আপনিও আছেন গুগলের নজরদারিতে!
কোথায়
নেই গুগল! গুগল কিংবা গুগলের কোনো পণ্য বা সেবা ছাড়া একটি দিন পার করার
কথা কল্পনা করাও দিন দিন প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। গুগল ম্যাপ থেকে শুরু
করে ইউটিউব—উঠতে–বসতে আমরা গুগলের কোনো না কোনো কিছু ব্যবহার করছিই।
গুগল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা প্রভাব ফেলছে, তার প্রমাণ মিলবে পরিসংখ্যানেও। প্রতি মাসে ১০০ কোটির বেশি মানুষ গুগলে কিছু না কিছু সার্চ করছেন, মাসে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করছেন, একই সময়ে প্রায় ১২০ কোটি লোক জিমেইল ব্যবহার করছেন। বিশাল এই ব্যবহারকারীর সংখ্যাই জানান দিচ্ছে, মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা দিন দিন সহজ থেকে সহজতর হয়ে পড়ছে গুগলের জন্য। কিন্তু যাঁরা গুগল বা গুগলের পণ্য ব্যবহার করছেন, গুগল কি শুধু তাঁদের তথ্যই সংগ্রহ করছে? নাকি যাঁরা গুগল ব্যবহারকারী নন, তাঁদের তথ্যও জমা হয়ে যাচ্ছে গুগলের তথ্যভান্ডারে? ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডগলাস সি স্মিডট চেষ্টা করেছেন এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার।
এ প্রশ্নের উত্তর পেতে প্রথমে জানতে হবে গুগল কীভাবে তাদের ব্যবহারকারী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। যখন একজন ব্যবহারকারী জিমেইল, ইউটিউব কিংবা গুগলের অন্য যেকোনো সেবায় তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলছেন বা লগ ইন করছেন, তখনই গুগলের তথ্যভান্ডারে তাঁর ব্যক্তিগত সব তথ্য জমা হয়ে যাচ্ছে। এটি হলো গুগলের তথ্য সংগ্রহের সক্রিয় পদ্ধতি।
তবে গুগলের তথ্য সংগ্রহ করার আরও একটি ‘পরোক্ষ’ পদ্ধতি রয়েছে, যেটি কিনা অনেক ব্যবহারকারীই জানেন না। মোবাইলের ব্যাকগ্রাউন্ডে সচল থাকা অ্যাপস কিংবা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে গুগল। এই দুই উপায়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অনলাইনের তো বটেই, মানুষের বাস্তব জীবনের তথ্যও চলে যাচ্ছে গুগলের হাতে। আর জমা করা এসব তথ্য দিয়ে প্রত্যেকের জন্য আলাদা প্রোফাইলও বানিয়ে ফেলছে তারা।
গবেষণা বলছে, গুগল সারা দিনে যত তথ্য সংগ্রহ করে, তার দুই–তৃতীয়াংশই করে এই ‘পরোক্ষ’ উপায়ে। ধরুন, আপনি গুগল বা গুগলের কোনো পণ্য ব্যবহার করছেন না, কিন্তু এরপরও গুগল আপনার ব্যক্তিগত তথ্য খুব সহজেই তাদের ভান্ডারে জমা করে ফেলতে পারে। কীভাবে করে, সেটিই গবেষণা করে দেখাতে চেয়েছেন স্মিডট।
ধরুন, আপনি কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে কিংবা অনলাইনে কোনো সংবাদের লিংকে ঢুকে সংবাদটি পড়তে পড়তে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হলেন। আপনার ফোনে যদি কোনো কারণে জিপিএস প্রযুক্তিটি চালু করা থাকে, তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন, এই অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দের তথ্য জমা হয়ে গেছে গুগলের তথ্যভান্ডারে। জিপিএস ব্যবহার করে গুগল ম্যাপ আপনার লোকেশন জেনে নেবে এবং আপনার ফোনের আইপি অ্যাড্রেসটিও তাদের জানা হয়ে যাবে।
