বাঁচার আকুতি সাগরে ভাসা অভিবাসীদের- মৃত্যুর পর লাশ ছুড়ে ফেলা হয় সাগরে
কিশোর
মোহাম্মদ শরীফ (১৬) মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান। স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হয়ে
দেশে ফিরে নিপীড়িত-অসুস্থ রোহিঙ্গাদের সেবা করবে। এ স্বপ্নে ভর করে
নৌকায় মালয়েশিয়ার উদ্দেশে সাগরে পাড়ি জমিয়েছিল। উত্তাল সাগরের ভয়ংকর
যাত্রায় ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও পাচারকারীদের মারধর-নির্যাতনে শুধু প্রাণটাই
বাঁচাতে পেরেছে; স্বপ্নটা আর পারেনি। দেখেছে, সঙ্গীদের লাশ উচ্ছিষ্টের মতো
সাগরে ছুড়ে ফেলে দেওয়াটাও।
গত রবি ও সোমবার মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র উপকূল থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ২০০০ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের একজন এই শরীফ। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে মাঝসাগরে ভাসমান অবস্থায় তাঁদের রেখে চলে যায় পাচারকারীরা। পরে ভেসে ভেসে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে গেলে সম্প্রতি তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া শরীফের মতোই আরও প্রায় আট হাজার অভিবাসী অথই সাগরে এখনো ভেসে চলেছেন। তাঁদের নৌকার জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। নেই খাবার ও পানি। মালয়েশিয়া যাওয়ার ট্রানজিট ও অভিবাসীদের প্রাথমিক গন্তব্যস্থল থাইল্যান্ডে বর্তমানে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলতে থাকায় ভাসমান এ মানুষগুলোকে তীরে নিয়ে যাচ্ছে না পাচারকারীরা। তাই সাগরের মাঝেই তাঁদের ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে তারা।
আর কিছুদিন এভাবে ভাসতে থাকলে এসব অভিবাসীকে হয়তো মারাই পড়তে হবে বলে গতকাল মঙ্গলবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম। এ অবস্থায় তাঁদের অনেকে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন বলে জানা গেছে। খবর বিবিসি, এপি, এএফপি, রয়টার্স ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহর আশ্রয়শিবিরে নিজের ওই সুখস্বপ্ন ও রোমহর্ষক সাগরযাত্রার অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছিল মোহাম্মদ শরীফ। শরীফ জানায়, মালয়েশিয়ায় চাচার কাছে গিয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা শেষে নতুন জীবনের আশায় দেশ ছেড়েছিল সে। নিজের দেশের বঞ্চনার কথা ভুলে ছোট নৌকায় কয়েকজনের সঙ্গে চড়ে বসে। এ জন্য ধারদেনা করে জোগাড় করা এক হাজার ডলার দালালদের হাতে তুলে দেন মা-বাবা।
যাত্রার শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতোই। কিন্তু দূর সাগরে নিয়ে যখন একটা জাহাজে তাদের তোলা হলো, তখনই তা পরিণত হয় বিভীষিকার যাত্রায়। সশস্ত্র পাচারকারীদের তত্ত্বাবধানে জাহাজে তাঁদের মতোই আরও শত শত অভিবাসীকে ওঠানো হচ্ছিল, জানাল শরীফ। বলে, ‘আমরা ঘুমাতে পারতাম না। কেননা, যখনই কিছুটা শোয়ার বা পা মেলে আরাম করার চেষ্টা করতাম, তখনই দালালেরা আমাদের পেটাত ও লাথি মারত।’
দালালেরা গুলি করার হুমকিও দিত বলে জানায় শরীফ। বলে, উদ্ধার হওয়ার আগে এক মাস ধরে সাগরে ভেসে বেড়িয়েছে তারা। এ সময়ে খুব সামান্যই খাবার ও পানি দেওয়া হয় তাদের। দিনে রোদে পুড়তে ও রাতে কনকনে ঠান্ডায় খালি গায়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। এ কষ্ট সবার সহ্য হয়নি। কেউ কেউ পথেই মারা গেছে। সে বলে, ‘আমাদের নৌকার ছয়জন না খেয়ে ও অসুস্থ হয়ে মারা গেলে ক্যাপ্টেন তাদের লাশ সাগরে ছুড়ে ফেলার নির্দেশ দেয়।’
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার এখানেই শেষ নয়। শরীফ বলে, তাদের জাহাজ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছার পর থাইল্যান্ডের ক্যাপ্টেন জাহাজ ছেড়ে পালিয়ে যায়। এর আগে বলে যায়, একটি স্পিডবোট এসে তাদের বাকি পথ নিয়ে যাবে। কিন্তু কেউ জাহাজ চালাতে না জানায় ভয়ে যাত্রীরা সবাই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। তারপর তাদের আর করার কিছুই ছিল না। এরপর সাঁতরে তীরে পৌঁছে সে।
