৭৫ বছর পর প্রেমিক-প্রেমিকার দেখা: জেনি, ‘আই লাভ ইউ গার্ল’
এমন
কাহিনী সিনেমায় মেলে। কিন্তু তা বাস্তবেও আছে তারই প্রমাণ দিলেন
যুক্তরাষ্ট্রের ৯৭ বছর বয়সী যোদ্ধা কে টি রবিনস এবং তার ফরাসি প্রেমিকা ৯২
বছর বয়সী জেনি গানায়ে। জেনি পরবর্তীতে হয়ে যান পিয়ারসন। সেই দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের সময় রবিনস ফ্রান্সে দায়িত্বে ছিলেন। তখন তিনি ২৪ বছরের টগবগে
যুবক এক। আর পিয়ানসন ১৯ বছর বয়সী যুবতী। তাদের মধ্যে ওই সময় গভীর প্রেম গড়ে
ওঠে। দু’জনে একসঙ্গে ছবি তোলেন। তারই দু’চারটা নিজের কাছে রেখেছিলেন
রবিনস। যুদ্ধের এক পর্যায়ে অকস্মাৎ তাকে স্টেশন ত্যাগ করতে হয়। সেই যে
গেলেন, আর ফেরা হয়নি। এরপর কেটে গেছে ৭৫ বছর। কারো সঙ্গে কারো দেখা হয়নি।
এবার ফরাসি এক সাংবাদিককে রবিনস তার প্রেমিকার সেই ছবি দেখিয়ে বললেন তার
নাম। ওই সাংবাদিক খোঁজাখুঁজি করেন। সত্যি পেয়ে যান পিয়ারসনকে। আয়োজন চলে
তাদের দেখা-সাক্ষাৎ করিয়ে দেয়ার। সত্যি সত্যি ৭৫ বছর পর আবেগঘন এক
রিইউনিয়নে তারা একত্রিত হন। চোখে চোখে বলা হয়ে যায়, ফেলে আসা ৭৫ বছরে মনের
ভেতরে ক্ষরণের সব কথা। রবিনস তার প্রেমিকাকে দেখেই বলে উঠলেন, তুমি কখনো
আমার হৃদয় থেকে হারিয়ে যাওনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওই সেনা সদস্য রবিনস ফ্রান্সে দায়িত্ব পালন করতে এসে ফরাসি সুন্দরী পিয়ারসনের (১৮) প্রেমে পড়ে যান। পিয়ারসনের ছোট্ট শহরে দায়িত্ব পড়েছিল তার। তিনি প্রথম চোখ মেলে দেখেছিলেন পিয়ারসনকে। ১৯৪৪ সালের কথা সে। উত্তর-পূর্ব ফ্রান্সের ব্রাইয়ি শহরের ঘটনা। সেখানে রচনা হয়েছিল তাদের প্রেমের সম্পর্ক। ওই সময় রবিনসের পোশাক ধুয়ে দেয়ার জন্য কারো প্রয়োজন ছিল। এ কাজে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন পিয়ারসন। তাতে তার মায়ের সম্মতি ছিল। কাপড় কাচতে গিয়ে রবিনসের প্রেম পড়ে যান তারা। এর মাত্র দু’মাস পড়ে রবিনসকে বলা হয়, তাকে দ্রুত ওই এলাকা ছাড়তে হবে। যোগ দিতে হবে ইস্টার্ন ফ্রন্টে। যুদ্ধ করতে হবে এক্সিস পাওয়ারসের বিরুদ্ধে।
ফ্রান্স ২ টেলিভিশন চ্যানেলকে রবিনস বলেন, আমি যাওয়ার আগে সম্ভবত পিয়ারসনকে বলেছিলাম- আমি আবার আসব। তোমাকে নিয়ে যাবো। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। পিয়ারসন বলেন, যখন রবিনস চলে গেলেন, ট্রাকে উঠলেন, তখন চিৎকার করে কেঁদেছি আমি। আমার মনটা তখন ভেঙে যাচ্ছিল। আমি চেয়েছিলাম যুদ্ধের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে না যান যেন।
