দিদি ভার্সাস দিদি by আশিস্ চক্রবর্তী
কলকাতা থেকে ঢাকায় আসা যে কারও কাছে
সবকিছু পরিচিতই মনে হবে। এখানে এখন হরতাল, রাস্তায় বাস ও গাড়ি পুড়ছে,
বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়, পুলিশের গুলিতে
মৃত্যু হচ্ছে, রাজনৈতিক সংঘাত সীমাহীন এবং রাস্তায় অবরোধ চলছে।
যখন
দিদিদের মধ্যে সংঘাতে কলকাতা কাঁপছে তখন বাংলার আসল দিদি, যিনি সীমান্তের
এপারে রয়েছেন তিনি জ্বলছেন। বাংলাদেশের দুই শীর্ষ নেত্রীর মধ্যে তিক্ততা
থেকে এ জ্বলার সৃষ্টি। অবশ্যই বাংলাদেশে দু’নেত্রীর মধ্যকার দ্বন্দ্ব
দীর্ঘদিনের পুরনো। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার দল আওয়ামী
লীগের সমর্থকরা আপা বলে ডাকেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেত্রী
বেগম খালেদা জিয়া তার ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী। শেখ হাসিনা তার জন্য কখনও কোন
ভালবাসা দেখাননি। খালেদা জিয়াকে তার সমর্থকরা ‘ম্যাডাম’ হিসেবে আখ্যায়িত
করেন। বাংলাদেশের খুব কম লোকই আছেন যারা স্মরণ করতে পারেন- এই দু’নেত্রী
সর্বশেষ কবে একসঙ্গে বসেছিলেন। খুব কম লোকই বলতে পারবেন খালেদার দল ও তার
মিত্ররা কতদিন পার্লামেন্ট বয়কট করছেন। কূটনৈতিক কোরের কিছু সদস্য
দু’নেত্রীকে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই তা কাজে
আসেনি। দেশের দু’নেত্রীর মধ্যে এমন রাজনৈতিক সংলাপ চেষ্টা একেবারে শেষ হয়ে
যাওয়ায় দেশের হাইকোর্ট বরফ গলানোর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন। এতে দেশের অনেক
মানুষই উদ্বিগ্ন। গত সপ্তাহে হাইকোর্ট অপ্রত্যাশিত একটি রুলিং দেন।
দু’নেত্রী কেন আলোচনায় বসবেন না এবং দেশকে যে রাজনৈতিক সঙ্কট গ্রাস করেছে
তা নিয়ে সংলাপের জন্য এক সঙ্গে বসবেন না এ বিষয়ে দু’পক্ষকেই শোকজ করা
হয়েছে। আদালতের এমন রুলিংয়ে কোন পরিবর্তন ঘটাবে এমনটা কেউই বিশ্বাস করেন
না। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে তাদের ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড
ও জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি করেছে শাহবাগের আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধ আদালতের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত যে সহিংসতা
শুরু হয়েছে তাতে দু’পক্ষই কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রয়াত
প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পরে দু’নেত্রীর সাক্ষাৎ ও তাদের
মধ্যে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা ভাঙার জন্য একটি বিরল সুযোগ সৃষ্টি
হয়েছিল। মরহুম জিল্লুর রহমানের মৃতদেহ যখন তার সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাখা
হয়েছিল তখন সেখানে একই সময়ে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া।
তারা একে একই হলে অবস্থান করছিলেন। দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তখন মাত্র কয়েক
ফুট। কিন্তু তারা সেই দূরত্ব বজায়ই রাখলেন নীরবতার মধ্য দিয়ে। এরপরই
বর্ষীয়ান এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মন্তব্য করলেন, যদি আগে উদ্যোগটা হাসিনা
নিতেন এবং কুশল বিনিময় করতেন খালেদার দিকে এগিয়ে যেতেন তাহলে তাতে রাজনৈতিক
দিক দিয়ে শেখ হাসিনা অনেক লাভবান হতেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করেন
হাসিনার এমন একটি উদ্যোগ হতো প্রশ্নের মুখোমুখি। কথোপকথনের এক পর্যায়ে
আওয়ামী লীগের এক পার্লামেন্টারিয়ান বললেন, যার স্বামী শেখ হাসিনার পিতাকে
হত্যা করেছেন তার সঙ্গে কি করে তিনি কুশল বিনিময় করতে পারেন।
এ কথা অনেক পুরনো অভিযোগকে সামনে নিয়ে আসে। তাহলো- শেখ হাসিনার পিতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন খালেদা জিয়ার স্বামী ও সাবেক সেনাপ্রধান কাম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
আলোচনা তো দূরের কথা, দু’নেত্রী এখন একজন আরেকজনকে দেশের বাইরে চলে যেতে বলছেন। ৪২তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনার প্রিয় পাকিস্তানে চলে যান। বাংলাদেশের জনগণকে আর জ্বালাবেন না।
