জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত আমদানি–রপ্তানি পণ্য

ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে চট্টগ্রাম নগরের
খাতুনগঞ্জ ও আসাদগঞ্জের বিভিন্ন দোকানে পানি ঢোকে।
এতে ভিজে যায় শুঁটকি, ছোলা, ডাল, মরিচ,
নারকেলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য। ভিজে যাওয়া
এসব পণ্য শুকিয়ে বিক্রির উপযোগী করার
চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু আঘাত হানার সময় শনিবার দুপুরে জোয়ারের পানি ঢুকে একটি বেসরকারি ডিপোতে কনটেইনার ভর্তি আমদানি-রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পণ্য নষ্ট হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলেও কী পরিমাণ কনটেইনার ভর্তি পণ্য নষ্ট হয়েছে, তা এখনো হিসাব করতে পারেনি ডিপোটি। জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের এক কিলোমিটার দূরে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো এছাক ব্রাদার্সে জোয়ারের পানি ঢোকে। এতে প্রতিষ্ঠানটির কনটেইনার রাখার চত্বরের নিচের অংশে অনেকগুলো কনটেইনারে পানি ঢুকে কিছু পণ্য নষ্ট হয়। এর মধ্যে আছে তৈরি পোশাক ও ভোগ্যপণ্য। ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, জোয়ারের পানিতে ওই ডিপোতে থাকা তাঁর প্রতিষ্ঠানের ২২ কনটেইনার ভর্তি ছোলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কনটেইনারের প্রতিটির নিচের অংশে অন্তত ৮ থেকে ১০ টন করে ছোলা পানিতে ভিজে গেছে। ভোগ্যপণ্য ছাড়াও রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রপ্তানি পণ্য পরিবহনের প্রক্রিয়ার নিয়োজিত তিনটি ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, জোয়ারের পানির কারণে ডিপোতে থাকা রপ্তানি পণ্যের আনুমানিক ৪৭টি কনটেইনারে পানি ঢোকার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত একটি ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রপ্তানির জন্য ১০টি কনটেইনার রয়েছে ডিপোটিতে। এর মধ্যে দুটি কনটেইনারের নিচের স্তরে রাখা কার্টনের পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদেশি ক্রেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে এছাক ব্রাদার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউনুছের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা বলেন, পানিরোধক ব্যবস্থা থাকার কারণে কনটেইনারে পানি ঢোকার কথা নয়। এরপরও পানিরোধক ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে গুটি কয়েক কনটেইনারের নিচের স্তরে থাকা কিছু পণ্য নষ্ট হয়েছে। এদিকে জোয়ারের পানিতে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে অন্তত ২০০ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে চাল, ডাল, চিনি, গুঁড়া দুধ, পেঁয়াজ, সাবানসহ বিপুল পরিমাণ পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে দাবি করেন চাক্তাই শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমেদ বলেন, সোমবার বন্ধ থাকার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করা হয়নি। মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের কাছে ক্ষতির হিসাব নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.