৮ গুমের ঘটনা তদন্তে সরকারকে জাতিসংঘের চিঠি
জাতিসংঘের
বলপূর্বক গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে র্যাপিড অ্যাকশন
ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কর্তৃক অপহৃত ৮ জনের ব্যাপারে যে অভিযোগ রয়েছে, তা
তদন্তে বাংলাদেশ সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এজন্য জেনেভায়
অবস্থিত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের কাছে একটি চিঠিও পাঠানো হয়। ঘটনার প্রায়
দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পর এ অনুরোধ জানানো হয়। ওই ৮ জনের অবস্থান আজও
পর্যন্ত জানা যায়নি। গত ৩রা জুলাই চিঠিটি পাঠানো হয়। জেনেভায় কর্মরত
জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপের এক কর্মকর্তা জানান, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী
জাতিসংঘ মিশনকে সম্বোধন করে অনুরোধটি পাঠানো হয়। সেখান থেকে ঢাকায়
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠিটি পাঠানোর কথা। আজ নিউ এইজ পত্রিকায় ডেভিড
বার্গম্যান ও মুক্তাদির রশিদের লেখা ‘ইউএন কলস ফর গভর্নমেন্ট ইনভেস্টিগেশন
অব ৮ ডিজাপিয়ার্যান্সেস’ প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
ওই ৮ জন ছিলেন অপহৃত ১৯ জনের মধ্যে। তাদের প্রায় সবাই বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বা এর অঙ্গসংগঠনসমূহের সদস্য। ২০১৩ সালের ২৮শে নভেম্বর থেকে ১১ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও এর আশপাশ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবার ও নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ৮ জনের মধ্যে ৬ জন আসাদুজ্জামান রানা, জাহিদুল ইসলাম তানভীর, মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আল-আমিন, আবদুল কাদের ভূঁইয়া ও শাজেদুল ইসলামকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের বাইরে থেকে র্যাব ২০১৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর রাতে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন অর্থাৎ, ৫ই ডিসেম্বর ভোরের দিকে অপর দুই ব্যক্তি মোহাম্মদ কাওসার ও আদনান চৌধুরীকে শাহীনবাগের কাছে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় র্যাব। সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীদেরও দাবি, এ ঘটনায় র্যাব জড়িত।
২০১৫ সালের ৫ই আগস্টে লেখা একটি চিঠি দেখেছে নিউ এইজ কর্তৃপক্ষ। আর্জেন্টিনার আইন বিষয়ক অধ্যাপক এরিয়েল ডুলিৎজকি ৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, গত মে মাসে বিশেষজ্ঞরা ‘মামলাগুলো (৮টি) বিবেচনায় নিয়েছেন এবং সেগুলো ২০১৫ সালের ৩রা জুলাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন।’ ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘মামলাসমূহ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ আশা প্রকাশ করেছিল যে, পূর্বোল্লিখিত ব্যক্তিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে, তাদের বর্তমান অবস্থান ও অধিকার সংরক্ষণে যথাযথ তদন্ত পরিচালিত হবে।’
এতে প্রতীয়মান যে, জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপ ২ সপ্তাহে গুম হওয়া বাকি ১১ জনের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এখনও কোন তদন্ত চায়নি। তীব্র রাজনৈতিক বিক্ষোভ-আন্দোলন চলাকালীন গুমের ঘটনাগুলো ঘটে। বিরোধী বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী জোট নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে তখন সরকারকে বাধ্য করতে চাপ প্রয়োগ করছিল। যানবাহনে পেট্রল বোমায় দগ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর জন্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনানা হচ্ছিল। এদিকে গুমের ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর সরকার ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে। সব বিরোধী দল ওই নির্বাচন বর্জন করে।
চিঠির বক্তব্য অনুযায়ী, জেনেভায় আগামী ১৪ থেকে ১৮ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ আলোচনায় বসবে। তখন ৮ জনের গুম এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া যে কোন তথ্য পুনরায় বিবেচনা করবে সংগঠনটি। ওয়ার্কিং গ্রুপের চিঠিতে উল্লেখিত অপহৃত ৮ জনের মধ্যে একজন শাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম বলছিলেন, র্যাব আমার ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং তিনি আজও নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি বলছিলেন, আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিতে বা তার ভাগ্যে কি ঘটেছে তা আমাকে জানানোর জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারের ওপর জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপেরযে কোন ধরনের চাপ প্রয়োগকে আমি স্বাগত জানাই। তিনি আরও বলেন, এতো সময় পার হওয়ার পরও যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য পুলিশ কোন মামলা নথিভুক্ত করেনি।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ১৯ গুমের ঘটনায় জড়িত বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ গুমের ঘটনায় সম্পৃক্ততার কোন দায় অস্বীকার করেছে। পাল্টা-অভিযোগ এনে তারা বলেছেন, অপরাধের দায়ে বিচার এড়াতেই তারা পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারেন। ওই চিঠিটির কি হলো এবং জাতিসংঘের অনুরোধের প্রেক্ষিতে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা, তা জানার প্রয়াসগুলো সফল হয়নি। ইংরেজি দৈনিকটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা চিঠিটির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। মন্ত্রণালয়ের এক্সটার্নাল পাবলিসিটি উইংয়ের মহাপরিচালক এস বদিরুজ্জামান নিউ এইজকে বলেছেন, জাতিসংঘের কাছ থেকে পাঠানো চিঠির ব্যাপারে আমার কোন ধারণা নেই এবং আমি জানি না কার সঙ্গে আপনাদের কথা বলা উচিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাসচিব মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন যোগাযোগের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। গত বছরের শেষদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পত্রিকাটিকে বলেছিলেন, গুমের ঘটনাসমূহ খতিয়ে দেখবেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, এ ব্যাপারে ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপের কাছ থেকে কোন অনুরোধ তার কানে আসেনি। তিনি বলেছিলেন, আমি প্রথমবারের মতো এটা শুনছি।