দু’-একদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সতর্ক করেছেন খালেদা। বিএনপির এক র্যালিতে তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনের পরে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে দেয়া হবে না। এই নির্বাচনে খালেদা জিয়া বিজয়ী হওয়ার আশা পোষণ করেন। তিনি আরও বলেন, এমনকি তিনি যদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তাহলে আমরা তাকে ধরে এনে বিচারের সম্মুখীন করবো। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি (খালেদা) আমার পালানো নিয়ে কথা বলেছেন। আমি এখানেই থাকবো। এটা আমার মাতৃভূমি। তবে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে খালেদা জিয়া সেনাবাহিনীকে নীরব না থাকার খোলা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রতিউত্তরে হাসিনা বলেছেন, এটা ১৯৭৫ সাল নয় (ওই বছরে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে তার ঢাকার বাসভবনে হত্যা করে কিছু সেনা কর্মকর্তা)। এটা ২০১৩ সাল। পৃথিবী বদলে গেছে।
হাসিনার মতে, খালেদা জিয়া যে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাতে প্রমাণ হয় যে গণতন্ত্রে তার কোন আস্থা নেই।
দু’পক্ষই বক্তব্যের মাধ্যমে বছর শেষের দিকের নির্বাচনকে সামনে রেখে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেরুকরণ আরও ধারালো করেছে যুদ্ধাপরাধ বিচার ও শাহবাগের আন্দোলন। যে যুব সমাজ শাহবাগের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু শেখ হাসিনা তাদের ওপর ভরসা করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ব্যবসায় প্রশাসনে গ্রাজুয়েট এক ব্যবসায়ী নাজমুল ভুঁইয়া জয় বলেন, শেখ হাসিনা যদি এখন জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এ দলের নেতাদের দমন করতে ব্যর্থ হন তাহলে তিনি কখনও তাদের দমন করতে পারবেন না। শুধু তা-ই নয় তিনি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকেও দমন করতে আর সুযোগ পাবেন না। অন্য ৮ জনের সঙ্গে শাহবাগে অনির্দিষ্টকালের অনশন করছেন নাজমুল ভুঁইয়া জয়। এর মাধ্যমে তারা শেখ হাসিনাকে শক্তি সঞ্চার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি যারা এরই মধ্যে অবসরে গিয়েছেন তাদের দিক থেকে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন খালেদা। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি একই কারণে হরতাল করছে। সহিংসতায় জড়াচ্ছে। এমনকি সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলা হচ্ছে। তার আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো আগামী নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃস্থাপন। শাহবাগের আন্দোলনের পর বাংলাদেশে যে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে তত্ত্বাবধায়কের দাবি ও তা নিয়ে বিএনপির ক্ষোভ এরই মধ্যে পরিষ্কারভাবে পিছনে চলে গিয়েছে।
যেহেতু দু’পক্ষই তাদের অবস্থান শক্ত করেছে, তাই বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের রেহাই পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহ দু’টি কর্মসূচি আছে। এ থেকেই সম্ভবত আগামী সপ্তাহগুলো বা মাসগুলোর গতিবিধি নির্ধারণ হবে। শাহবাগ থেকে ছড়িয়ে পড়া জাগরণ মঞ্চ আগামী ৪ঠা এপ্রিল জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর অফিসমুখী পদযাত্রা করবে। এর দু’দিন পরে সারা দেশ থেকে ‘লংমার্চ’ পালিত হবে। এর আয়োজক একটি ইসলামি গ্রুপ। ওই লংমার্চ ঢাকায় এসে একত্রিত হবে। তারা শাহবাগের ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তি দাবি করছেন। ধানমন্ডির যে বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য খুন হন তা থেকে অনতিদূরে বাসা ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুনের। তিনি বলেন, এ লড়াই দীর্ঘ ও রক্তাক্ত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর তিনি। কিন্তু ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম আন্দোলনের সুপরিচিত মূল আয়োজকদের একজন তিনি। ডজনখানেক সুশীল সমাজের একজন তিনি। তাকে শাহবাগের আন্দোলনের প্রাক্কালে কোন কোন মৌলবাদী মুরতাদ আখ্যায়িত করেছে। তিনি মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়ার মুখে রয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের মতো লোকেরা মৃত্যু হুমকির মুখে বসবাস করার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। বাংলাদেশের এই লড়াই থেকে পালানোর কোন পথ নেই।
এ কথা অনেক পুরনো অভিযোগকে সামনে নিয়ে আসে। তাহলো- শেখ হাসিনার পিতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন খালেদা জিয়ার স্বামী ও সাবেক সেনাপ্রধান কাম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
আলোচনা তো দূরের কথা, দু’নেত্রী এখন একজন আরেকজনকে দেশের বাইরে চলে যেতে বলছেন। ৪২তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনার প্রিয় পাকিস্তানে চলে যান। বাংলাদেশের জনগণকে আর জ্বালাবেন না।
