সিকিমের মীর জাফরের আত্মোপলব্ধি by ইকতেদার আহমেদ
আমাদের
দেশে ও বাংলা সাহিত্যে মীর জাফর নামটি বিশ্বাসঘাতকের প্রতিশব্দ বা সমার্থক
শব্দ হিসেব ঠাঁই করে নিয়েছে। মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্রে বাংলার
স্বাধীনতা ইংরেজদের হাতে সমর্পণের পর থেকে অদ্যাবধি মীর জাফর
বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে চিহ্নিত। বিশ্বাসঘাতকতা-পরবর্তী মীর জাফর
স্বল্প সময়ের জন্য বাংলার মসনদে আরোহণ করে আত্মতৃপ্তি লাভ করলেও অচিরেই
তার ও তার পুত্রের করুণভাবে জীবনের যবনিকাপাত ঘটলে সে আত্মতৃপ্তি চিরদিনের
জন্য তার পরিবারের সদস্য ও অনুরাগীদের কাছে আত্মজ্বালা হিসেবে দেখা দেয়।
হিমালয়ের দক্ষিণ কোলঘেঁষে পূর্ব পশ্চিমে বিস্তৃত পাশাপাশি অবস্থিত তিনটি
দেশ বংশানুক্রমিকভাবে কয়েক শতক ধরে রাজা দ্বারা শাসিত ছিল। এ তিনটি দেশের
দুটি নেপাল ও ভুটান বর্তমানে স্বাধীন রাষ্ট্র। অপরদিকে এ দুটির মাঝখানে
অবস্থিত সিকিমের পায়ে আবদ্ধ হয়েছে পরাধীনতার শিকল। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী
বৌদ্ধ গুরু পদ্মসম্ভবা অষ্টম শতাব্দীতে সিকিম সফর করেন এবং সেখানকার
অধিবাসীদের বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষাদানপূর্বক রাজতন্ত্রের ভবিষ্যদ্বাণী করেন।
ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সিকিমে নামগিয়েল রাজবংশ রাজ্য শাসনের কর্তৃত্ব লাভ করে
এবং সে কর্তৃত্ব তিন শতকেরও বেশি সময় ধরে ভারত দ্বারা স্বাধীনতা হরণ
পর্যন্ত অক্ষুণ্ন থাকে। নামগিয়েল বংশের শাসন অব্যাহত থাকাকালীন প্রথম
সার্ধশতকে সিকিম বারবার নেপালি আক্রমণকারীদের আগ্রাসী অভিযানে রাজ্যের ভূমি
হারানোসহ লুণ্ঠনের কবলে পতিত হয়। পরবর্তীকালে উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনকালে
সিকিম ব্রিটিশদের সঙ্গে মিত্রতা বন্ধনে আবদ্ধ হলে নেপাল সর্বাÍক শক্তি দিয়ে
সিকিমের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এ যুদ্ধে সিকিমের অধিকাংশ অঞ্চল নেপালের
কাছে হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অষ্টাদশ শতকের প্রারম্ভে
নেপাল আক্রমণ করলে গুর্খা যুদ্ধের প্রাদুর্ভাব হয় এবং এ যুদ্ধ-পরবর্তী
সিকিম নেপালের সঙ্গে সুগাউলি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে দখলকৃত ভূমি ফেরত পায়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা একসময় সিকিমের অংশ ছিল। অষ্টাদশ শতকের
তৃতীয় দশকের মাঝামাঝি সিকিম সামান্য অর্থের বিনিময়ে দার্জিলিং শহরের
মালিকানা ব্রিটিশদের কাছে হস্তান্তরে বাধ্য হয় এবং এর কিছুকাল পর সম্পূর্ণ
দার্জিলিং জেলা ও মোরাং অঞ্চল ব্রিটিশদের হস্তগত হয়। উপমহাদেশ শাসনকালে
ব্রিটিশরা সিকিমের রাজাকে স্বাধীন সত্তা বজায় রেখে দেশ পরিচালনার নিশ্চয়তা
দেয়। সিকিম স্থলবেষ্টিত হিমালয় পাদদেশের একটি রাজ্য। এর পশ্চিমে নেপাল,
উত্তরে চীনের তিব্বত, পূর্বে ভুটান এবং দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।
সর্বশেষ ২০১১-এ অনুষ্ঠিত আদমশুমারি অনুযায়ী সিকিমের লোকসংখ্যা ৬ লাখ ১১
হাজারের কাছাকাছি। সিকিম গোয়ার পর ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য। পৃথিবীর
তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা সিকিম-নেপাল সীমানায় অবস্থিত।
সিকিমের আয়তন ৭ হাজার ৯৬ কিলোমিটার। এটি ভারতের সবচেয়ে কম জনবসতিপূর্ণ
রাজ্য।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর জহরলাল নেহেরু ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন গণভোটের মাধ্যমে সিকিমকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। কিন্তু নেহেরুর শাসনামল থেকেই সিকিম ভারতের বিশেষ আশ্রিত রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হতে থাকে এবং এর প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ ভারত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। ভারতের সঙ্গে চীনের একমাত্র স্থল যোগাযোগ ছিল সিকিমের নাথুলা-পাস দিয়ে। ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর এ পাসটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, যা ২০০৬ সালে খুলে দেয়া হয়। নামগিয়েল রাজবংশের শেষ রাজা চগিয়াল পান্ডেল থন্ডুপ নামগিয়েল ১৯৬৫ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। রাজার আমেরিকান স্ত্রী হুপ কুক সিকিমের সাবেক সম্পদের প্রত্যাবর্তনবিষয়ক নিবন্ধ লিখলে ভারত চরমভাবে অসন্তুষ্ট হয়। ১৯৭৪ সালে সিকিমে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে ৩২ আসনের পার্লামেন্টে লেন্দুপ দর্জির নেতৃত্বাধীন সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস (এসএনসি) ৩১টি আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠন করে। সরকার গঠন-পরবর্তী সিকিমকে ভারতভুক্ত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ২৭ মার্চ লেন্দুপ দর্জির মন্ত্রিসভা সিকিমের রাজতন্ত্র বিলোপের সিদ্ধান্ত নেয়। অতঃপর সিদ্ধান্তটি পার্লামেন্টে অনুমোদন পরবর্তী চারদিনের মাথায় সাজানো ও পাতানো গণভোটের আয়োজন করে বলপ্রয়োগে সিকিমকে ভারতভুক্ত করা হয়।
