সমঝোতার ভিত্তিতে টেন্ডার ভাগাভাগির মতো by হোসেন জিল্লুর রহমান
আগামী ৫ জানুয়ারি যে সাধারণ নির্বাচনের জন্য দিনক্ষণ নির্ধারিত আছে, সেই নির্বাচন ঘিরে প্রহসনের চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এটা অনেকটা সমঝোতার ভিত্তিতে একাধিক ঠিকাদারের মধ্যে টেন্ডার ভাগাভাগির মতো হয়ে গেছে।
এ ধরনের নির্বাচন সরকারের বৈধতাকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। দেশে রাজনৈতিক অঙ্ক আরও ঘনীভূত হবে। বর্তমান সরকার এখনো বৈধতার প্রশ্নে চূড়ান্ত সংকটে পড়েনি। কিন্তু যে ধরনের নির্বাচন হচ্ছে, তাতে এই নির্বাচনের পর সব মহল থেকে সরকারের বৈধতার প্রশ্ন উঠবে।
সেদিক বিবেচনায় আমরা বলতে পারি, বর্তমানে যে সংকট চলছে, তার চেয়ে আরও বড় সংকট ঘনিয়ে আসছে। সেই সংকট কীভাবে নিরসন করা যাবে, সে বিষয়ে বোধ হয় দেশবাসীর প্রস্তুত হওয়া দরকার।
এ ধরনের একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বর্তমান নির্বাচন কমিশনও প্রশ্নবিদ্ধ হলো। তাদের অধীনে ভবিষ্যতে আর কোনো নির্বাচন দেশবাসী মানবে কি না, সে প্রশ্ন এখন বড় হয়েই দেখ দিয়েছে।
আমাদের দেশে আশির দশকে অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনামলে দেখা গেছে ভোটারবিহীন নির্বাচন। অর্থাৎ নির্বাচন হবে, কিন্তু তাতে ভোটারদের প্রয়োজন নেই। এখন আবার আশির দশকের সেই বাস্তবতা ফিরে এসেছে। এবার যেটা হচ্ছে, সেখানেও ভোটারদের প্রয়োজন থাকছে না। বরং নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি এবার আরও একধাপ অনিয়মের দিকে এগিয়েছে, যেখানে কার্যত প্রার্থী থাকাও দরকার হচ্ছে না।
এবারের নির্বাচনে কে কোথায় প্রার্থী থাকবেন, তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতবেন, নাকি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে আসবেন—এসবই নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের নামে এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে!
-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
No comments