এরপর আপনি যে সংবাদটিতে ক্লিক করলেন, সেটিকে ভিত্তি করে গুগল আপনার পছন্দ কিংবা রুচি সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা দাঁড় করাবে। এরপর থেকে আপনি যখনই অনলাইনে সংবাদ খোঁজার জন্য ঢুকবেন, দেখবেন আশ্চর্যজনকভাবে সেই ধরনের সংবাদগুলো ঘুরেফিরে আপনার সামনে আসছে। এটি সম্ভব হয়, কারণ আপনার অজান্তেই গুগল আপনার পছন্দ–অপছন্দ মিলিয়ে আপনার একটি প্রোফাইল তৈরি করে ফেলেছে।
শুধু তা–ই নয়, আপনি যে গানটি শুনলেন, সেটিকে ভিত্তি করেও গুগল আপনার প্রোফাইল সমৃদ্ধ করবে। এরপর থেকে আপনি যখনই কোনো গান শুনতে যাবেন, দেখবেন আপনার সামনে সেই একই ধরনের গান কিংবা সেই গানসংক্রান্ত বিজ্ঞাপন এসে হাজির হচ্ছে। এসবই সম্ভব হচ্ছে গুগল আপনার তথ্য সংগ্রহ করে রাখছে বলে।
এবার ধরুন, আপনি অফিসে বসে ভাবছেন দুপুরে কী খাবার খাওয়া যায়। কষ্ট করে বাইরে না গিয়ে আপনি মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে কোনো একটি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার অর্ডার করলেন। ব্যস, গুগল আবারও আপনার সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে ফেলল। কোন দোকান থেকে খাবার কিনলেন, কোন ধরনের খাবার কিনলেন—সবকিছুই রেকর্ড করে রাখবে গুগল। এরপর থেকে আপনি যখনই অনলাইনে খাবার অর্ডার করতে যাবেন, দেখবেন ওই একই ধরনের খাবারের সাজেশনই আসছে আপনার সামনে। আর যদি কোনো কারণে খাবারের দামটা গুগল পে সার্ভিস দিয়ে পরিশোধ করে থাকেন, তাহলে আপনার ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড–সংক্রান্ত তথ্যও জমা হয়ে থাকবে গুগলের কাছে।
এরপর ধরুন, অফিস থেকে ফেরার পথে আপনি মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং কোম্পানি থেকে কোনো গাড়ি ডেকে আনলেন এবং গাড়িতে বসে ইউটিউবে ফুটবল ম্যাচের ভিডিও দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরলেন। এতে করে আরও একবার আপনি গুগলের কাছে নিজের তথ্য জানান দিয়ে দিলেন। এরপর থেকে যখনই আপনি ভিডিও দেখতে ঢুকবেন, দেখবেন আপনার সামনে বারবার ফুটবল ম্যাচের নানা রকম ভিডিও চলে আসছে।
গবেষক ডগলাস সি স্মিডট এ কারণেই বলছেন, ‘গুগলের তথ্য সংগ্রহের বেশির ভাগটাই ঘটে যখন একজন ব্যবহারকারী সরাসরি গুগলের কোনো পণ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকেন।’
গুগলের তথ্য সংগ্রহের অন্যতম বড় মাধ্যম হলো গুগল ক্রোম। আজকাল অনেকেই নিজেদের স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপে গুগল ক্রোম ব্যবহার করছেন। পরিসংখ্যান বলছে, মাসে ২০০ কোটির বেশি মানুষ গুগল ক্রোম ব্যবহার করে। এই গুগল ক্রোম অনলাইনে ব্যবহারকারীদের গতিবিধির সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ করে এবং সেগুলো গুগলের তথ্যভান্ডারে জমা করে। এমনকি যেসব ফোনে গুগল অপারেটিং সিস্টেম নেই (যেমন অ্যাপলের আইওএস), সেগুলোতেও নিজস্ব উপায়ে তথ্য সংগ্রহ করে নেয় গুগল।
অর্থাৎ আপনি গুগল ব্যবহার করুন বা না করুন, গবেষণা বলছে, গুগলের হাত থেকে আপনার নিস্তার নেই!