ওই ৮ জন ছিলেন অপহৃত ১৯ জনের মধ্যে। তাদের প্রায় সবাই বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বা এর অঙ্গসংগঠনসমূহের সদস্য। ২০১৩ সালের ২৮শে নভেম্বর থেকে ১১ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও এর আশপাশ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবার ও নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ৮ জনের মধ্যে ৬ জন আসাদুজ্জামান রানা, জাহিদুল ইসলাম তানভীর, মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আল-আমিন, আবদুল কাদের ভূঁইয়া ও শাজেদুল ইসলামকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের বাইরে থেকে র্যাব ২০১৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর রাতে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন অর্থাৎ, ৫ই ডিসেম্বর ভোরের দিকে অপর দুই ব্যক্তি মোহাম্মদ কাওসার ও আদনান চৌধুরীকে শাহীনবাগের কাছে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় র্যাব। সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীদেরও দাবি, এ ঘটনায় র্যাব জড়িত।
২০১৫ সালের ৫ই আগস্টে লেখা একটি চিঠি দেখেছে নিউ এইজ কর্তৃপক্ষ। আর্জেন্টিনার আইন বিষয়ক অধ্যাপক এরিয়েল ডুলিৎজকি ৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, গত মে মাসে বিশেষজ্ঞরা ‘মামলাগুলো (৮টি) বিবেচনায় নিয়েছেন এবং সেগুলো ২০১৫ সালের ৩রা জুলাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন।’ ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘মামলাসমূহ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ আশা প্রকাশ করেছিল যে, পূর্বোল্লিখিত ব্যক্তিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে, তাদের বর্তমান অবস্থান ও অধিকার সংরক্ষণে যথাযথ তদন্ত পরিচালিত হবে।’
এতে প্রতীয়মান যে, জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপ ২ সপ্তাহে গুম হওয়া বাকি ১১ জনের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এখনও কোন তদন্ত চায়নি। তীব্র রাজনৈতিক বিক্ষোভ-আন্দোলন চলাকালীন গুমের ঘটনাগুলো ঘটে। বিরোধী বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী জোট নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে তখন সরকারকে বাধ্য করতে চাপ প্রয়োগ করছিল। যানবাহনে পেট্রল বোমায় দগ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর জন্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনানা হচ্ছিল। এদিকে গুমের ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর সরকার ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে। সব বিরোধী দল ওই নির্বাচন বর্জন করে।
চিঠির বক্তব্য অনুযায়ী, জেনেভায় আগামী ১৪ থেকে ১৮ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ আলোচনায় বসবে। তখন ৮ জনের গুম এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া যে কোন তথ্য পুনরায় বিবেচনা করবে সংগঠনটি। ওয়ার্কিং গ্রুপের চিঠিতে উল্লেখিত অপহৃত ৮ জনের মধ্যে একজন শাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম বলছিলেন, র্যাব আমার ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং তিনি আজও নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি বলছিলেন, আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিতে বা তার ভাগ্যে কি ঘটেছে তা আমাকে জানানোর জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারের ওপর জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপেরযে কোন ধরনের চাপ প্রয়োগকে আমি স্বাগত জানাই। তিনি আরও বলেন, এতো সময় পার হওয়ার পরও যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য পুলিশ কোন মামলা নথিভুক্ত করেনি।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ১৯ গুমের ঘটনায় জড়িত বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ গুমের ঘটনায় সম্পৃক্ততার কোন দায় অস্বীকার করেছে। পাল্টা-অভিযোগ এনে তারা বলেছেন, অপরাধের দায়ে বিচার এড়াতেই তারা পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারেন। ওই চিঠিটির কি হলো এবং জাতিসংঘের অনুরোধের প্রেক্ষিতে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা, তা জানার প্রয়াসগুলো সফল হয়নি। ইংরেজি দৈনিকটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা চিঠিটির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। মন্ত্রণালয়ের এক্সটার্নাল পাবলিসিটি উইংয়ের মহাপরিচালক এস বদিরুজ্জামান নিউ এইজকে বলেছেন, জাতিসংঘের কাছ থেকে পাঠানো চিঠির ব্যাপারে আমার কোন ধারণা নেই এবং আমি জানি না কার সঙ্গে আপনাদের কথা বলা উচিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাসচিব মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন যোগাযোগের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। গত বছরের শেষদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পত্রিকাটিকে বলেছিলেন, গুমের ঘটনাসমূহ খতিয়ে দেখবেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, এ ব্যাপারে ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপের কাছ থেকে কোন অনুরোধ তার কানে আসেনি। তিনি বলেছিলেন, আমি প্রথমবারের মতো এটা শুনছি।
No comments