সামরিক জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
সৌদি
আরবের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটে যোগ দেয়া নিয়ে বাংলাদেশে
তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এই জোটে বাংলাদেশের ভূমিকা বা অংশগ্রহণ কি
হবে তা একেবারেই স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো ধরনের গবেষণা বা আলোচনা
ছাড়াই বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দেয়ার ব্যাপারে সায় দিয়েছে। সৌদি আরবের ঘোষণায়
৩৪ দেশের এই জোটকে সামরিক জোট বলা হলেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এটি সামরিক জোট নয়। সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুবরাজ
মোহামেদ বিন সালমান মঙ্গলবার রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এই জোট
ইরাক, সিরিয়া, মিশর আর আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই
করবে। এখন প্রতিটি দেশ আলাদাভাবে চরমপন্থার সঙ্গে লড়ছে। কিন্তু এই জোটের
মাধ্যমে দেশগুলো একত্রে লড়াই করবে। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শাহরিয়ার আলম বলেছেন, প্রাথমিক আলোচনায় সৌদি আরব আমাদের যে ধারণা দিয়েছে তা
হচ্ছে এটা যুদ্ধ করার সামরিক জোট নয়। এটি মূলত গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের
একটি কেন্দ্র হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ জোটের সঙ্গে যুদ্ধের
কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রাথমিকভাবে এ জোটে যোগ দেয়ার ব্যাপারে সায় দেয়া
হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। এটি আইএস বিরোধী
জোট নয় বলেও দাবি করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। যদিও আন্তর্জাতিক সংবাদ
মাধ্যমে এ জোটকে আইএস বিরোধী জোট হিসেবেই বর্ণনা করা হয়েছে। এ জোটের অধীনে
সৈন্য পাঠাতে হবে কি না বা সামরিক বিষয়ে কি ধরনের সহযোগিতার প্রশ্ন আসবে
এসব বিষয়ে বাংলাদেশ বিস্তারিত জানতে পারেনি। জাতিসংঘের অধীনেই শুধু শান্তি
রক্ষায় সৈন্য পাঠানোর একটি নীতিগত অবস্থান বাংলাদেশের রয়েছে। বিশ্লেষকরা
মনে করেন, নতুন জোটে কখনও সৈন্য পাঠানোর প্রশ্ন থাকলে তাতে বাংলাদেশের
নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমাদের এখানে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। বলা হয়েছে শুধু জোটে যাবে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে কোনো স্ট্রাকচার ঠিক হয়নি। উনারা এখন পর্যন্ত জানেন না কি কাজ হবে। স্বত:স্ফূর্ত জোটে যোগ দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। এখন সৌদি আরব বলছে, মিশর, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে এটার বিরুদ্ধে জোট হচ্ছে। সেখানে পাকিস্তান নিজেদের দেখে বিস্মিত হচ্ছে। অথচ আমরা যোগ দিয়েছি। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোটে যোগ দেয়ায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএস নাম নিক বা না নিক সেটা এখন আইএস বিরোধী জোট। জোটের কি কাজ কি করবে, আমাদের সৈনিকেরা যাবে কিনা। নাকি এয়ারফোর্স যাবে, না নেভি যাবে। কিভাবে কি হবে সেটা জানি না। জোটের ভেতরে যারা আছে আর যারা নাই বিশ্লেষণ একেকরকম দেখা যায়। ইরান বড় একটা শক্তি। ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের ঝামেলা আছে। মধ্যপ্রাচ্যে আমরা শিয়া সুন্নীর দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ছি কিনা, আমরা কি সিরিয়ায় আসাদকে সমর্থন দিচ্ছি নাকি আসাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছি সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সিরিয়াতে আমেরিকা চাচ্ছে মুসলিম দেশের সৈন্যরা যাক। তারা সৈন্য পাঠাতে চাচ্ছে না এবং ফ্রান্সও পিছিয়ে গেছে। এগুলো প্রশ্নের উত্তর যখন জানবো তখন বোঝা যাবে লাভ কি ক্ষতি। দেশে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই জোটে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা যে জোটে যোগ দিয়েছি এর পৃষ্ঠপোষক তো আমেরিকা। এখন এটা তো খুব জটিল ইস্যু। সেই ইস্যুর মধ্যে ঢুকে কি লাভ এটা এখন বলা মুশকিল। একটা গণতান্ত্রিক দেশে এই ইস্যু নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে বলে মনে হয়না। যে ধরনের আলোচনা হোক সংসদে। একটা সংসদ তো আছে। কোন পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্তটা নেয়া হলো সেটাও তো জনগণ জানে না। বিষয়টার সঙ্গে দেশের মানুষের স্বার্থ জড়িত। অবশ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন আলোচনা হবে সংসদে। কি হচ্ছে, কি হবে এই মুহূর্তে, বাংলাদেশ এটা এড়াতে পারতো কি পারতো না। আমরা তো এক ধরনের আমেরিকার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদের ও তথাকথিত মৌলবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। এখন তো আমরা দেখছি যে মুখে এক কথা বলছি আর কাজে আরেকটা। যতক্ষণ পর্যন্ত সৌদি আরবের পক্ষ থেকে খোলাসা না হবে বা মিডিয়া থেকে জানতে না পারবো ততক্ষণ বিষয়টা খোলাসা হবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তারেক শামসুর রেহমান বলেন, বিষয়টা আমাদের জন্য একেবারেই নতুন। এটা নিয়ে কোনো গবেষণা সংস্থা বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করা হয়নি। এই জোট থেকে আমাদের খুব লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নাই। এই জোট আমাদের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে কাজ করবে এটাও স্পষ্ট করে বলা যায় না। ফলে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করে বাংলাদেশ যে এই জোটে যোগ দিলো তা ভবিষ্যতে কোন পথে পরিচালিত হবে তা দেখার বিষয়। তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে সৌদি আরব উপমহাদেশের রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে চায়। নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবরসপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এম মুনীরুজ্জামান বলেছেন, জোটে বাংলাদেশের ভূমিকা স্পষ্ট নয়। কী জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলো তা জনগণের কাছে স্পষ্ট করা উচিত। নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রব খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইরানের মতো বড় শক্তিকে বাদ দিয়ে এই জোট হলেও বেশির ভাগ মুসলিম দেশের সঙ্গে থাকাটা বাংলাদেশের জন্য ব্যতিক্রমী কিছু নয়।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমাদের এখানে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। বলা হয়েছে শুধু জোটে যাবে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে কোনো স্ট্রাকচার ঠিক হয়নি। উনারা এখন পর্যন্ত জানেন না কি কাজ হবে। স্বত:স্ফূর্ত জোটে যোগ দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। এখন সৌদি আরব বলছে, মিশর, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে এটার বিরুদ্ধে জোট হচ্ছে। সেখানে পাকিস্তান নিজেদের দেখে বিস্মিত হচ্ছে। অথচ আমরা যোগ দিয়েছি। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোটে যোগ দেয়ায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএস নাম নিক বা না নিক সেটা এখন আইএস বিরোধী জোট। জোটের কি কাজ কি করবে, আমাদের সৈনিকেরা যাবে কিনা। নাকি এয়ারফোর্স যাবে, না নেভি যাবে। কিভাবে কি হবে সেটা জানি না। জোটের ভেতরে যারা আছে আর যারা নাই বিশ্লেষণ একেকরকম দেখা যায়। ইরান বড় একটা শক্তি। ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের ঝামেলা আছে। মধ্যপ্রাচ্যে আমরা শিয়া সুন্নীর দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ছি কিনা, আমরা কি সিরিয়ায় আসাদকে সমর্থন দিচ্ছি নাকি আসাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছি সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সিরিয়াতে আমেরিকা চাচ্ছে মুসলিম দেশের সৈন্যরা যাক। তারা সৈন্য পাঠাতে চাচ্ছে না এবং ফ্রান্সও পিছিয়ে গেছে। এগুলো প্রশ্নের উত্তর যখন জানবো তখন বোঝা যাবে লাভ কি ক্ষতি। দেশে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই জোটে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা যে জোটে যোগ দিয়েছি এর পৃষ্ঠপোষক তো আমেরিকা। এখন এটা তো খুব জটিল ইস্যু। সেই ইস্যুর মধ্যে ঢুকে কি লাভ এটা এখন বলা মুশকিল। একটা গণতান্ত্রিক দেশে এই ইস্যু নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে বলে মনে হয়না। যে ধরনের আলোচনা হোক সংসদে। একটা সংসদ তো আছে। কোন পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্তটা নেয়া হলো সেটাও তো জনগণ জানে না। বিষয়টার সঙ্গে দেশের মানুষের স্বার্থ জড়িত। অবশ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন আলোচনা হবে সংসদে। কি হচ্ছে, কি হবে এই মুহূর্তে, বাংলাদেশ এটা এড়াতে পারতো কি পারতো না। আমরা তো এক ধরনের আমেরিকার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদের ও তথাকথিত মৌলবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। এখন তো আমরা দেখছি যে মুখে এক কথা বলছি আর কাজে আরেকটা। যতক্ষণ পর্যন্ত সৌদি আরবের পক্ষ থেকে খোলাসা না হবে বা মিডিয়া থেকে জানতে না পারবো ততক্ষণ বিষয়টা খোলাসা হবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তারেক শামসুর রেহমান বলেন, বিষয়টা আমাদের জন্য একেবারেই নতুন। এটা নিয়ে কোনো গবেষণা সংস্থা বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করা হয়নি। এই জোট থেকে আমাদের খুব লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নাই। এই জোট আমাদের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে কাজ করবে এটাও স্পষ্ট করে বলা যায় না। ফলে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করে বাংলাদেশ যে এই জোটে যোগ দিলো তা ভবিষ্যতে কোন পথে পরিচালিত হবে তা দেখার বিষয়। তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে সৌদি আরব উপমহাদেশের রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে চায়। নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবরসপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এম মুনীরুজ্জামান বলেছেন, জোটে বাংলাদেশের ভূমিকা স্পষ্ট নয়। কী জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলো তা জনগণের কাছে স্পষ্ট করা উচিত। নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রব খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইরানের মতো বড় শক্তিকে বাদ দিয়ে এই জোট হলেও বেশির ভাগ মুসলিম দেশের সঙ্গে থাকাটা বাংলাদেশের জন্য ব্যতিক্রমী কিছু নয়।
No comments