সন্ত্রাসবাদ রুখতে সবার সহায়তা দরকার by জন কেরি
বহুধাবিভক্ত অঞ্চল ও জটিল বিশ্বব্যবস্থায় আইএস অনেক দেশের জন্যই হুমকি হয়ে উঠেছে। তাদের লক্ষ্য এই বিরাজমান ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা আর তাদের তরিকা হচ্ছে গণহত্যা। এ ব্যাপার দুটি নস্যাৎ করতে সামরিক শক্তির সঙ্গে সারা দুনিয়ার রাজনৈতিক, মানবিক, অর্থনৈতিক, আইনি ও গোয়েন্দা সমর্থন লাগবে।
নৃশংসতার এক অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করেছে সংগঠনটি। তারা গলা কেটে, ক্রুশবিদ্ধ করে ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। এমনকি তারা সুন্নি মুসলমানদেরও হত্যা করেছে, অথচ তারা নিজেদের সুন্নি হিসেবে দাবি করে। তবে তারা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই নয়, সারা দুনিয়ার জন্যই হুমকি হয়ে উঠেছে।
আইএসের জন্ম হয়েছে আল-কায়েদা থেকে। এই সংগঠনটি সেখানে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সহিংস তৎপরতা চালিয়েছে। ফলে আইএস একদল প্রস্তুত জিহাদি পেয়ে গেছে, যারা শুধু নিজেদের অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না, সারা দুনিয়াতেই প্রভাব বিস্তার করতে চায়। তারা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ ও ইরাকের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বকে সফলভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে। সংগঠনটির নেতৃত্ব বরাবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এদিকে গত মে মাসে সংগঠনটির সন্ত্রাসীরা ব্রাসেলসে ইহুদি জাদুঘরের সামনে তিন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, গুলিবিদ্ধ আরেক ব্যক্তি ১৩ দিন পর মারা গেছেন। তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করে কোথাও একবার যেতে পারলে সেখানেই খতরনাক হয়ে উঠবে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এর বাইরে নয়।
প্রমাণ আছে, বাধা না পেলে এই সন্ত্রাসীরা শুধু ইরাক ও সিরিয়াতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সাবেক আল-কায়েদার এই নবরূপ আইএস তেল চুরি, অপহরণ ও ইরাক/সিরিয়ার আর্থিক খাতে চাঁদাবাজি করে প্রভূত অর্থের মালিক হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে উন্নত অস্ত্র চুরি করে তারা এখন আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত। যেকোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের চেয়ে ভূমি দখলে তারা অনেক পারদর্শী। জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কের অনেক ভূমি তারা দখল করে ফেলেছে। এমনকি বিপজ্জনকভাবে ইসরায়েলেরও অনেক কাছে এসে পড়েছে তারা।
আইএসের যোদ্ধারা অত্যন্ত বর্বর ও নৃশংস আচরণ করছে। তারা একদিকে যেমন শিয়া মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের হত্যা করে গোষ্ঠীগত বিবাদ তৈরি করছে, অন্যদিকে কৌশলীভাবে সুন্নিদেরও হত্যা করে ভূমি দখল করছে। সম্প্রতি তারা মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলির মুণ্ডুপাত করেছে, এই ঘটনা বিশ্ববিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ও অন্য দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ ঐক্যের মাধ্যমে আইএস নামক এই ক্যানসারকে আর বাড়তে দেওয়া হবে না। দুনিয়া এই দুষ্টক্ষত সারিয়ে তুলতে পারবে এবং শেষমেশ এটাকে পরাজিত করতে সক্ষম হবে। আইএস অত্যন্ত ঘৃণ্য একটি সংগঠন, কিন্তু তারা সর্বশক্তিমান নয়। উত্তর ইরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোমাবর্ষণের পর এর লক্ষণ দেখা যেতে শুরু করেছে, এর ফলে ইরাকি ও কুর্দি সেনারা আক্রমণে যেতে পারছে। আমাদের সহায়তায় ইরাকি নেতারা নতুন করে সংগঠিত হতে পেরেছেন, এর মাধ্যমে তারা আইএসকে একঘরে করতে ইরাকের অন্য সম্প্রদায়গুলোকে একত্র করতে পেরেছে।
শুধু বিমান হামলা করেই শত্রুকে পরাজিত করা যাবে না। দুনিয়ার অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে আমরা আরও সাড়া প্রত্যাশা করছি। ইরাকি বাহিনী ও সিরিয়ার ন্যায়সংগত বিরোধিতাকে আমাদের সমর্থন দেওয়া প্রয়োজন—এরাই আইএসকে যুদ্ধক্ষেত্রে মোকাবিলা করছে। আইএসের সক্ষমতাকে কমজোর করে দিতে হবে, তাদের গণমাধ্যমে পরিচালিত চরমপন্থী প্রচারণারও মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের নিজেদের প্রতিরক্ষা উন্নত করতে হবে, জনগণকে রক্ষায় সহযোগিতার পরিসর বাড়াতে হবে।
আগামী সপ্তাহে ওয়েলসে অনুষ্ঠেয় ন্যাটো সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল ও আমি আমাদের ইউরোপীয় বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হব। লক্ষ্য হচ্ছে, বৃহত্তর একটি ঐক্য গড়ে তোলা। বৈঠকের পর আমি ও চাক হেগেল মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছি, সেখানকার সবচেয়ে আক্রান্ত দেশগুলোকে নিয়ে একটি ঐক্য গঠনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার উদ্দেশ্যে আমরা সেখানে যাব।
সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র সভাপতিত্ব করবে। সেখানে আমরা একটি বৃহত্তর ঐক্য গঠনের চেষ্টা করব ও বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কী কী বিপদ ঘটাতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করব। ওদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই হুমকি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদের পরিকল্পনা পেশ করবেন।
এই যুদ্ধে প্রায় সব দেশেরই কিছু না কিছু করার আছে। কেউ কেউ সামরিক সহায়তা দেবে, প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে। কেউ দেবে মানবিক সহায়তা, এ অঞ্চলের লাখো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। অন্যরা শুধু ভেঙে পড়া অর্থনীতি পুনর্গঠনেই সহায়তা দেবে না, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থায় যে চিড় ধরেছে, সেটা জোড়া লাগাতেও সহায়তা দেবে। ইরাকে এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, সেখানে অনেকেই আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানবিক সহায়তা ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আমাদের প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে ডজন খানেক রাষ্ট্র সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার নিশ্চিতভাবে এদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাতও রয়েছে। কিন্তু কোনো শিষ্টাচারসম্পন্ন জাতিই আইএসের এই নৃশংসতা মানতে পারবে না, এই দুষ্ট ক্ষত সারানোয় কোনো দায়িত্ব পালন করবে না, তা হয় না।
আইএসের এই ঘৃণ্য রাজনীতির কারণে বিবদমান প্রতিবেশীরাই ইরাকের নতুন সরকারকে সহায়তায় এগিয়ে আসছে। সময়ের পরিক্রমায়, এই জোট আইএস ও অন্য সমমনা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর উদ্ভবের কারণ খতিয়ে দেখবে।
জোট গঠন করা খুব কঠিন ব্যাপার, কিন্তু একটি অভিন্ন শত্রুকে মোকাবিলায় এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প হতে পারে না। সাদ্দাম হোসেন যখন ১৯৯০ সালে কুয়েত আক্রমণ করেন, তখন কিন্তু প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৃতীয় জেমস এ বেকার নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বা তাড়াহুড়ো করেও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তাঁরা কৌশলগতভাবে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমন্বয়ে একটি জোট গঠন করেন, যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুব দ্রুতই বিজয় অর্জিত হয়।
দায়িত্বশীল দেশ ও সে দেশের জনগণ একত্র হলেই চরমপন্থাকে পরাজিত করা সম্ভব।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
জন কেরি: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নৃশংসতার এক অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করেছে সংগঠনটি। তারা গলা কেটে, ক্রুশবিদ্ধ করে ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। এমনকি তারা সুন্নি মুসলমানদেরও হত্যা করেছে, অথচ তারা নিজেদের সুন্নি হিসেবে দাবি করে। তবে তারা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই নয়, সারা দুনিয়ার জন্যই হুমকি হয়ে উঠেছে।
আইএসের জন্ম হয়েছে আল-কায়েদা থেকে। এই সংগঠনটি সেখানে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সহিংস তৎপরতা চালিয়েছে। ফলে আইএস একদল প্রস্তুত জিহাদি পেয়ে গেছে, যারা শুধু নিজেদের অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না, সারা দুনিয়াতেই প্রভাব বিস্তার করতে চায়। তারা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ ও ইরাকের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বকে সফলভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে। সংগঠনটির নেতৃত্ব বরাবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এদিকে গত মে মাসে সংগঠনটির সন্ত্রাসীরা ব্রাসেলসে ইহুদি জাদুঘরের সামনে তিন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, গুলিবিদ্ধ আরেক ব্যক্তি ১৩ দিন পর মারা গেছেন। তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করে কোথাও একবার যেতে পারলে সেখানেই খতরনাক হয়ে উঠবে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এর বাইরে নয়।
প্রমাণ আছে, বাধা না পেলে এই সন্ত্রাসীরা শুধু ইরাক ও সিরিয়াতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সাবেক আল-কায়েদার এই নবরূপ আইএস তেল চুরি, অপহরণ ও ইরাক/সিরিয়ার আর্থিক খাতে চাঁদাবাজি করে প্রভূত অর্থের মালিক হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে উন্নত অস্ত্র চুরি করে তারা এখন আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত। যেকোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের চেয়ে ভূমি দখলে তারা অনেক পারদর্শী। জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কের অনেক ভূমি তারা দখল করে ফেলেছে। এমনকি বিপজ্জনকভাবে ইসরায়েলেরও অনেক কাছে এসে পড়েছে তারা।