১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হলো। পিয়ারসন বেসিক ইংরেজি শিখতে লাগলেন। তার আশা ছিল, স্বপ্ন দেখানো যুবক রবিনস তার কাছে ফিরে আসবেন একদিন। কিন্তু ফিরে আসেননি রবিনস। তিনি ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় লিলিয়ান নামের এক যুবতীর। তাকেই তিনি বিয়ে করেন। তার সঙ্গে ৭০ বছরের দাম্পত্য তার। মিসিসিপিতে একটি হার্ডওয়্যার স্টোরে ৫০ বছর ধরে পাশাপাশি কাজ করছিলেন এই দম্পতি। কিন্তু ২০১৫ সালে ৯২ বছর বয়সে মারা যান তার স্ত্রী লিলিয়ান। অন্যদিকে পিয়ারসনও নতুন করে প্রেমে পড়ে যান অন্য একজনের। ১৯৪৯ সালে তিনি বিয়ে করেন তাকে। তারপর ৫ সন্তানের মা তিনি।
দু’জনে আলাদাভাবে যার যার দেশে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও রবিনস কখনো তার ফরাসি প্রেমিকাকে ভুলে যাননি। তিনি সব সময় কাছে কাছে রাখতেন পিয়ারসনের সঙ্গে তার সাদাকালো ছবি। সেই ছবি এখনো তার কাছে আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বর্ষীয়ান যোদ্ধাদের ওপর রিপোর্ট করতে যুক্তরাষ্ট্রে যান একদল ফরাসি সাংবাদিক। তাদের সেই ছবি দেখালেন রবিনস। বললেন, তিনি পিয়ারসনের গ্রামে ফিরতে চান। সাক্ষাৎ করতে চান তার সঙ্গে। তার ধারণা ছিল পিয়ারসন মারা গেছেন। তার ভাষায়, নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম যে, তাকে আর দেখতে পাবো না।
ফ্রান্সে প্রথম যেখানে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল সেখান থেকে প্রায় ২৭ মাইল দূরে মন্টিগনি-লেস-মেটজ, মোসেলে’তে অবসরে যাওয়া মানুষদের থাকার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পিয়ারসনকে খুঁজে পান তারা। ফরাসি ওই সাংবাদিকরা এই দুই প্রেমিক-প্রেমিকার সাক্ষাতের আয়োজন করলেন। রবিনস যখন পিয়ারসনকে জীবিত দেখার আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন তখন তাকে সাংবাদিকরা বললেন, পিয়ারসন বেঁচে আছেন। আপনাকে দেখার জন্য প্রতীক্ষায় আছেন তিনি।
রবিনস চলে আসেন ফ্রান্সে। সেখানে তিনি প্রথম চোখ খুলতেই তার সামনে হাসিমুখে ৭৫ বছর আগের সেই পিয়ারসন। দু’জনের চোখে সে কি তৃপ্তি! সে কি অভিব্যক্তি। পিয়ারসনকে দেখেই রবিনস বললেন, সব সময়ই আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমার হৃদয় থেকে কখনো মুছে যাওনি। রবিনস এরপর বের করেন সেই ঐতিহাসিক ছবি। পিয়ারসনকে বলেন, এতটা দশক ধরে এটা আমার বুকের কাছে আগলে রেখেছি। এই ছবিটায় যে সুন্দরীকে দেখতে পাচ্ছ, এটা তুমি।
জবাবে পিয়ারসন বললেন- ওয়াও!
