শত কিলোমিটার হেঁটে সমাবেশে
হেফাজতে
ইসলামের গতকালের লংমার্চ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথ বন্ধ
করে রাজধানী ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় একদিন আগেই। বন্ধ করে দেয়া হয়
মাওয়া ও আরিচাঘাটের ফেরি চলাচলও।
এতে বিপাকে পড়ে হেফাজতে
ইসলামের কর্মীরা। উপায়ন্তর না পেয়ে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকে কয়েক
লাখ মুসল্লি পায়ে হেঁটেই উপস্থিত হন সমাবেশে। মুন্সীগঞ্জের ফুলহার এলাকার
অশীতিপর বৃদ্ধ আবদুল খালেক বলেন, সরকার বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় পায়ে
হেঁটেই সমাবেশে এসেছি। সকাল ৭টায় মুন্সীগঞ্জ থেকে রওনা দিয়ে বেলা
১১টায় এসে পৌঁছেছি। মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রায় এক লাখ লোক সমাবেশে যোগ
দিয়েছেন। এতে আমাদের এলাকার কৃষক সমাজও অংশ নিয়েছে। আমরা সবাই ঈমানি
দায়িত্ব বোধ থেকেই অংশ নিয়েছি। টাঙ্গাইল থেকে পায়ে হেঁটে এসেছেন মো.
বসিরউদ্দিন। তিনি বলেন, রাত তিনটার দিকে টাঙ্গাইল থেকে রওনা হয়ে সকাল ১০টায়
এসে পৌঁছেছি। আমাদের এলাকা থেকে কয়েক হাজার মুসল্লি সমাবেশে এসেছেন। পথে
আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু
মুসল্লিদের ধাওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। তবে আমরা সবাই ইসলাম রক্ষায় এই সমাবেশে
অংশ নিয়েছি। এভাবে কুমিল্লা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, পিরোজপুর
এলাকা থেকে কয়েক লাখ মুসল্লি হেঁটে সমাবেশে যোগ দেন।
গণজাগরণ মঞ্চ অবরোধের চেষ্টা: হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে অংশ নিতে সকাল থেকে রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে কয়েক লাখ কর্মী-সমর্থক মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে তৌহিদী জনতার কাফেলা উত্তর দিকে ফকিরেরপুল, পশ্চিম দিকের পুরানা পল্টন মোড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ অবরোধের জন্য কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি পুরানা পল্টন মোড়ে অবস্থান নেন। এসময় তারা স্লোগান সহকারে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে হেফাজতে ইসলামের স্বেচ্ছাসেবকরা বাধা দেন। তখন মুসল্লিরা পুরানা পল্টন মোড়েই অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুরানা পল্টনের পুলিশ ব্যারিকেডের পশ্চিম দিকে জড়ো হয়ে আবার শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ অবরোধের চেষ্টা চালান। এসময় তারা স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। প্রেস ক্লাবের পশ্চিমপাশের পুলিশ ব্যারিকেডে আবার আটকে যান তারা। এসময় ওই এলাকায় তৈরি হয় উত্তেজনা। হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের অনুরোধে আবারও ফিরে আসেন মুসল্লিরা। তবে সমাবেশ শেষ অবধি বারবার পুলিশের ব্যারিকেড ডিঙ্গিয়ে শাহবাগে যাওয়ার চেষ্টা করেন মুসল্লিরা। কিন্তু প্রতিবার হেফাজতে ইসলামের স্বেচ্ছাসেবকদের শক্ত প্রতিরোধের কারণে ফিরে আসতে হয়। এসময় হেফাজতের কর্মীরা তাদের শান্ত করে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবো। কোন ধরনের সহিংসতা করবো না।
চিকিৎসাসেবায় ড্যাব-এর মেডিকেল টিম
হেফাজতে ইসলামের ডাকা লংমার্চে অংশগ্রহণকারী লাখো মানুষের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর ছয়টি মেডিকেল টিম। সমাবেশের চারদিকে অবস্থান নিয়ে কেউ অসুস্থ হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। রাজধানীর ফকিরাপুল মোড়, টিকাটুলির অভিসার সিনেমা হলের সামনের রাস্তা, দৈনিক বাংলা মোড়, নটর ডেম কলেজের সামনের রাস্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের মোড় ও বায়তুল মোবাররমের উত্তর গেটে এ টিমগুলো অবস্থান নিয়েছে। প্রতিটি টিমে ৮ জন করে ডাক্তার স্বেচ্ছাসেবা দিচ্ছেন। ড্যাবের সদস্য ডা. জাহিদুর রহমান জানান, ড্যাব-এর ছয়টি টিম সকাল থেকে সারাদিনব্যাপী এই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। গরমে যে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া স্যালাইন, গ্লুকোজ ও ওষুধপত্র সরবরাহ করা হয়।
‘নাস্তিকদের’ শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর: ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে চলছে সর্বস্তরের মানুষের গণস্বাক্ষর। কয়েকশ’ গজ সাদা ও রঙিন কাপড় বায়তুল মোকারমের উত্তর গেটে বিছিয়ে রাখা হয়। সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ইসলামের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে মনের নানা ক্ষোভের কথা লিখেছেন ব্যানারে। মুহূর্তের মধ্যে জনতার ক্ষোভের বাণীতে পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে ব্যানারগুলো। এরপর আবারও বিছিয়ে দেয়া হচ্ছে গণস্বাক্ষরের কাপড়। অনেকে ব্যানারে লিখছেন- নাস্তিকদের ফাঁসি চাই, ইমরানের ফাঁসি চাই, রাজাকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ফাঁসি চাই, ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম চাই, নাস্তিক্যবাদী নিপাত চাই।
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ জিকির
হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে যোগ দিতে আগের দিন থেকেই রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থান করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এছাড়া, সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ আশপাশের জেলা থেকে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা এসে যোগ দেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আসার সময় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ জিকিরে উজ্জীবিত করে রাখা হয় মুসল্লিদের। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে হেফাজতে ইসলামের একটি বিশাল মিছিল সমাবেশে যোগ দেয়। এসময় হেফাজতের কর্মীদের জিকির করতে দেখা যায়। এছাড়া, সমাবেশে যোগ দেয়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও জিকির করে সমাবেশকে উজ্জীবিত করে রাখেন।
গণজাগরণ মঞ্চ অবরোধের চেষ্টা: হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে অংশ নিতে সকাল থেকে রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে কয়েক লাখ কর্মী-সমর্থক মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে তৌহিদী জনতার কাফেলা উত্তর দিকে ফকিরেরপুল, পশ্চিম দিকের পুরানা পল্টন মোড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ অবরোধের জন্য কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি পুরানা পল্টন মোড়ে অবস্থান নেন। এসময় তারা স্লোগান সহকারে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে হেফাজতে ইসলামের স্বেচ্ছাসেবকরা বাধা দেন। তখন মুসল্লিরা পুরানা পল্টন মোড়েই অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুরানা পল্টনের পুলিশ ব্যারিকেডের পশ্চিম দিকে জড়ো হয়ে আবার শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ অবরোধের চেষ্টা চালান। এসময় তারা স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। প্রেস ক্লাবের পশ্চিমপাশের পুলিশ ব্যারিকেডে আবার আটকে যান তারা। এসময় ওই এলাকায় তৈরি হয় উত্তেজনা। হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের অনুরোধে আবারও ফিরে আসেন মুসল্লিরা। তবে সমাবেশ শেষ অবধি বারবার পুলিশের ব্যারিকেড ডিঙ্গিয়ে শাহবাগে যাওয়ার চেষ্টা করেন মুসল্লিরা। কিন্তু প্রতিবার হেফাজতে ইসলামের স্বেচ্ছাসেবকদের শক্ত প্রতিরোধের কারণে ফিরে আসতে হয়। এসময় হেফাজতের কর্মীরা তাদের শান্ত করে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবো। কোন ধরনের সহিংসতা করবো না।
চিকিৎসাসেবায় ড্যাব-এর মেডিকেল টিম
হেফাজতে ইসলামের ডাকা লংমার্চে অংশগ্রহণকারী লাখো মানুষের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর ছয়টি মেডিকেল টিম। সমাবেশের চারদিকে অবস্থান নিয়ে কেউ অসুস্থ হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। রাজধানীর ফকিরাপুল মোড়, টিকাটুলির অভিসার সিনেমা হলের সামনের রাস্তা, দৈনিক বাংলা মোড়, নটর ডেম কলেজের সামনের রাস্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের মোড় ও বায়তুল মোবাররমের উত্তর গেটে এ টিমগুলো অবস্থান নিয়েছে। প্রতিটি টিমে ৮ জন করে ডাক্তার স্বেচ্ছাসেবা দিচ্ছেন। ড্যাবের সদস্য ডা. জাহিদুর রহমান জানান, ড্যাব-এর ছয়টি টিম সকাল থেকে সারাদিনব্যাপী এই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। গরমে যে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া স্যালাইন, গ্লুকোজ ও ওষুধপত্র সরবরাহ করা হয়।
‘নাস্তিকদের’ শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর: ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে চলছে সর্বস্তরের মানুষের গণস্বাক্ষর। কয়েকশ’ গজ সাদা ও রঙিন কাপড় বায়তুল মোকারমের উত্তর গেটে বিছিয়ে রাখা হয়। সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ইসলামের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে মনের নানা ক্ষোভের কথা লিখেছেন ব্যানারে। মুহূর্তের মধ্যে জনতার ক্ষোভের বাণীতে পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে ব্যানারগুলো। এরপর আবারও বিছিয়ে দেয়া হচ্ছে গণস্বাক্ষরের কাপড়। অনেকে ব্যানারে লিখছেন- নাস্তিকদের ফাঁসি চাই, ইমরানের ফাঁসি চাই, রাজাকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ফাঁসি চাই, ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম চাই, নাস্তিক্যবাদী নিপাত চাই।
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ জিকির
হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে যোগ দিতে আগের দিন থেকেই রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থান করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এছাড়া, সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ আশপাশের জেলা থেকে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা এসে যোগ দেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আসার সময় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ জিকিরে উজ্জীবিত করে রাখা হয় মুসল্লিদের। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে হেফাজতে ইসলামের একটি বিশাল মিছিল সমাবেশে যোগ দেয়। এসময় হেফাজতের কর্মীদের জিকির করতে দেখা যায়। এছাড়া, সমাবেশে যোগ দেয়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও জিকির করে সমাবেশকে উজ্জীবিত করে রাখেন।
No comments