মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে মডেল হত্যা
মালয়েশিয়ার
রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে মঙ্গোলিয়ান মডেল আলতানতুয়া শারিবু
হত্যাকাণ্ড। ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক
সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তারা জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। সরকারের একটি বড় রকমের
দুর্নীতির খবর তিনি জানতে পেরেছিলেন, এ জন্য আলতানতুয়াকে হত্যা করা হয়ে
থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়। জেল থেকে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম
শক্তিশালী নেতা ও সাবেক উপ- প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মুক্তি পাওয়ার
পর এই মামলাটি নতুন করে চালু করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু মালয়েশিয়ার একজন
সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা দুদিন আগে জানান দেন, এ মামলায় কেউ কোনো আবেদন করেন
নি নতুন করে। ফলে মামলাটি উন্মোচিত করা হচ্ছে না নতুন করে। এমন
প্রেক্ষাপটে কেপোং আসনের এমপি লিম পিপ ইং পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিল
করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০০৬ সালে মঙ্গোলিয়ান ওই মডেলকে হত্যা করা হয়। এর
নেপথ্য কারণ অবশ্যই পুলিশকে খুঁজে দেখতে হবে। তাই তিনি ওই মামলাটি নতুন করে
উন্মোচনের আহ্বান জানিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। এতে তিনি দাবি করেছেন,
কি কারণে আলতানতুয়াকে হত্যা করা হয়েছে তার রহস্য উন্মোচনে ব্যর্থ হয়েছে
হাইকোর্ট ও ফেডারেল কোর্ট। এমন কি ঘাতকের পরিচয়ও তারা উদ্ধার করতে পারে নি।
সাবেক দুই পুলিশ কর্মকর্তা সিরুল আজহার উমর ও আজিলাহ হাদরিকে এই হত্যায়
অভিযুক্ত করে ২০০৯ সালে ফাঁসির রায় দেয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ সালে সেই রায়কে
পুরো উল্টে দেয় আপিল কোর্ট। এমপি লিম শনিবার যে রিপোর্ট দাখিল করেছেন তাতে
বলা হয়েছে, অভিযুক্ত সিরুল স্বেচ্ছায় সত্য স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন। তার
বক্তব্য রেকর্ড করা উচিত। এ হত্যায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযোগ
গঠন করা উচিত। তাদেরকে কখনোই হত্যার দায় থেকে দূরে রাখা যাবে না। এ আবেদন
জানিয়ে শনিবার সকালে মালয়েশিয়ার জিনজাং পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট দাখিল করেছেন
এমপি লিম। এর আগে মালয়েশিয়া পুলিশের আইজি মোহাম্মদ ফুজি হারুন বলেছিলেন,
পুলিশ মামলাটি নতুন করে উন্মোচিত করবে না। কারণ তা করার কোনো যৌক্তিক কারণ
নেই। এক্ষেত্রে পুলিশের কাছে কোনো রিপোর্ট করা হয় নি। উল্লেখ্য, আলতানতুয়া
(২৮) কে প্রথমে গুলি করা হয়। পরে শাহ আলম এলাকার পুনচাক আলমে সুবাং ডাম
এলাকায় একটি বনের ভেতর নিয়ে বিস্ফোরক বেঁধে তার দেহকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়া
হয় ২০০৬ সালে। আলোচিত দু’পুুলিশ সদস্য ছাড়াও মালয়েশিয়ার সাবেক রাজনৈতিক
বিশ্লেষক আবদুল রাজাক বাগিন্দাকেও অভিযুক্ত করা হয় এ মামলায়। কিন্তু তার
বিরুদ্ধে দৃঢ় কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় আদালত ২০০৮ সালের ৩১ শে অক্টোবর মুক্তি
দেয়। এক পর্যায়ে সিরুল পালিয়ে চলে যান অস্ট্রেলিয়া। তাকে অস্ট্রেলিয়া থেকে
ফিরিয়ে এনে নতুন করে আলতানতুয়া হত্যা মামলা চালু করার কথা বলেছেন আনোয়ার
ইব্রাহিম।
No comments