পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘মানবিক সহায়তা’
পশ্চিমা বিশ্বের হুঁশিয়ারির মধ্যে ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ পূর্বাঞ্চলে ‘মানবিক সহায়তা’ পাঠিয়েছে রাশিয়া। ২৮০টি ট্রাকের একটি বহর গতকাল মঙ্গলবারই ইউক্রেনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির। প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দাবি করেছেন, ‘ইউক্রেনের সঙ্গে সমঝোতা করেই সবকিছু করা হচ্ছে।’ তবে গতকাল রাতে জানা যায়, ইউক্রেন ত্রাণের বহর যেতে দেওয়ার জন্য শেষ মুহূর্তে তিন দফা শর্ত আরোপ করেছে। এর আগে রুশ গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ট্রাকগুলোতে প্রায় দুই হাজার টন খাদ্য, শিশুখাদ্য, বিদ্যুতের জেনারেটর, ওষুধসহ বিভিন্ন মাল রয়েছে। বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় আটকে পড়া হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের জন্য এসব সহায়তা পাঠানো হয়েছে। রুশ বার্তা সংস্থা ইতার তাস জানায়, স্থানীয় সময় গতকাল সকালে মস্কোর কাছ থেকে খাদ্যবাহী গাড়িবহর রওনা হয়। এক হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্ব ইউক্রেনে পৌঁছাতে গাড়িবহরের অন্তত দুই দিন লাগবে। পশ্চিমা বিশ্বের আশঙ্কা, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘মানবিক সহায়তাকে’ ছুতা হিসেবে ব্যবহার করে পূর্ব ইউক্রেনে সেনাবাহিনী পাঠাতে পারেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ইউক্রেনের অনুমতি ছাড়া কোনো রুশ তৎপরতা হবে অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল বারাসো গত সোমবার বলেন, ইউক্রেনে ‘যেকোনো ধরনের সামরিক কর্মসূচি—মানবিক মিশনসহ যে অজুহাতেই হোক না কেন—তা হবে অগ্রহণযোগ্য’। ন্যাটো বলেছে, মানবিক সহায়তার আড়ালে রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে পারে। তবে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র পেসকভ বলেন, ত্রাণের বহরকে সামরিক কার্যক্রমের অজুহাত হিসেবে ব্যবহারের এমন ধারণা একেবারে ‘উদ্ভট’। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল রোসিয়া ২৪-এ দেখানো হয়, মস্কোর কাছের আলবিয়ানো শহর থেকে সাদা রঙের বেশ কিছু ভারী ট্রাক ছেড়ে যাচ্ছে। টেলিভিশনটির একজন প্রতিনিধি বলেন, গাড়িবহরটি দু-তিন দিনের মধ্যেই ইউক্রেন সীমান্তে পৌঁছাবে। সেখানে তারা রেডক্রসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিলিত হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি: পূর্ব ইউক্রেনে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ২৯৮ আরোহী নিহত হওয়ার ঘটনার বিচার দাবি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। গতকাল অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তিনি বলেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্বকে জানিয়ে দিচ্ছি, আমরা এই বিবেকবর্জিত অপরাধের ন্যায়বিচার চাই।’ রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক শহরের কাছে গত ১৭ জুলাই নেদারল্যান্ডস থেকে মালয়েশিয়াগামী ওই উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, রুশপন্থী বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের যুদ্ধবিমান মনে করে ভুলক্রমে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে এটিকে ধ্বংস করেছে।
No comments