সন্দেহভাজন জেএমবি নেতা কলকাতায় গ্রেফতার
বাংলাদেশের
রাজধানী ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন এক
জেএমবি নেতাকে কলকাতার কেন্দ্রস্থলের এক আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার কলকাতা থেকে প্রকাশিত দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো
হয়েছে। গ্রেফতার ওই জেএমবি নেতার নাম মোহাম্মদ ইদ্রিস। দিল্লি পুলিশের
বিশেষ সেল থেকে কলকাতা পুলিশকে জানানো তথ্যের বরাতে দৈনিকটি জানিয়েছে, গত
বছরের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে হামলা চালিয়ে ২০ নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনি অন্যতম
মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তি। একটি সূত্র বলেছে, কলকাতা ও হায়দরাবাদের মধ্যে
ইদ্রিসের যাতায়াতের সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল। তিনি রোহিঙ্গা অধিকার রক্ষার
কাজের জন্য তরুণদের জোগাড় করার এবং তাদের উগ্রপন্থী করে তোলার চেষ্টা
করছিলেন। গুলশান হামলার পর বাংলাদেশে আইনশৃংখলা বাহিনীর ব্যাপক জঙ্গি দমন
অভিযান শুরু হওয়ায় জেএমবি এখন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতিত
হওয়ার বিষয়টি ব্যবহার করে কর্মী সংগ্রহ ও নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায়
আছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দাদের তথ্য। জাতিসংঘের মতে, পশ্চিম মিয়ানমার
কেন্দ্রিক রোহিঙ্গা মুসলমানরা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নির্যাতিত সংখ্যালঘু
জাতি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে
উল্লেখযোগ্য সমর্থন রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র মতে, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টি
বাংলাদেশে আবেগপূর্ণ ইস্যু হওয়ায় একে কাজে লাগিয়ে পুনর্গঠিত হওয়র চেষ্টা
করছে গুলশান হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারের অভিযানের মুখে কোণঠাসা হয়ে
পড়া জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। দিল্লি পুলিশের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ইদ্রিস
গুলশান হামলায় সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন এবং ওই ঘটনার পরপরই তিনি বাংলাদেশের
নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে দেশ থেকে পালাতে সক্ষম হন।
একটি গোয়েন্দা
সূত্র বলছে, ভারতে প্রবেশের পর অন্তত তিন মাস আগে তিনি বড়বাজারের নিকটবর্তী
কলুটোলায় আশ্রয় পান। তিনি হায়দ্রাবাদ ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াত করছিলেন
এবং জেএমবির শীর্ষ নেতা সালেহীনের কাছ থেকে নির্দেশনা নিয়ে রোহিঙ্গাদের
পক্ষে কাজ করছিলেন। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, সালেহীন
জেএমবির ভারত ও বাংলাদেশ শাখার প্রধান এবং তিনি ভারতের কোথাও লুকিয়ে আছেন।
১৫ দিন আগে দিল্লি পুলিশের একটি দল কলকাতায় এসে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা
ব্যুরার (আইবি) সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে ইদ্রিসকে তুলে নিতে অভিযান চালায়।
এই অভিযান সম্পর্কে কলকাতা পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি এবং তারা ইদ্রিসকে
আটক করতেও ব্যর্থ হয়। এ ব্যর্থ অভিযানের পর কলকাতা পুলিশকে ইদ্রিসের তথ্য
জানিয়ে তাদের সহযোগিতা চায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পরে কলকাতা পুলিশ
চলতি সপ্তাহের শুরুতে কলুটোলা থেকে ইদ্রিসকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের
বিশেষ সেলে কাছে হস্তান্তর করে। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ইদ্রিসকে
গ্রেফতারের বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ দেয়া
হবে বলে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটকে।
No comments