চুম্বন বিনিময় হলো তাদের মধ্যে। একজন আরেকজনের মুখ হাতড়ে দেখেন ৭৫ বছরের পুরনো ভালোবাসাকে। বয়স হয়েছে। তাতে কি! সেই প্রেম এখনো তেমনই সতেজ আছে। সজীব আছে। তাই পিয়ারসন বললেন, আমি তো সব সময়ই তাকে ভেবেছি। ভেবেছি সে একদিন ফিরে আসবে। আমি সব সময় চেয়েছি সে ফিরে আসবে।
একসঙ্গে তারা কাটালেন বেশ কয়েকটি ঘণ্টা। এরপরই নরম্যান্ডিতে বিশ্বযুদ্ধের বিজয় উৎসবে যোগ দিতে ছুটে যেতে হয় রবিনস’কে। এখন রবিনসের স্ত্রী নেই। পিয়ারসনও বিধবা। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবার দেখা করবেন। বিদায় নেয়ার সময় রবিনস তাকে বললেন- জেনি, ‘আই লাভ ইউ গার্ল’।
সঙ্গে সঙ্গে শতবর্ষী ছুঁই ছুঁই এই প্রেমিক-প্রেমিকার দু’জোড়া চোখ ৭৫ বছর পরে সেই যৌবনের আবেগ নিয়ে ভিজে উঠলো অশ্রুতে। দু’জনের ঠোঁটে ঠোঁট মিশে গেল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওই সেনা সদস্য রবিনস ফ্রান্সে দায়িত্ব পালন করতে এসে ফরাসি সুন্দরী পিয়ারসনের (১৮) প্রেমে পড়ে যান। পিয়ারসনের ছোট্ট শহরে দায়িত্ব পড়েছিল তার। তিনি প্রথম চোখ মেলে দেখেছিলেন পিয়ারসনকে। ১৯৪৪ সালের কথা সে। উত্তর-পূর্ব ফ্রান্সের ব্রাইয়ি শহরের ঘটনা। সেখানে রচনা হয়েছিল তাদের প্রেমের সম্পর্ক। ওই সময় রবিনসের পোশাক ধুয়ে দেয়ার জন্য কারো প্রয়োজন ছিল। এ কাজে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন পিয়ারসন। তাতে তার মায়ের সম্মতি ছিল। কাপড় কাচতে গিয়ে রবিনসের প্রেম পড়ে যান তারা। এর মাত্র দু’মাস পড়ে রবিনসকে বলা হয়, তাকে দ্রুত ওই এলাকা ছাড়তে হবে। যোগ দিতে হবে ইস্টার্ন ফ্রন্টে। যুদ্ধ করতে হবে এক্সিস পাওয়ারসের বিরুদ্ধে।
ফ্রান্স ২ টেলিভিশন চ্যানেলকে রবিনস বলেন, আমি যাওয়ার আগে সম্ভবত পিয়ারসনকে বলেছিলাম- আমি আবার আসব। তোমাকে নিয়ে যাবো। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। পিয়ারসন বলেন, যখন রবিনস চলে গেলেন, ট্রাকে উঠলেন, তখন চিৎকার করে কেঁদেছি আমি। আমার মনটা তখন ভেঙে যাচ্ছিল। আমি চেয়েছিলাম যুদ্ধের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে না যান যেন।
১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হলো। পিয়ারসন বেসিক ইংরেজি শিখতে লাগলেন। তার আশা ছিল, স্বপ্ন দেখানো যুবক রবিনস তার কাছে ফিরে আসবেন একদিন। কিন্তু ফিরে আসেননি রবিনস। তিনি ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় লিলিয়ান নামের এক যুবতীর। তাকেই তিনি বিয়ে করেন। তার সঙ্গে ৭০ বছরের দাম্পত্য তার। মিসিসিপিতে একটি হার্ডওয়্যার স্টোরে ৫০ বছর ধরে পাশাপাশি কাজ করছিলেন এই দম্পতি। কিন্তু ২০১৫ সালে ৯২ বছর বয়সে মারা যান তার স্ত্রী লিলিয়ান। অন্যদিকে পিয়ারসনও নতুন করে প্রেমে পড়ে যান অন্য একজনের। ১৯৪৯ সালে তিনি বিয়ে করেন তাকে। তারপর ৫ সন্তানের মা তিনি।
