শামীমের সহায়তায় পালান নূর হোসেন? by কামরুল হাসান
নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল
ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ ও খুনের মামলার প্রধান
আসামি নূর হোসেনকে বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের
সরকারি দলের সাংসদ শামীম ওসমান। তদন্তসংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে এ
তথ্য জানা গেছে৷
>>সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন l ফাইল ছবি
মামলা তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থার দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কাছে তথ্যপ্রমাণ আছে, অপহরণের দুই দিন পর ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে শামীম ওসমানকে ফোন করেন নূর হোসেন। দুই মিনিটের মতো কথা হয় তাঁদের মধ্যে৷ এই কথোপকথনের রেকর্ড তাঁদের হাতে আছে। শামীম ওসমানকে ফোন করার সময় ধানমন্ডি ৪ নম্বর সড়কের আশপাশে ছিল নূর হোসেনের অবস্থান৷
রেকর্ডে কী আছে, জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শামীম ওসমানকে ফোন করেন নূর হোসেন। তিনি ফোন ধরে বলেন, ‘খবরটা পৌঁছাই দিছিলাম, পাইছিলা?’ জবাবে নূর হোসেন বলেন, ‘পাইছি, ভাই।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘তুমি অত চিন্তা করো না।’ নূর হোসেন এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে শামীম ওসমানকে বলেন, ‘ভাই, আমি লেখাপড়া করিনি। আমার অনেক ভুল আছে। আপনি আমার বাপ লাগেন। আপনারে আমি অনেক ভালোবাসি, ভাই। আপনি আমারে একটু যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।’ জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’ শামীম ওসমান ‘গৌর দা’ বলে এক লোকের সঙ্গে নূর হোসেনকে দেখা করতে বলেন।
কথোপকথনের এই পর্যায়ে নূর হোসেনের কাছে শামীম ওসমান জানতে চান, কোনো সিল (সম্ভবত ভিসা) আছে িক না। সিল থাকার কথা জানিয়ে নূর হোসেন বলেন, ‘আছে আছে, সিল আছে, কিন্তু যামু ক্যামনে? যেভাবে বলল অ্যালার্ট (রেড অ্যালার্ট)।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘তুমি আগাইতে থাক।’ নূর হোসেন তখন বলেন, ‘ভাই, তাহলে একটু খবর নেন। আমি আবার ফোন দেই।’
কথাবার্তার একপর্যায়ে শামীম ওসমান নূর হোসেনকে বলেন, ‘তুমি কোনো অপরাধ করো নাই। আমি জানি, ঘটনা অন্য কেউ ঘটাইয়া এক ঢিলে দুই পাখি মারতেছে।’ এ সময় শামীম ওসমান নূর হোসেনের কাছে জানতে চান, এই নম্বরটি (ফোন) নতুন কি না৷ নূর হোসেন ‘হ্যাঁ সূচক’ জবাব দেন৷ শামীম ওসমান বলেন, তিনি নূর হোসেনকে তাঁর আরেকটি নম্বর পাঠাবেন যোগাযোগের জন্য৷
তদন্তকারী সংস্থার সূত্র দাবি করছে, এরপর নূর হোসেন দেশ ছাড়েন। র্যাব বলেছে, তিনি এখন ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন।
নূর হোসেনের সঙ্গে ফোনালাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে শামীম ওসমান গত বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পর তো নূর হোসেন আমাকে কয়েকবার ফোন করেছিল। একটি অচেনা নম্বর থেকে আসা ফোন আমি বোধ হয় একবার ধরেছিলাম।’ কী কথাবার্তা হয়েছিল, জানতে চাইলে শামীম ওসমান বলেন, ‘সে বারবার বলছিল, সে এই কাজ করতে পারে না। খুব বেশি কথাবার্তা আর হয়নি। আর সে তো তখন নারায়ণগঞ্জেই ছিল।’ ভারতে চলে যাওয়ার আগে কথাবার্তা হয়েছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারব না, সে তখন কোথায় ছিল।’
ওই আলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের দুজনের ফোনালাপের ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। মাত্র তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখব।’
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সাতজন অপহরণের আগে ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নূর হোসেন ভারতের বিভিন্ন নম্বরে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। অপহরণের দিন বিকেল চারটা পর্যন্ত তিনি সিদ্ধিরগঞ্জেই ছিলেন। পাঁচটার দিকে আসেন চাষাঢ়া এলাকায়। ২৮ এপ্রিলও তিনি সারা দিন সিদ্ধিরগঞ্জে ছিলেন। ২৮ এপ্রিল গভীর রাতে ঢাকায় চলে আসেন এবং গুলশান এলাকায় অবস্থান করেন। ২৯ এপ্রিল রাত নয়টায় ধানমন্ডিতে অবস্থান করার সময়ই শামীম ওসমানের সঙ্গে কথা বলেন নূর হোসেন। এর পর থেকে তিনি নিজের ফোন বন্ধ রাখেন। ধারণা হচ্ছে, ওই রাতেই তিনি ভারতে চলে যান৷
নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ করা হয় ২৭ এপ্রিল৷ এর পরপরই নজরুলের পরিবার নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তোলে৷ তখন নারায়ণগঞ্জের রাইফেল ক্লাবে নূর হোসেনকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন শামীম ওসমান। ২৮ এপ্রিল নূর হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। ৩০ এপ্রিল লাশ উদ্ধারের পর নূর হোসেনকে কেউ আর এলাকায় দেখেননি।
