রুখতে হবে নির্যাতন by আজমাল হোসেন মামুন
আজকাল পত্রিকা খুললে প্রতিবন্ধী নারী নির্যাতনের খবর চোখে পড়ে। প্রতিবন্ধী নারীদের অসহায়ত্বের সুযোগ খুঁজে তাদের বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতন করে। প্রতিবন্ধী নারী ও তার পরিবার লোকলজ্জার কারণে সমাজে তা বলতে সাহস পায় না। আবার যারা বিচারের আশায় মামলা-মোকদ্দমা করে তারা বিচার তো পায় না, উল্টো ধিক্কার সহ্য করতে হয়।
সমাজ এখনও প্রতিবন্ধী নারী নির্যাতনের ব্যাপারে সচেতন নয়। অন্যদিকে প্রতিবন্ধী নারীরা শারীরিকভাবে অন্য নারীদের চেয়ে দুর্বল। দুর্বলতার সুযোগে অনেক বখাটে ও মানুষ নামের নরপশু যৌন নির্যাতন চালায়। এতে একদিকে যেমন মারাত্মক ভাইরাস এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, অন্যদিকে গর্ভবতী হয়ে থাকে। মাস চারেক আগে সাতক্ষীরা জেলায় রহিমা (ছদ্মনাম) নামে এক শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক যুবক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবাধ মেলামেশা করে। এতে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। কিন্তু দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়াও বেশ কয়েক মাস আগে খাগড়াছড়িতে এক আদিবাসী শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠকর্মী কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষিত হয়েছিল। আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী নারীরা নির্যাতনের পর আদালতে মামলা দায়ের করেও অনেক সময় বিপাকে পড়েন। বাংলাদেশে বছরে কতজন প্রতিবন্ধী নারী বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয় তার পরিসংখ্যান নেই। তবে আগের তুলনায় এখন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অনেক পরিবার তাদের প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ প্রতিবন্ধী নারীরা এক সময় ঘর থেকে বের হতে না পারলেও এখন সেই ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে এখন রাস্তাঘাটে চোখে পড়ে প্রতিবন্ধী নারীরা হুইল চেয়ারে বা ক্র্যাচে ভর করে চলাচল করছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীরা সাদাছড়ি হাতে নিয়ে একা চলাফেরা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে অনেক প্রতিবন্ধী নারী। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও কাজ করছে প্রতিবন্ধী নারীরা, যা দেখলে আমাদের ভালো লাগার কথা।
প্রতিবন্ধী নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নির্যাতনের বিচার ২০০৯ সালেও মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। কারণ আদালতে মামলার প্রমাণাদি ও নথিপত্র উপস্থাপন করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা গ্রহণ করা হয়নি। আর যেসব মামলা আদালতে বিচারাধীন, তা তদন্ত ও সাক্ষীর অভাবে বিচারকার্য দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। ফলে অনেকে নির্যাতনের শিকার হলেও মামলা করলে ঝামেলা পোহাতে হবে বলে মামলা করতে কুণ্ঠাবোধ করে। বাংলাদেশ সরকার নির্যাতিত নারী ও কন্যাশিশুর সহায়তার জন্য একটি মহিলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছে। এ কেন্দ্রে নির্যাতিত নারীদের আশ্রয়, বিনা খরচে আইনগত পরামর্শ ও মামলা পরিচালনার জন্য সহায়তা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীলতার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশের ১০ জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত স্থাপিত হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী সংগঠন এতে কাজ করছে। তারপরও অন্য নারীদের মতো প্রতিবন্ধী নারী নির্যাতনের সংখ্যা কমেনি। প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধে সমাজে সচেতনতার সঙ্গে সরকারি কঠোর আইন প্রণয়ন করা জরুরি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেবে_ এটাই প্রত্যাশা।
দক্ষিণখান, উত্তরা, ঢাকা
প্রতিবন্ধী নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নির্যাতনের বিচার ২০০৯ সালেও মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। কারণ আদালতে মামলার প্রমাণাদি ও নথিপত্র উপস্থাপন করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা গ্রহণ করা হয়নি। আর যেসব মামলা আদালতে বিচারাধীন, তা তদন্ত ও সাক্ষীর অভাবে বিচারকার্য দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। ফলে অনেকে নির্যাতনের শিকার হলেও মামলা করলে ঝামেলা পোহাতে হবে বলে মামলা করতে কুণ্ঠাবোধ করে। বাংলাদেশ সরকার নির্যাতিত নারী ও কন্যাশিশুর সহায়তার জন্য একটি মহিলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছে। এ কেন্দ্রে নির্যাতিত নারীদের আশ্রয়, বিনা খরচে আইনগত পরামর্শ ও মামলা পরিচালনার জন্য সহায়তা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীলতার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশের ১০ জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত স্থাপিত হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী সংগঠন এতে কাজ করছে। তারপরও অন্য নারীদের মতো প্রতিবন্ধী নারী নির্যাতনের সংখ্যা কমেনি। প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধে সমাজে সচেতনতার সঙ্গে সরকারি কঠোর আইন প্রণয়ন করা জরুরি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেবে_ এটাই প্রত্যাশা।
দক্ষিণখান, উত্তরা, ঢাকা
No comments