গুগল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা প্রভাব ফেলছে, তার প্রমাণ মিলবে পরিসংখ্যানেও। প্রতি মাসে ১০০ কোটির বেশি মানুষ গুগলে কিছু না কিছু সার্চ করছেন, মাসে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করছেন, একই সময়ে প্রায় ১২০ কোটি লোক জিমেইল ব্যবহার করছেন। বিশাল এই ব্যবহারকারীর সংখ্যাই জানান দিচ্ছে, মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা দিন দিন সহজ থেকে সহজতর হয়ে পড়ছে গুগলের জন্য। কিন্তু যাঁরা গুগল বা গুগলের পণ্য ব্যবহার করছেন, গুগল কি শুধু তাঁদের তথ্যই সংগ্রহ করছে? নাকি যাঁরা গুগল ব্যবহারকারী নন, তাঁদের তথ্যও জমা হয়ে যাচ্ছে গুগলের তথ্যভান্ডারে? ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডগলাস সি স্মিডট চেষ্টা করেছেন এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার।
এ প্রশ্নের উত্তর পেতে প্রথমে জানতে হবে গুগল কীভাবে তাদের ব্যবহারকারী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। যখন একজন ব্যবহারকারী জিমেইল, ইউটিউব কিংবা গুগলের অন্য যেকোনো সেবায় তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলছেন বা লগ ইন করছেন, তখনই গুগলের তথ্যভান্ডারে তাঁর ব্যক্তিগত সব তথ্য জমা হয়ে যাচ্ছে। এটি হলো গুগলের তথ্য সংগ্রহের সক্রিয় পদ্ধতি।
তবে গুগলের তথ্য সংগ্রহ করার আরও একটি ‘পরোক্ষ’ পদ্ধতি রয়েছে, যেটি কিনা অনেক ব্যবহারকারীই জানেন না। মোবাইলের ব্যাকগ্রাউন্ডে সচল থাকা অ্যাপস কিংবা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে গুগল। এই দুই উপায়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অনলাইনের তো বটেই, মানুষের বাস্তব জীবনের তথ্যও চলে যাচ্ছে গুগলের হাতে। আর জমা করা এসব তথ্য দিয়ে প্রত্যেকের জন্য আলাদা প্রোফাইলও বানিয়ে ফেলছে তারা।
গবেষণা বলছে, গুগল সারা দিনে যত তথ্য সংগ্রহ করে, তার দুই–তৃতীয়াংশই করে এই ‘পরোক্ষ’ উপায়ে। ধরুন, আপনি গুগল বা গুগলের কোনো পণ্য ব্যবহার করছেন না, কিন্তু এরপরও গুগল আপনার ব্যক্তিগত তথ্য খুব সহজেই তাদের ভান্ডারে জমা করে ফেলতে পারে। কীভাবে করে, সেটিই গবেষণা করে দেখাতে চেয়েছেন স্মিডট।
ধরুন, আপনি কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে কিংবা অনলাইনে কোনো সংবাদের লিংকে ঢুকে সংবাদটি পড়তে পড়তে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হলেন। আপনার ফোনে যদি কোনো কারণে জিপিএস প্রযুক্তিটি চালু করা থাকে, তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন, এই অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দের তথ্য জমা হয়ে গেছে গুগলের তথ্যভান্ডারে। জিপিএস ব্যবহার করে গুগল ম্যাপ আপনার লোকেশন জেনে নেবে এবং আপনার ফোনের আইপি অ্যাড্রেসটিও তাদের জানা হয়ে যাবে।
