১৬ বছর পর মাকে ফিরে পেল ছেলে
২০০১
সালের বন্যায় পরিবার পরিজন থেকে হারিয়ে যান আসামের ধেমাজি থেকে এক মা।
এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে তাকে উত্তরাখণ্ডের
দেহরাদুন থেকে ফিরে পেলেন ছেলে। ঘটনার শুরু ২০০১ সালে। মানসিক ভারসাম্য
হারানোয় ধেমাজির সুভদ্রা পাতিকে তেজপুরের মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু ক’দিন পরে শুরু হয় ভয়াবহ বন্যা। তখনই হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হন
সুভদ্রা। এরপরে বহু জায়গায় খোঁজ করা হয়। একপর্যায়ে তাকে ফিরে পাওয়ার আশাও
ছেড়ে দেয় পরিবার। ভেবে নেয় হয়তো বা সে মারা গেছে। এরপরের ঘটনা
উত্তরাখণ্ডের দেহরাদুনে। তেহরিতে ২০১৫ সালে হড়পা বানের পরে উদ্ধার হওয়া
মানুষদের মধ্যে বছর পঁয়তাল্লিশের এক মহিলাকে পাওয়া যায়। অসুস্থ, রুগ্ন ওই
মহিলা শুধু বলতে পারতেন নিজের নাম সুভদ্রা। তার ভাষাও কেউ বুঝতে পারছিলেন
না। ফলে তার ঠিকানা হয় নারী নিকেতন। ওখানেই চলতে থাকে তার চিকিৎসা। ক্রমে
সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই ভদ্রমহিলা। উত্তরাখণ্ডের বনকর্তা তথা বর্তমানে
সমাজকল্যাণ দফতরের অতিরিক্ত সচিব মনোজ চন্দ্রন জানান,
এক অসমীয়াভাষীর
সাহায্যে কথা বলে জানা যায়, সুভদ্রার বাড়ি অসমের ধেমাজি জেলায়। কীভাবে
তিনি আসাম থেকে এখানে এলেন তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি। ফেসবুকে
ধেমাজির এক ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তরাখণ্ড সমাজকল্যাণ দফতর।
নিজের মুখে ঠিকানা বলা সুভদ্রাদেবীর ‘ছোট্ট ভিডিও’-টি আপলোড করা হয়
হোয়্যাটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে। শেষ পর্যন্ত সেই ভিডিও দেখেই সুভদ্রার এক
আত্মীয়ের ছেলে তাকে চিনতে পারেন। ছাত্র সংগঠনটির তরফে হেমচন্দ্র পেগু,
রাজদীপ দোলেরা সুভদ্রার ছেলে দুর্লভ পাতিরকে সঙ্গে করে দেহরাদুন রওনা হন।
২০০১ সালে যখন মাকে হারিয়েছিল, তখন দুর্লভের বয়স ছিল বছর ছয়েক। এরপর গত ৬
মার্চ আবার মিলন হয় তাদের। মনোজ জানান, এত বছরের ব্যবধান, মানসিক রোগের
ধাক্কার পরেও ছেলেকে ঠিক চিনতে পারেন মা। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন দুর্লভকে।
No comments