৪ মে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র্যাবের তিন কর্মকর্তা ওই সাতজনকে অপহরণ ও খুন করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা খোঁজ করে জানতে পারেন, নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে গেছেন। আর ওই কথোপকথনের সূত্র ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো মনে করছে, শামীম ওসমান তাঁকে পালাতে সহায়তা করেছেন।
মামলা তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থার দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কাছে তথ্যপ্রমাণ আছে, অপহরণের দুই দিন পর ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে শামীম ওসমানকে ফোন করেন নূর হোসেন। দুই মিনিটের মতো কথা হয় তাঁদের মধ্যে৷ এই কথোপকথনের রেকর্ড তাঁদের হাতে আছে। শামীম ওসমানকে ফোন করার সময় ধানমন্ডি ৪ নম্বর সড়কের আশপাশে ছিল নূর হোসেনের অবস্থান৷
রেকর্ডে কী আছে, জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শামীম ওসমানকে ফোন করেন নূর হোসেন। তিনি ফোন ধরে বলেন, ‘খবরটা পৌঁছাই দিছিলাম, পাইছিলা?’ জবাবে নূর হোসেন বলেন, ‘পাইছি, ভাই।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘তুমি অত চিন্তা করো না।’ নূর হোসেন এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে শামীম ওসমানকে বলেন, ‘ভাই, আমি লেখাপড়া করিনি। আমার অনেক ভুল আছে। আপনি আমার বাপ লাগেন। আপনারে আমি অনেক ভালোবাসি, ভাই। আপনি আমারে একটু যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।’ জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’ শামীম ওসমান ‘গৌর দা’ বলে এক লোকের সঙ্গে নূর হোসেনকে দেখা করতে বলেন।
কথোপকথনের এই পর্যায়ে নূর হোসেনের কাছে শামীম ওসমান জানতে চান, কোনো সিল (সম্ভবত ভিসা) আছে িক না। সিল থাকার কথা জানিয়ে নূর হোসেন বলেন, ‘আছে আছে, সিল আছে, কিন্তু যামু ক্যামনে? যেভাবে বলল অ্যালার্ট (রেড অ্যালার্ট)।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘তুমি আগাইতে থাক।’ নূর হোসেন তখন বলেন, ‘ভাই, তাহলে একটু খবর নেন। আমি আবার ফোন দেই।’
কথাবার্তার একপর্যায়ে শামীম ওসমান নূর হোসেনকে বলেন, ‘তুমি কোনো অপরাধ করো নাই। আমি জানি, ঘটনা অন্য কেউ ঘটাইয়া এক ঢিলে দুই পাখি মারতেছে।’ এ সময় শামীম ওসমান নূর হোসেনের কাছে জানতে চান, এই নম্বরটি (ফোন) নতুন কি না৷ নূর হোসেন ‘হ্যাঁ সূচক’ জবাব দেন৷ শামীম ওসমান বলেন, তিনি নূর হোসেনকে তাঁর আরেকটি নম্বর পাঠাবেন যোগাযোগের জন্য৷
তদন্তকারী সংস্থার সূত্র দাবি করছে, এরপর নূর হোসেন দেশ ছাড়েন। র্যাব বলেছে, তিনি এখন ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন।
নূর হোসেনের সঙ্গে ফোনালাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে শামীম ওসমান গত বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পর তো নূর হোসেন আমাকে কয়েকবার ফোন করেছিল। একটি অচেনা নম্বর থেকে আসা ফোন আমি বোধ হয় একবার ধরেছিলাম।’ কী কথাবার্তা হয়েছিল, জানতে চাইলে শামীম ওসমান বলেন, ‘সে বারবার বলছিল, সে এই কাজ করতে পারে না। খুব বেশি কথাবার্তা আর হয়নি। আর সে তো তখন নারায়ণগঞ্জেই ছিল।’ ভারতে চলে যাওয়ার আগে কথাবার্তা হয়েছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারব না, সে তখন কোথায় ছিল।’
ওই আলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের দুজনের ফোনালাপের ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। মাত্র তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখব।’
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সাতজন অপহরণের আগে ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নূর হোসেন ভারতের বিভিন্ন নম্বরে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। অপহরণের দিন বিকেল চারটা পর্যন্ত তিনি সিদ্ধিরগঞ্জেই ছিলেন। পাঁচটার দিকে আসেন চাষাঢ়া এলাকায়। ২৮ এপ্রিলও তিনি সারা দিন সিদ্ধিরগঞ্জে ছিলেন। ২৮ এপ্রিল গভীর রাতে ঢাকায় চলে আসেন এবং গুলশান এলাকায় অবস্থান করেন। ২৯ এপ্রিল রাত নয়টায় ধানমন্ডিতে অবস্থান করার সময়ই শামীম ওসমানের সঙ্গে কথা বলেন নূর হোসেন। এর পর থেকে তিনি নিজের ফোন বন্ধ রাখেন। ধারণা হচ্ছে, ওই রাতেই তিনি ভারতে চলে যান৷
নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ করা হয় ২৭ এপ্রিল৷ এর পরপরই নজরুলের পরিবার নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তোলে৷ তখন নারায়ণগঞ্জের রাইফেল ক্লাবে নূর হোসেনকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন শামীম ওসমান। ২৮ এপ্রিল নূর হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। ৩০ এপ্রিল লাশ উদ্ধারের পর নূর হোসেনকে কেউ আর এলাকায় দেখেননি।
৪ মে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র্যাবের তিন কর্মকর্তা ওই সাতজনকে অপহরণ ও খুন করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা খোঁজ করে জানতে পারেন, নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে গেছেন। আর ওই কথোপকথনের সূত্র ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো মনে করছে, শামীম ওসমান তাঁকে পালাতে সহায়তা করেছেন।
No comments