দু’-একদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সতর্ক করেছেন খালেদা। বিএনপির এক র্যালিতে তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনের পরে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে দেয়া হবে না। এই নির্বাচনে খালেদা জিয়া বিজয়ী হওয়ার আশা পোষণ করেন। তিনি আরও বলেন, এমনকি তিনি যদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তাহলে আমরা তাকে ধরে এনে বিচারের সম্মুখীন করবো। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি (খালেদা) আমার পালানো নিয়ে কথা বলেছেন। আমি এখানেই থাকবো। এটা আমার মাতৃভূমি। তবে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে খালেদা জিয়া সেনাবাহিনীকে নীরব না থাকার খোলা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রতিউত্তরে হাসিনা বলেছেন, এটা ১৯৭৫ সাল নয় (ওই বছরে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে তার ঢাকার বাসভবনে হত্যা করে কিছু সেনা কর্মকর্তা)। এটা ২০১৩ সাল। পৃথিবী বদলে গেছে।
হাসিনার মতে, খালেদা জিয়া যে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাতে প্রমাণ হয় যে গণতন্ত্রে তার কোন আস্থা নেই।
দু’পক্ষই বক্তব্যের মাধ্যমে বছর শেষের দিকের নির্বাচনকে সামনে রেখে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেরুকরণ আরও ধারালো করেছে যুদ্ধাপরাধ বিচার ও শাহবাগের আন্দোলন। যে যুব সমাজ শাহবাগের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু শেখ হাসিনা তাদের ওপর ভরসা করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ব্যবসায় প্রশাসনে গ্রাজুয়েট এক ব্যবসায়ী নাজমুল ভুঁইয়া জয় বলেন, শেখ হাসিনা যদি এখন জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এ দলের নেতাদের দমন করতে ব্যর্থ হন তাহলে তিনি কখনও তাদের দমন করতে পারবেন না। শুধু তা-ই নয় তিনি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকেও দমন করতে আর সুযোগ পাবেন না। অন্য ৮ জনের সঙ্গে শাহবাগে অনির্দিষ্টকালের অনশন করছেন নাজমুল ভুঁইয়া জয়। এর মাধ্যমে তারা শেখ হাসিনাকে শক্তি সঞ্চার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি যারা এরই মধ্যে অবসরে গিয়েছেন তাদের দিক থেকে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন খালেদা। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি একই কারণে হরতাল করছে। সহিংসতায় জড়াচ্ছে। এমনকি সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলা হচ্ছে। তার আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো আগামী নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃস্থাপন। শাহবাগের আন্দোলনের পর বাংলাদেশে যে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে তত্ত্বাবধায়কের দাবি ও তা নিয়ে বিএনপির ক্ষোভ এরই মধ্যে পরিষ্কারভাবে পিছনে চলে গিয়েছে।
যেহেতু দু’পক্ষই তাদের অবস্থান শক্ত করেছে, তাই বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের রেহাই পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহ দু’টি কর্মসূচি আছে। এ থেকেই সম্ভবত আগামী সপ্তাহগুলো বা মাসগুলোর গতিবিধি নির্ধারণ হবে। শাহবাগ থেকে ছড়িয়ে পড়া জাগরণ মঞ্চ আগামী ৪ঠা এপ্রিল জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর অফিসমুখী পদযাত্রা করবে। এর দু’দিন পরে সারা দেশ থেকে ‘লংমার্চ’ পালিত হবে। এর আয়োজক একটি ইসলামি গ্রুপ। ওই লংমার্চ ঢাকায় এসে একত্রিত হবে। তারা শাহবাগের ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তি দাবি করছেন। ধানমন্ডির যে বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য খুন হন তা থেকে অনতিদূরে বাসা ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুনের। তিনি বলেন, এ লড়াই দীর্ঘ ও রক্তাক্ত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর তিনি। কিন্তু ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম আন্দোলনের সুপরিচিত মূল আয়োজকদের একজন তিনি। ডজনখানেক সুশীল সমাজের একজন তিনি। তাকে শাহবাগের আন্দোলনের প্রাক্কালে কোন কোন মৌলবাদী মুরতাদ আখ্যায়িত করেছে। তিনি মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়ার মুখে রয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের মতো লোকেরা মৃত্যু হুমকির মুখে বসবাস করার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। বাংলাদেশের এই লড়াই থেকে পালানোর কোন পথ নেই।
গতকাল কলকাতার অনলাইন টেলিগ্রাফে প্রকাশিত ‘দিদি ভার্সাস দিদি, রানিং ফর লং নেক্সট ডোর’ শীর্ষক লেখার অনুবাদ
No comments