে কালিমা লেপনের চেষ্টা করবেন না।
টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ শফিক মিয়া জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরাম হোসেন নিরপরাধ। গত শুক্রবার তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওইদিন তিনি দেখা করেও আসেন। শনিবার আবারও ডাক পড়লে এশা নামাজের পর আবারও দেখা করতে যান একরাম। মৃত্যুভয় থাকলে একরাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডাকে সাড়া দিতেন না বলেও মন্তব্য করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র এ নেতা। তিনি বলেন, টেকনাফের বনেদি পরিবারের সন্তান একরাম। তিনি সাবেক এমপি আবদুল গনির ভাতিজা। মাত্র দুই রুমের একটি বাড়িতে থাকতেন তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর ও সাবেক এ যুবলীগ নেতা। একরুমে বউসহ একরাম, অপররুমে দুই মেয়ে নিয়ে অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। তার মতো একজন ছেলের এমন পরিণতি কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না।
একই সুরে কথা বলেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর। তার মতে, যারা ইয়াবা কারবারি, তারা শত কোটি টাকার মালিক। কিন্তু একরাম গরিবিহালে চলাফেরা করতো। সে কারো সন্দেহের তালিকায়ও ছিল না। তার অর্থকষ্টের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, স্ত্রীর মিরাজ বিক্রি করে ৭/৮ লাখ টাকা পেয়েছিলেন একরাম। ওই টাকা দিয়ে একটি ঘরের ফাউন্ডেশন দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই ঘরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। ঘরের খুঁটি উঠেছে ঠিকই, কিন্তু ইটের গাঁথুনি দিতে পারেনি।
টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, কমিশনার একরাম একেবারে নিরীহ। তার নামে কোনো মামলা নেই, তিনি ইয়াবা ব্যবসা করেন এ রকম কোনো খবরও টেকনাফের মানুষের জানা নেই।
তিনি বলেন, প্রকৃত ইয়াবা কারবারি মরলে কেউ প্রতিবাদ করে না। যেমন- আকতার কামালের ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করেনি। তার মতে, চলমান মাদকবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একরামকে মৃত্যুর মুখে টেলে দেয়া হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
টেকনাফে ব্যবসায়ী মমতাজুল হক আশরাফ জানান, কাউন্সিলর একরামুল হক অত্যন্ত সাদাসিদা জীবনযাপন করতেন। একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েও টাকার অভাবে বাড়ি পর্যন্ত করতে পারেননি। দুই মেয়ে বিজিবি-পাবলিক স্কুলে লেখাপড়া করে। সেখানেও বেতন বাকি। বিদ্যুৎ বিলও বাকি। তিনি টেকনাফ পৌর যুবলীগের সভাপতি ও বার্মিজ সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ বছর সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন।
রোববার রাত ১০টায় টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন টেকনাফ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়ার প্রধান পরিচালক (মুহতামিম) আল্লামা মুফতি কিফায়তুল্লাহ শফীক্ব। তাঁকে এক নজর দেখতে এবং জানাজার নামাজে শোকাহত মানুষের ঢল নামে। জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় হাজার হাজার মানুষ হাত তুলে কমিশনার একরাম ইয়াবা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে মা সম্বোধন করে তিনি বলেন, আপনার মাধ্যমেই প্রশাসনকে বলতে চাই, যদি সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে চান তবে প্রকৃত ইয়াবা কারবারিদের শেষ করুন। পারলে টেকনাফের সাইফুল করিম, এমপি বদির ভাই আবদুর রহমান ও আবদুর শুক্কুর, কক্সবাজার শহরের শাহজাহান আনসারী ও কামাল আনসারী, লারপাড়ার আবুল কালাম কন্ট্রাক্টর, পেকুয়ার মগনামার ওয়াসিমের মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকাভুক্ত ও সমাজ স্বীকৃত ইয়াবা কারবারিদের ক্রসফায়ার দিন। দয়া করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে কলঙ্কিত করবেন না। একরামের মতো নিরপরাধ ও জনপ্রিয় নেতাকে ক্রসফায়ার দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গায়ে কালিমা লেপনের চেষ্টা করবেন না।
টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ শফিক মিয়া জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরাম হোসেন নিরপরাধ। গত শুক্রবার তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওইদিন তিনি দেখা করেও আসেন। শনিবার আবারও ডাক পড়লে এশা নামাজের পর আবারও দেখা করতে যান একরাম। মৃত্যুভয় থাকলে একরাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডাকে সাড়া দিতেন না বলেও মন্তব্য করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র এ নেতা। তিনি বলেন, টেকনাফের বনেদি পরিবারের সন্তান একরাম। তিনি সাবেক এমপি আবদুল গনির ভাতিজা। মাত্র দুই রুমের একটি বাড়িতে থাকতেন তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর ও সাবেক এ যুবলীগ নেতা। একরুমে বউসহ একরাম, অপররুমে দুই মেয়ে নিয়ে অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। তার মতো একজন ছেলের এমন পরিণতি কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না।
একই সুরে কথা বলেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর। তার মতে, যারা ইয়াবা কারবারি, তারা শত কোটি টাকার মালিক। কিন্তু একরাম গরিবিহালে চলাফেরা করতো। সে কারো সন্দেহের তালিকায়ও ছিল না। তার অর্থকষ্টের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, স্ত্রীর মিরাজ বিক্রি করে ৭/৮ লাখ টাকা পেয়েছিলেন একরাম। ওই টাকা দিয়ে একটি ঘরের ফাউন্ডেশন দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই ঘরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। ঘরের খুঁটি উঠেছে ঠিকই, কিন্তু ইটের গাঁথুনি দিতে পারেনি।
টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, কমিশনার একরাম একেবারে নিরীহ। তার নামে কোনো মামলা নেই, তিনি ইয়াবা ব্যবসা করেন এ রকম কোনো খবরও টেকনাফের মানুষের জানা নেই।
তিনি বলেন, প্রকৃত ইয়াবা কারবারি মরলে কেউ প্রতিবাদ করে না। যেমন- আকতার কামালের ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করেনি। তার মতে, চলমান মাদকবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একরামকে মৃত্যুর মুখে টেলে দেয়া হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
টেকনাফে ব্যবসায়ী মমতাজুল হক আশরাফ জানান, কাউন্সিলর একরামুল হক অত্যন্ত সাদাসিদা জীবনযাপন করতেন। একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েও টাকার অভাবে বাড়ি পর্যন্ত করতে পারেননি। দুই মেয়ে বিজিবি-পাবলিক স্কুলে লেখাপড়া করে। সেখানেও বেতন বাকি। বিদ্যুৎ বিলও বাকি। তিনি টেকনাফ পৌর যুবলীগের সভাপতি ও বার্মিজ সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ বছর সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন।
রোববার রাত ১০টায় টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন টেকনাফ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়ার প্রধান পরিচালক (মুহতামিম) আল্লামা মুফতি কিফায়তুল্লাহ শফীক্ব। তাঁকে এক নজর দেখতে এবং জানাজার নামাজে শোকাহত মানুষের ঢল নামে। জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় হাজার হাজার মানুষ হাত তুলে কমিশনার একরাম ইয়াবা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
No comments