সম্মেলনে অংশ নিতে দুই পক্ষ জেনেভায়
সিরিয়ায় রক্তপাত বন্ধের পথ খুঁজতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গতকাল সোমবার দ্বিতীয় পর্বের শান্তি সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহী পক্ষের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নিতে জেনেভায় পৌঁছেছেন। এদিকে সিরিয়ার অবরুদ্ধ হোমস শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ও ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ দিতে যুদ্ধবিরতি আরও তিন দিন বৃদ্ধি করতে রাজি হয়েছে উভয় পক্ষ। গত রোববার হোমস থেকে আরও ৬১১ জন বেসামরিক নাগরিককে বের করে আনা হয়েছে। জেনেভায় অনুষ্ঠিত সিরিয়া শান্তি সম্মেলনের প্রথম পর্ব গত ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়।
যদিও ওই সম্মেলন থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো সফলতা পাওয়া যায়নি। তখন বিদ্রোহীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রশ্নে অনড় ছিল। অন্যদিকে সরকারি প্রতিনিধিরা বাশারের পদত্যাগের দাবি সরাসরি নাকচ করে চলমান ‘সন্ত্রাসবাদ’ বন্ধের বিষয়ে আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। যদিও সম্মেলন শেষে জাতিসংঘ ও আরব লিগের দূত লাখদার ব্রাহিমি বলেছিলেন, দুই পক্ষই বেশ কিছু বিষয়ে ‘একমত হয়েছে’। প্রথম পর্বের সম্মেলনে বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেন বিদ্রোহীদের জোট ন্যাশনাল কোয়ালিশনের প্রধান আহমেদ জাবরা। তবে তিনি দ্বিতীয় পর্বের সম্মেলনেও বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। সিরিয়ার সরকারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লেম। দ্বিতীয় পর্বের সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই দুই পক্ষের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করার কথা ছিল লাখদার ব্রাহিমির। এরপর মঙ্গলবার দুই পক্ষকে নিয়ে যৌথ অধিবেশন বসার কথা। এদিকে হোমস শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বের করে আনা ও ত্রাণ সরবরাহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে জাতিসংঘ ও রেড ক্রিসেন্ট। রেড ক্রিসেন্টের সিরিয়া কার্যালয় থেকে জানানো হয়,
রোববার ৬০০ জনের মতো অবরুদ্ধ মানুষকে বের করে আনা হয়েছে। ত্রাণ হিসেবে ৬০ প্যাকেট খাবার ও দেড় হাজার কিলোগ্রাম ময়দা বিতরণ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, হোমস শহর থেকে ৬১১ জনকে বের করে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২১০ জন নারী, ১৮০টি শিশু, ৯১ জন বৃদ্ধ ও ১৩০ জন তরুণ রয়েছেন। গত শুক্রবার ৮৩ জন মানুষ অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান। হোমসে বিচ্ছিন্নভাবে গোলাগুলি ও ত্রাণের বহরে হামলার ঘটনা ঘটলেও সরকার ও বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতি তিন দিন বাড়িয়েছে। এ সময় হোমস থেকে অবরুদ্ধদের বের করে আনা ও ত্রাণ তৎপরতা চলবে। প্রথম তিন দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ গত রোববার শেষ হয়। জাতিসংঘে প্রস্তাব তুলবে ফ্রান্স: সিরিয়ার অবরুদ্ধ শহরগুলোতে ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রবেশপথের ব্যবস্থা চেয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তুলবে ফ্রান্স। গতকাল সোমবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লঁরা ফ্যাবিয়াস বলেন, প্রস্তাবে জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ ও খাদ্য সহায়তা পাঠানোর জন্য এ ধরনের প্রবেশপথের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তুলে ধরা হবে। বিবিসি, আল-জাজিরা ও এএফপি।
No comments