গত রবি ও সোমবার মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র উপকূল থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ২০০০ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের একজন এই শরীফ। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে মাঝসাগরে ভাসমান অবস্থায় তাঁদের রেখে চলে যায় পাচারকারীরা। পরে ভেসে ভেসে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে গেলে সম্প্রতি তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া শরীফের মতোই আরও প্রায় আট হাজার অভিবাসী অথই সাগরে এখনো ভেসে চলেছেন। তাঁদের নৌকার জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। নেই খাবার ও পানি। মালয়েশিয়া যাওয়ার ট্রানজিট ও অভিবাসীদের প্রাথমিক গন্তব্যস্থল থাইল্যান্ডে বর্তমানে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলতে থাকায় ভাসমান এ মানুষগুলোকে তীরে নিয়ে যাচ্ছে না পাচারকারীরা। তাই সাগরের মাঝেই তাঁদের ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে তারা।
আর কিছুদিন এভাবে ভাসতে থাকলে এসব অভিবাসীকে হয়তো মারাই পড়তে হবে বলে গতকাল মঙ্গলবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম। এ অবস্থায় তাঁদের অনেকে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন বলে জানা গেছে। খবর বিবিসি, এপি, এএফপি, রয়টার্স ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহর আশ্রয়শিবিরে নিজের ওই সুখস্বপ্ন ও রোমহর্ষক সাগরযাত্রার অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছিল মোহাম্মদ শরীফ। শরীফ জানায়, মালয়েশিয়ায় চাচার কাছে গিয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা শেষে নতুন জীবনের আশায় দেশ ছেড়েছিল সে। নিজের দেশের বঞ্চনার কথা ভুলে ছোট নৌকায় কয়েকজনের সঙ্গে চড়ে বসে। এ জন্য ধারদেনা করে জোগাড় করা এক হাজার ডলার দালালদের হাতে তুলে দেন মা-বাবা।
যাত্রার শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতোই। কিন্তু দূর সাগরে নিয়ে যখন একটা জাহাজে তাদের তোলা হলো, তখনই তা পরিণত হয় বিভীষিকার যাত্রায়। সশস্ত্র পাচারকারীদের তত্ত্বাবধানে জাহাজে তাঁদের মতোই আরও শত শত অভিবাসীকে ওঠানো হচ্ছিল, জানাল শরীফ। বলে, ‘আমরা ঘুমাতে পারতাম না। কেননা, যখনই কিছুটা শোয়ার বা পা মেলে আরাম করার চেষ্টা করতাম, তখনই দালালেরা আমাদের পেটাত ও লাথি মারত।’
দালালেরা গুলি করার হুমকিও দিত বলে জানায় শরীফ। বলে, উদ্ধার হওয়ার আগে এক মাস ধরে সাগরে ভেসে বেড়িয়েছে তারা। এ সময়ে খুব সামান্যই খাবার ও পানি দেওয়া হয় তাদের। দিনে রোদে পুড়তে ও রাতে কনকনে ঠান্ডায় খালি গায়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। এ কষ্ট সবার সহ্য হয়নি। কেউ কেউ পথেই মারা গেছে। সে বলে, ‘আমাদের নৌকার ছয়জন না খেয়ে ও অসুস্থ হয়ে মারা গেলে ক্যাপ্টেন তাদের লাশ সাগরে ছুড়ে ফেলার নির্দেশ দেয়।’
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার এখানেই শেষ নয়। শরীফ বলে, তাদের জাহাজ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছার পর থাইল্যান্ডের ক্যাপ্টেন জাহাজ ছেড়ে পালিয়ে যায়। এর আগে বলে যায়, একটি স্পিডবোট এসে তাদের বাকি পথ নিয়ে যাবে। কিন্তু কেউ জাহাজ চালাতে না জানায় ভয়ে যাত্রীরা সবাই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। তারপর তাদের আর করার কিছুই ছিল না। এরপর সাঁতরে তীরে পৌঁছে সে।
বাঁচার
আকুতি অভিবাসীদের: রোহিঙ্গা অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন আরাকান
প্রোজেক্টের কর্মকর্তা ক্রিস লিউয়া বলেন, সাগরে একটি জাহাজে ভাসমান ৩৫০ জন
রোহিঙ্গা মুঠোফোনে তাঁদের বাঁচানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
