চামড়া রপ্তানি কমেছে
দেশের
রপ্তানি আয়ে পিছিয়ে পড়ছে চামড়া ও চামড়াজাত খাত। খাতটি থেকে আয় কমছে
অব্যাহতভাবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত হলেও প্রবৃদ্ধি ও
লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে মাসের পর মাস। চলতি অর্থবছরের শেষ ছয়
মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। বিপুল চাহিদা ও নিজস্ব কাঁচামাল
থাকা সত্ত্বেও পণ্যের জোগান দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এ জন্য তারা দায়ী
করছেন সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও অবকাঠামোগত সমস্যাকে। বাংলাদেশের চামড়া
রপ্তানি আয়ের ওপর চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ ও ট্যানারি শিল্প নগরীর
স্থানান্তরকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্বে চামড়াশিল্পের বাণিজ্য পরিমাণ
একশ বিলিয়ন ডলার। এর মাত্র এক ভাগ যোগান দেয় বাংলাদেশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই বছর সাভারে চামড়া কারখানা সরানোর বিষয়ে নানা জটিলতায় ক্রেতা কমেছে। আর আমলান্ত্রিক জটিলতা ও সমন্বয়ের অভাবে চামড়া শিল্প পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়া ট্যানারিশিল্প সাভারে স্থানান্তর, সেখানে যথাযথ অবকাঠামো গড়ে না ওঠা, কাঁচামাল সংগ্রহে জটিলতা ও নতুন বিনিয়োগ না হওয়াসহ নানা কারণে বাজার হারাচ্ছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এ অবস্থায় ২০২১ সালের মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য শুধু কল্পনাতেই থেকে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৫৩ কোটি ২৩ লাখ ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই খাতের রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৬২ কোটি ডলার। অর্থাৎ রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ট্যানারি এসোসিয়েশনের মতে, সাভারে পরিকল্পিত ট্যানারিশিল্প গড়ে না ওঠার আগেই ভুল তথ্য দিয়ে ট্যানারি মালিকদের সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এখানে যেসব ট্যানারি মালিক বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ট্যানারি ব্যবসার এই সংকট নিরসনে সরকারি সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে ট্যানারি এসোসিয়েশন।
ইপিবি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১২ শতাংশ কম। এ অর্থবছর ১৩৮ কোটি ডলার রপ্তানি লক্ষ্য ধরা হলেও তা অর্জন হয়নি। নতুন অর্থবছরে এসেও এক অবস্থা বিরাজ করছে এখানে। ২০১৮ সালের শেষ ছয় মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এছাড়া চামড়া রপ্তানিতে ২৪ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২৩.৭১ শতাংশ কমে রপ্তানি হয়েছে ১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার; যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছিল ২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। চামড়াজাত পণ্য থেকে ৫৪ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার; যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছিল ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর জুতা ও অন্যান্য পণ্যে গত অর্থবছরে ৬০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৫৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাত থেকে আয় হয় ৫৩ কোটি ডলার। এ ছাড়া ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১১৩ কোটি ডলারের চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১১৬ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ডলার।
জানা গেছে, হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরায় ট্যানারি শিল্প স্থানান্তরিত হয়েছে বছর খানেক আগে। নতুন স্থানে প্লট পাওয়া ১৫৫টি ট্যানারি কারখানার মধ্যে মাত্র ৪০টির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি কারখানাগুলোর অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি।
রপ্তানি আদেশ কমার অন্যতম কারণ হিসেবে ট্যানারি মালিকরা বলছেন, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এমন অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, সমপ্রতি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের চামড়া খাতে। কারণ বাংলাদেশ থেকে চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতো চীন। সেই চামড়া দিয়ে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত মানের পণ্য তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করতো তারা। এক্ষেত্রে চীনের জন্য একটি বড় বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু চীনের চামড়াজাত পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে চীনের চাহিদা কমার পাশাপাশি কমেছে বাংলাদেশের রপ্তানি।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর হওয়ার ফলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি ও যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় কাঁচা চামড়া সংগ্রহসহ নানা বিষয়ে বিপাকে পড়তে হয়। সংস্কারের জন্য ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক ঋণও পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, পাদুকা উৎপাদনে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে সপ্তম হয়েছে। সুযোগ রয়েছে আরও এগিয়ে যাওয়ার। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও পাদুকা রপ্তানিতে আয় বাড়ছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.৫২ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই খাতের রপ্তানি আয় ৮.৫২ শতাংশ বেড়েছে।
লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহিন বলেন, সম্ভাবনার বিচারে পাদুকাশিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু হচ্ছে না। এর মানে হলো পরিকল্পনার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই বছর সাভারে চামড়া কারখানা সরানোর বিষয়ে নানা জটিলতায় ক্রেতা কমেছে। আর আমলান্ত্রিক জটিলতা ও সমন্বয়ের অভাবে চামড়া শিল্প পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়া ট্যানারিশিল্প সাভারে স্থানান্তর, সেখানে যথাযথ অবকাঠামো গড়ে না ওঠা, কাঁচামাল সংগ্রহে জটিলতা ও নতুন বিনিয়োগ না হওয়াসহ নানা কারণে বাজার হারাচ্ছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এ অবস্থায় ২০২১ সালের মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য শুধু কল্পনাতেই থেকে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৫৩ কোটি ২৩ লাখ ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই খাতের রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৬২ কোটি ডলার। অর্থাৎ রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ট্যানারি এসোসিয়েশনের মতে, সাভারে পরিকল্পিত ট্যানারিশিল্প গড়ে না ওঠার আগেই ভুল তথ্য দিয়ে ট্যানারি মালিকদের সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এখানে যেসব ট্যানারি মালিক বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ট্যানারি ব্যবসার এই সংকট নিরসনে সরকারি সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে ট্যানারি এসোসিয়েশন।
ইপিবি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১২ শতাংশ কম। এ অর্থবছর ১৩৮ কোটি ডলার রপ্তানি লক্ষ্য ধরা হলেও তা অর্জন হয়নি। নতুন অর্থবছরে এসেও এক অবস্থা বিরাজ করছে এখানে। ২০১৮ সালের শেষ ছয় মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এছাড়া চামড়া রপ্তানিতে ২৪ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২৩.৭১ শতাংশ কমে রপ্তানি হয়েছে ১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার; যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছিল ২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। চামড়াজাত পণ্য থেকে ৫৪ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার; যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছিল ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর জুতা ও অন্যান্য পণ্যে গত অর্থবছরে ৬০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৫৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাত থেকে আয় হয় ৫৩ কোটি ডলার। এ ছাড়া ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১১৩ কোটি ডলারের চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১১৬ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ডলার।
জানা গেছে, হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরায় ট্যানারি শিল্প স্থানান্তরিত হয়েছে বছর খানেক আগে। নতুন স্থানে প্লট পাওয়া ১৫৫টি ট্যানারি কারখানার মধ্যে মাত্র ৪০টির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি কারখানাগুলোর অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি।
রপ্তানি আদেশ কমার অন্যতম কারণ হিসেবে ট্যানারি মালিকরা বলছেন, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এমন অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, সমপ্রতি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের চামড়া খাতে। কারণ বাংলাদেশ থেকে চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতো চীন। সেই চামড়া দিয়ে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত মানের পণ্য তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করতো তারা। এক্ষেত্রে চীনের জন্য একটি বড় বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু চীনের চামড়াজাত পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে চীনের চাহিদা কমার পাশাপাশি কমেছে বাংলাদেশের রপ্তানি।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর হওয়ার ফলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি ও যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় কাঁচা চামড়া সংগ্রহসহ নানা বিষয়ে বিপাকে পড়তে হয়। সংস্কারের জন্য ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক ঋণও পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, পাদুকা উৎপাদনে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে সপ্তম হয়েছে। সুযোগ রয়েছে আরও এগিয়ে যাওয়ার। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও পাদুকা রপ্তানিতে আয় বাড়ছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.৫২ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই খাতের রপ্তানি আয় ৮.৫২ শতাংশ বেড়েছে।
লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহিন বলেন, সম্ভাবনার বিচারে পাদুকাশিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু হচ্ছে না। এর মানে হলো পরিকল্পনার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
No comments