প্রতারণার আরেক মামলায় ছেলেসহ রাগীব আলীর কারাদণ্ড
সিলেটে
প্রতারণার অভিযোগে আরেকটি মামলার রায়ে রাগীব আলী ও তাঁর ছেলে আবদুল হাইকে
এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সিলেটের মুখ্য মহানগর
বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় দেন। কারাদণ্ডাদেশ ছাড়াও দুজনকে
পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন
আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী জানান, পত্রিকা প্রকাশনা
আইন অনুযায়ী কোনো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সরকারের অনুমতি ছাড়া দেশ
ছেড়ে পালালে পত্রিকার ডিক্লারেশন প্রকাশনা আইন অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবে
বাতিল হয়ে যায়। বিষয়টি আদালতকে জানিয়ে আদালতে একটি পৃথক আবেদন করা হয়েছে।
এতে সিলেটের জেলা প্রশাসক (জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) পত্রিকার ডিক্লারেশন কেন
বাতিল করলেন না—এ মর্মে পৃথক একটি দরখাস্ত দিয়ে তাঁরা দুজন দেশের বাইরে
পলাতক থাকা অবস্থায় পত্রিকা কে প্রকাশ করল—এ বিষয়টিও জানতে চাওয়া
হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসক কেন প্রকাশনা আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা
নিলেন না, এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দিয়ে তদন্ত করে দেখার
আবেদন করা হয়েছে। তিনি জানান, রায় ঘোষণার পর আদালত এ আবেদনের ব্যাপারে
পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন। প্রায় ৩৩ বছরের পুরোনো পত্রিকা সিলেটের ডাকের
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন রাগীব আলী। ছেলে আবদুল হাই
পত্রিকার সম্পাদক। অবশ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পত্রিকার সম্পাদকের
ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন রাগীব আলীর ভাতিজা মো. আবদুল হান্নান।
এর
আগে একই আদালতে গত ২ ফেব্রুয়ারি তারাপুর চা-বাগান বন্দোবস্ত নিতে ভূমি
মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতির মামলায় ছেলেসহ রাগীব আলীকে ১৪ বছর করে
কারাদণ্ড দেন। ছেলেমেয়েসহ রাগীব আলীর বিরুদ্ধে তারাপুর চা-বাগান দখল করে
সরকারের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অপর একটি মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত
২৩ ফেব্রুয়ারি। রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাইয়ের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার
জন্য এ মামলার রায় ঘোষণা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। এ দুই মামলায়
গত বছরের ১০ আগস্ট আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে রাগীব আলী
ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে ভারতের করিমগঞ্জ চলে যান। রাগীব আলী সিলেটের ডাক
পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এবং তাঁর ছেলে আবদুল হাই
পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে নাম ছাপা হয়। পলাতক অবস্থায় পত্রিকা সম্পাদনার
দায়িত্ব প্রতারণামূলকভাবে পালন করে প্রকাশনা আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে—এ অভিযোগে
সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন তালুকদার গত বছরের ৮
সেপ্টেম্বর মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে প্রতারণার অভিযোগে মামলা
করেছিলেন।
No comments