বাধায় আগাম ভোট গ্রহণ ভন্ডুল
নেতার দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা গতকাল রোববার আগাম ভোটদানে নাগরিকদের বাধা দিয়েছে। তারা রাজধানী ব্যাংককের বেশির ভাগ কেন্দ্রই বন্ধ রাখতে বাধ্য করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী সপ্তাহের নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল থেকে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা। নির্বাচনের দিন বিদেশে থাকাসহ নানা কারণে আগাম ভোট দেবেন ২০ লাখের বেশি নাগরিক। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে এ আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা গতকাল রাজধানী ব্যাংককসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় কয়েকটি প্রদেশের ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে অবস্থান নেয়। তারা নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কেন্দ্রে প্রবেশে নানাভাবে বাধা দেয়। অন্তত ৪৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে আগাম ভোট দেওয়ার বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হাজার হাজার নিবন্ধিত ভোটার ভোট দিতে পারেননি। জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে জড়ো হয়। নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার আশঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা ভোটারদের বড় ধরনের সংঘর্ষের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। কিছুসংখ্যক কেন্দ্রে ভোটারদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বাগিবতণ্ডা হয়।
গতকালের আগাম ভোটদানের বিষয়টিকে ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে কি না, তার একটা পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। উপপ্রধানমন্ত্রী সুরাপোং তোভিচাকশাইকুল বলেন, ‘রাজধানী ব্যাংককের ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টিই বন্ধ করতে হয়েছে।’ নির্বাচন কমিশনের মহাসচিব পুচং নুত্রাওং এ খবর নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর বাইরে দেশটির ৭৬টি প্রদেশের মধ্যে ৬৬টিতে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ইংলাকের ক্ষমতাসীন দল পুয়ে থাই পার্টির শক্ত ঘাঁটি উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো। ইংলাক এখন পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের দাবি মোতাবেক পদত্যাগ বা নির্বাচন পেছানোর বিষয়টি নাকচ করে এসেছেন। তবে দেশটির সাংবিধানিক আদালত সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন আইনগতভাবে পেছানো যেতে পারে বলে সম্প্রতি রায় দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি আগামীকাল মঙ্গলবার নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইংলাকের পদত্যাগ এবং দেশে নতুন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কারের স্বার্থে একটি অনির্বাচিত ‘গণপরিষদ’-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে। এ পর্যন্ত নয়জনের প্রাণহানির পাশাপাশি আহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ। বিক্ষোভের অন্যতম নেতাকে হত্যা: সরকারবিরোধী বিক্ষোভের একজন নেতাকে গতকাল ব্যাংককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। বিক্ষোভকারীদের একজন মুখপাত্র এ কথা জানিয়েছেন। সুথিন থারাথিন নামের ওই নেতা ঘটনার সময় একটি পিকআপ ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাঁকে পেছন থেকে মাথায় গুলি করা হয়। এএফপি ও রয়টার্স।
No comments