এ জাহাজে ৫০ জন নারী ও ৮৪টি শিশু রয়েছে উল্লেখ করে ক্রিস লিউয়া গতকাল বলেন, তিন দিন ধরে তাঁদের কোনো খাবার ও পানি নেই। যাত্রীরা সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে বলছেন ও কান্নাকাটি করছেন। যাত্রীরা জানেন না তাঁরা সাগরের ঠিক কোথায় আছেন এবং তেল ফুরিয়ে যাওয়া জাহাজটি কোথায় ভেসে যাচ্ছে। ক্যাপ্টেন ও তার সহকারীরা গত পরশু পালিয়ে গেছে।
এ অভিবাসীরা বলছেন, তাঁদের ধারণা, জাহাজটি মালয়েশিয়ার লংকাবি দ্বীপের কাছাকাছি অবস্থান করছে। তাঁরা অনেক দূরে স্থলভাগ দেখতে পাচ্ছেন। তীরের কাছাকাছি দিয়ে জাহাজও চলাচল করছে। কিন্তু তাঁদের ইশারায় এগিয়ে আসছে না।
নৌকা ফিরিয়ে দিল ইন্দোনেশিয়া: গত সোমবার সকালে কয়েক শ অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকাকে মালয়েশিয়ার দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। নৌকাটি ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় প্রবেশের পর দেশটির কর্মকর্তারা এর আরোহীদের খাদ্য ও পানি দিয়ে সেটি পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়ার নৌ মুখপাত্র মানাহান সিমোরাংকির বলেন, ‘আমরা তাঁদের আমাদের দেশে আসতে বাধা দিইনি। যেহেতু তাঁদের গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া, তাই আমরা তাঁদের ওই দেশের দিকেই যাওয়ার অনুরোধ করেছি।’
তবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ইন্দোনেশিয়ার এ সিদ্ধান্তকে বেদনাদায়ক উল্লেখ করেছে।
আঞ্চলিক উদ্যোগের আহ্বান আইওএমের: আইওএমের মুখপাত্র জো লোরি ভাসমান হাজারো অভিবাসীর অবস্থা ও তাঁদের উদ্ধারের ব্যাপারে গতকাল বলেন, ‘তাঁদের উদ্ধারে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর প্রচেষ্টার প্রয়োজন। সংস্থার সামর্থ্য না থাকলেও অভিবাসীদের অনুসন্ধান ও উদ্ধারে দেশগুলোর জাহাজ এবং স্যাটেলাইট আছে। অভিবাসীরা খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে সবাই মারা পড়তে পারেন।’
এ জাহাজে ৫০ জন নারী ও ৮৪টি শিশু রয়েছে উল্লেখ করে ক্রিস লিউয়া গতকাল বলেন, তিন দিন ধরে তাঁদের কোনো খাবার ও পানি নেই। যাত্রীরা সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে বলছেন ও কান্নাকাটি করছেন। যাত্রীরা জানেন না তাঁরা সাগরের ঠিক কোথায় আছেন এবং তেল ফুরিয়ে যাওয়া জাহাজটি কোথায় ভেসে যাচ্ছে। ক্যাপ্টেন ও তার সহকারীরা গত পরশু পালিয়ে গেছে।
এ অভিবাসীরা বলছেন, তাঁদের ধারণা, জাহাজটি মালয়েশিয়ার লংকাবি দ্বীপের কাছাকাছি অবস্থান করছে। তাঁরা অনেক দূরে স্থলভাগ দেখতে পাচ্ছেন। তীরের কাছাকাছি দিয়ে জাহাজও চলাচল করছে। কিন্তু তাঁদের ইশারায় এগিয়ে আসছে না।
নৌকা ফিরিয়ে দিল ইন্দোনেশিয়া: গত সোমবার সকালে কয়েক শ অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকাকে মালয়েশিয়ার দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। নৌকাটি ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় প্রবেশের পর দেশটির কর্মকর্তারা এর আরোহীদের খাদ্য ও পানি দিয়ে সেটি পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়ার নৌ মুখপাত্র মানাহান সিমোরাংকির বলেন, ‘আমরা তাঁদের আমাদের দেশে আসতে বাধা দিইনি। যেহেতু তাঁদের গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া, তাই আমরা তাঁদের ওই দেশের দিকেই যাওয়ার অনুরোধ করেছি।’
তবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ইন্দোনেশিয়ার এ সিদ্ধান্তকে বেদনাদায়ক উল্লেখ করেছে।
আঞ্চলিক উদ্যোগের আহ্বান আইওএমের: আইওএমের মুখপাত্র জো লোরি ভাসমান হাজারো অভিবাসীর অবস্থা ও তাঁদের উদ্ধারের ব্যাপারে গতকাল বলেন, ‘তাঁদের উদ্ধারে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর প্রচেষ্টার প্রয়োজন। সংস্থার সামর্থ্য না থাকলেও অভিবাসীদের অনুসন্ধান ও উদ্ধারে দেশগুলোর জাহাজ এবং স্যাটেলাইট আছে। অভিবাসীরা খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে সবাই মারা পড়তে পারেন।’
No comments