দু’জনে আলাদাভাবে যার যার দেশে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও রবিনস কখনো তার ফরাসি প্রেমিকাকে ভুলে যাননি। তিনি সব সময় কাছে কাছে রাখতেন পিয়ারসনের সঙ্গে তার সাদাকালো ছবি। সেই ছবি এখনো তার কাছে আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বর্ষীয়ান যোদ্ধাদের ওপর রিপোর্ট করতে যুক্তরাষ্ট্রে যান একদল ফরাসি সাংবাদিক। তাদের সেই ছবি দেখালেন রবিনস। বললেন, তিনি পিয়ারসনের গ্রামে ফিরতে চান। সাক্ষাৎ করতে চান তার সঙ্গে। তার ধারণা ছিল পিয়ারসন মারা গেছেন। তার ভাষায়, নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম যে, তাকে আর দেখতে পাবো না।
ফ্রান্সে প্রথম যেখানে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল সেখান থেকে প্রায় ২৭ মাইল দূরে মন্টিগনি-লেস-মেটজ, মোসেলে’তে অবসরে যাওয়া মানুষদের থাকার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পিয়ারসনকে খুঁজে পান তারা। ফরাসি ওই সাংবাদিকরা এই দুই প্রেমিক-প্রেমিকার সাক্ষাতের আয়োজন করলেন। রবিনস যখন পিয়ারসনকে জীবিত দেখার আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন তখন তাকে সাংবাদিকরা বললেন, পিয়ারসন বেঁচে আছেন। আপনাকে দেখার জন্য প্রতীক্ষায় আছেন তিনি।
রবিনস চলে আসেন ফ্রান্সে। সেখানে তিনি প্রথম চোখ খুলতেই তার সামনে হাসিমুখে ৭৫ বছর আগের সেই পিয়ারসন। দু’জনের চোখে সে কি তৃপ্তি! সে কি অভিব্যক্তি। পিয়ারসনকে দেখেই রবিনস বললেন, সব সময়ই আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমার হৃদয় থেকে কখনো মুছে যাওনি। রবিনস এরপর বের করেন সেই ঐতিহাসিক ছবি। পিয়ারসনকে বলেন, এতটা দশক ধরে এটা আমার বুকের কাছে আগলে রেখেছি। এই ছবিটায় যে সুন্দরীকে দেখতে পাচ্ছ, এটা তুমি।
জবাবে পিয়ারসন বললেন- ওয়াও!
চুম্বন বিনিময় হলো তাদের মধ্যে। একজন আরেকজনের মুখ হাতড়ে দেখেন ৭৫ বছরের পুরনো ভালোবাসাকে। বয়স হয়েছে। তাতে কি! সেই প্রেম এখনো তেমনই সতেজ আছে। সজীব আছে। তাই পিয়ারসন বললেন, আমি তো সব সময়ই তাকে ভেবেছি। ভেবেছি সে একদিন ফিরে আসবে। আমি সব সময় চেয়েছি সে ফিরে আসবে।
একসঙ্গে তারা কাটালেন বেশ কয়েকটি ঘণ্টা। এরপরই নরম্যান্ডিতে বিশ্বযুদ্ধের বিজয় উৎসবে যোগ দিতে ছুটে যেতে হয় রবিনস’কে। এখন রবিনসের স্ত্রী নেই। পিয়ারসনও বিধবা। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবার দেখা করবেন। বিদায় নেয়ার সময় রবিনস তাকে বললেন- জেনি, ‘আই লাভ ইউ গার্ল’।
সঙ্গে সঙ্গে শতবর্ষী ছুঁই ছুঁই এই প্রেমিক-প্রেমিকার দু’জোড়া চোখ ৭৫ বছর পরে সেই যৌবনের আবেগ নিয়ে ভিজে উঠলো অশ্রুতে। দু’জনের ঠোঁটে ঠোঁট মিশে গেল।
No comments