আইএসের যোদ্ধারা অত্যন্ত বর্বর ও নৃশংস আচরণ করছে। তারা একদিকে যেমন শিয়া মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের হত্যা করে গোষ্ঠীগত বিবাদ তৈরি করছে, অন্যদিকে কৌশলীভাবে সুন্নিদেরও হত্যা করে ভূমি দখল করছে। সম্প্রতি তারা মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলির মুণ্ডুপাত করেছে, এই ঘটনা বিশ্ববিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ও অন্য দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ ঐক্যের মাধ্যমে আইএস নামক এই ক্যানসারকে আর বাড়তে দেওয়া হবে না। দুনিয়া এই দুষ্টক্ষত সারিয়ে তুলতে পারবে এবং শেষমেশ এটাকে পরাজিত করতে সক্ষম হবে। আইএস অত্যন্ত ঘৃণ্য একটি সংগঠন, কিন্তু তারা সর্বশক্তিমান নয়। উত্তর ইরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোমাবর্ষণের পর এর লক্ষণ দেখা যেতে শুরু করেছে, এর ফলে ইরাকি ও কুর্দি সেনারা আক্রমণে যেতে পারছে। আমাদের সহায়তায় ইরাকি নেতারা নতুন করে সংগঠিত হতে পেরেছেন, এর মাধ্যমে তারা আইএসকে একঘরে করতে ইরাকের অন্য সম্প্রদায়গুলোকে একত্র করতে পেরেছে।
শুধু বিমান হামলা করেই শত্রুকে পরাজিত করা যাবে না। দুনিয়ার অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে আমরা আরও সাড়া প্রত্যাশা করছি। ইরাকি বাহিনী ও সিরিয়ার ন্যায়সংগত বিরোধিতাকে আমাদের সমর্থন দেওয়া প্রয়োজন—এরাই আইএসকে যুদ্ধক্ষেত্রে মোকাবিলা করছে। আইএসের সক্ষমতাকে কমজোর করে দিতে হবে, তাদের গণমাধ্যমে পরিচালিত চরমপন্থী প্রচারণারও মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের নিজেদের প্রতিরক্ষা উন্নত করতে হবে, জনগণকে রক্ষায় সহযোগিতার পরিসর বাড়াতে হবে।
আগামী সপ্তাহে ওয়েলসে অনুষ্ঠেয় ন্যাটো সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল ও আমি আমাদের ইউরোপীয় বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হব। লক্ষ্য হচ্ছে, বৃহত্তর একটি ঐক্য গড়ে তোলা। বৈঠকের পর আমি ও চাক হেগেল মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছি, সেখানকার সবচেয়ে আক্রান্ত দেশগুলোকে নিয়ে একটি ঐক্য গঠনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার উদ্দেশ্যে আমরা সেখানে যাব।
সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র সভাপতিত্ব করবে। সেখানে আমরা একটি বৃহত্তর ঐক্য গঠনের চেষ্টা করব ও বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কী কী বিপদ ঘটাতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করব। ওদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই হুমকি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদের পরিকল্পনা পেশ করবেন।
এই যুদ্ধে প্রায় সব দেশেরই কিছু না কিছু করার আছে। কেউ কেউ সামরিক সহায়তা দেবে, প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে। কেউ দেবে মানবিক সহায়তা, এ অঞ্চলের লাখো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। অন্যরা শুধু ভেঙে পড়া অর্থনীতি পুনর্গঠনেই সহায়তা দেবে না, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থায় যে চিড় ধরেছে, সেটা জোড়া লাগাতেও সহায়তা দেবে। ইরাকে এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, সেখানে অনেকেই আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানবিক সহায়তা ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আমাদের প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে ডজন খানেক রাষ্ট্র সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার নিশ্চিতভাবে এদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাতও রয়েছে। কিন্তু কোনো শিষ্টাচারসম্পন্ন জাতিই আইএসের এই নৃশংসতা মানতে পারবে না, এই দুষ্ট ক্ষত সারানোয় কোনো দায়িত্ব পালন করবে না, তা হয় না।
আইএসের এই ঘৃণ্য রাজনীতির কারণে বিবদমান প্রতিবেশীরাই ইরাকের নতুন সরকারকে সহায়তায় এগিয়ে আসছে। সময়ের পরিক্রমায়, এই জোট আইএস ও অন্য সমমনা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর উদ্ভবের কারণ খতিয়ে দেখবে।
জোট গঠন করা খুব কঠিন ব্যাপার, কিন্তু একটি অভিন্ন শত্রুকে মোকাবিলায় এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প হতে পারে না। সাদ্দাম হোসেন যখন ১৯৯০ সালে কুয়েত আক্রমণ করেন, তখন কিন্তু প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৃতীয় জেমস এ বেকার নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বা তাড়াহুড়ো করেও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তাঁরা কৌশলগতভাবে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমন্বয়ে একটি জোট গঠন করেন, যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুব দ্রুতই বিজয় অর্জিত হয়।
দায়িত্বশীল দেশ ও সে দেশের জনগণ একত্র হলেই চরমপন্থাকে পরাজিত করা সম্ভব।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
জন কেরি: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
No comments