এরপর আপনি যে সংবাদটিতে ক্লিক করলেন, সেটিকে ভিত্তি করে গুগল আপনার পছন্দ কিংবা রুচি সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা দাঁড় করাবে। এরপর থেকে আপনি যখনই অনলাইনে সংবাদ খোঁজার জন্য ঢুকবেন, দেখবেন আশ্চর্যজনকভাবে সেই ধরনের সংবাদগুলো ঘুরেফিরে আপনার সামনে আসছে। এটি সম্ভব হয়, কারণ আপনার অজান্তেই গুগল আপনার পছন্দ–অপছন্দ মিলিয়ে আপনার একটি প্রোফাইল তৈরি করে ফেলেছে।
শুধু তা–ই নয়, আপনি যে গানটি শুনলেন, সেটিকে ভিত্তি করেও গুগল আপনার প্রোফাইল সমৃদ্ধ করবে। এরপর থেকে আপনি যখনই কোনো গান শুনতে যাবেন, দেখবেন আপনার সামনে সেই একই ধরনের গান কিংবা সেই গানসংক্রান্ত বিজ্ঞাপন এসে হাজির হচ্ছে। এসবই সম্ভব হচ্ছে গুগল আপনার তথ্য সংগ্রহ করে রাখছে বলে।
এবার ধরুন, আপনি অফিসে বসে ভাবছেন দুপুরে কী খাবার খাওয়া যায়। কষ্ট করে বাইরে না গিয়ে আপনি মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে কোনো একটি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার অর্ডার করলেন। ব্যস, গুগল আবারও আপনার সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে ফেলল। কোন দোকান থেকে খাবার কিনলেন, কোন ধরনের খাবার কিনলেন—সবকিছুই রেকর্ড করে রাখবে গুগল। এরপর থেকে আপনি যখনই অনলাইনে খাবার অর্ডার করতে যাবেন, দেখবেন ওই একই ধরনের খাবারের সাজেশনই আসছে আপনার সামনে। আর যদি কোনো কারণে খাবারের দামটা গুগল পে সার্ভিস দিয়ে পরিশোধ করে থাকেন, তাহলে আপনার ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড–সংক্রান্ত তথ্যও জমা হয়ে থাকবে গুগলের কাছে।
এরপর ধরুন, অফিস থেকে ফেরার পথে আপনি মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং কোম্পানি থেকে কোনো গাড়ি ডেকে আনলেন এবং গাড়িতে বসে ইউটিউবে ফুটবল ম্যাচের ভিডিও দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরলেন। এতে করে আরও একবার আপনি গুগলের কাছে নিজের তথ্য জানান দিয়ে দিলেন। এরপর থেকে যখনই আপনি ভিডিও দেখতে ঢুকবেন, দেখবেন আপনার সামনে বারবার ফুটবল ম্যাচের নানা রকম ভিডিও চলে আসছে।
গবেষক ডগলাস সি স্মিডট এ কারণেই বলছেন, ‘গুগলের তথ্য সংগ্রহের বেশির ভাগটাই ঘটে যখন একজন ব্যবহারকারী সরাসরি গুগলের কোনো পণ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকেন।’
গুগলের তথ্য সংগ্রহের অন্যতম বড় মাধ্যম হলো গুগল ক্রোম। আজকাল অনেকেই নিজেদের স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপে গুগল ক্রোম ব্যবহার করছেন। পরিসংখ্যান বলছে, মাসে ২০০ কোটির বেশি মানুষ গুগল ক্রোম ব্যবহার করে। এই গুগল ক্রোম অনলাইনে ব্যবহারকারীদের গতিবিধির সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ করে এবং সেগুলো গুগলের তথ্যভান্ডারে জমা করে। এমনকি যেসব ফোনে গুগল অপারেটিং সিস্টেম নেই (যেমন অ্যাপলের আইওএস), সেগুলোতেও নিজস্ব উপায়ে তথ্য সংগ্রহ করে নেয় গুগল।
অর্থাৎ আপনি গুগল ব্যবহার করুন বা না করুন, গবেষণা বলছে, গুগলের হাত থেকে আপনার নিস্তার নেই!
No comments