সিকিমের সচেতন জনগোষ্ঠীর অভিমত, গণভোটটি ছিল নেহায়েত একটি আনুষ্ঠানিকতা। মূলত গণভোট অনুষ্ঠানের আগেই সিকিমের সর্বত্র ছদ্মবেশে ভারতীয় পুলিশ ও সৈন্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যারা বন্দুকের ভয় দেখিয়ে সিকিমের নাগরিকদের গণভোটের সপক্ষে ভোটদানে বাধ্য করেছিল। সিকিমের নামগিয়েল রাজবংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি নেপালি বংশোদ্ভূত হিন্দু জনগোষ্ঠী বৌদ্ধ রাজার শাসনকে কখনও তাদের স্বার্থের অনুকূলে ভাবেনি।
১৯৭৩-৭৫ সালে বৌদ্ধ রাজার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন দেখা গেছে, সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রতি ভারতের সমর্থন এতটাই প্রকাশ্য ছিল যে, রাজার বিরুদ্ধে আন্দোলনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী স্থানীয় সিকিমিদের অংশগ্রহণ নগণ্য হওয়ায় বিক্ষোভকে ব্যাপকতর করার প্রয়াসে দার্জিলিংসহ ভারতের আশপাশের এলাকা থেকে লোক এনে বিক্ষোভ সংগঠিত করা হতো এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে সিকিমে ঢুকে এসব বিক্ষোভে অংশ নিত। ক্ষমতাচ্যুত রাজা চগিয়ালের এডিসি হিসেবে কর্মরত ক্যাপ্টেন সোনাম ইয়াংদার ভাষ্য থেকে উপরোক্ত বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
সিকিমে রাজতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভ ভারতের মদদে যখন বৃদ্ধি পায় তখন ভারতের পক্ষ থেকে ভয় ছিল, সিকিমের অস্থিতিশীলতার সুযোগে চীন এটিকে তিব্বতের অংশ দাবি করে চীনের অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা চালাবে। কিন্তু রাজা চগিয়াল রাজতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে ভারত সবসময় সচেষ্ট থাকবে এ বিশ্বাসে কখনও চীনকে তার নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ গোলযোগে বিজড়িত করতে চাননি।
সিকিমের ক্ষেত্রে ভারতকে বরাবরই দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। ভারত সবসময় রাজা চগিয়াল লামডেনকে বলে এসেছে, যে কোনো মূল্যে সিকিমের রাজতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে লেন্দুপ দর্জিকে বলে আসছিল, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও রাজতন্ত্র উচ্ছেদ করতে হবে। ভারতের মিথ্যা আশ্বাসে সরল রাজা পরবর্তীকালে বোকা বনলেও সে আশ্বাস ক্ষণকালের জন্য হলেও লেন্দুপ দর্জির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আশা পূরণ করেছিল। সিকিমের পার্শ্ববর্তী ভুটান ১৯৭১ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। ভুটানের পথ ধরে সিকিম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করলে তা যে সিকিমের ভারতভুক্তির ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখা দেবে, সে বিষয়টি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সঠিকভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাছাড়া কৌশলগত কারণে হিমালয়ের কোলে নেপাল-ভুটানের মতো ভারত-চীন সীমান্তে তৃতীয় একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটুক তা ভারত কখনও চায়নি। ১৯৭৫ সালে সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হলে লেন্দুপ দর্জি ভারতের ২২তম রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। কিন্তু তার সে গৌরব চার বছরের মাথায় ভূলুণ্ঠিত হয়। ১৯৭৯-এর নির্বাচনে দেখা গেল পূর্ববর্তী নির্বাচনে একটি আসন
ব্রিটিশদের কাছ থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর জহরলাল নেহেরু ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন গণভোটের মাধ্যমে সিকিমকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। কিন্তু নেহেরুর শাসনামল থেকেই সিকিম ভারতের বিশেষ আশ্রিত রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হতে থাকে এবং এর প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ ভারত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। ভারতের সঙ্গে চীনের একমাত্র স্থল যোগাযোগ ছিল সিকিমের নাথুলা-পাস দিয়ে। ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর এ পাসটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, যা ২০০৬ সালে খুলে দেয়া হয়। নামগিয়েল রাজবংশের শেষ রাজা চগিয়াল পান্ডেল থন্ডুপ নামগিয়েল ১৯৬৫ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। রাজার আমেরিকান স্ত্রী হুপ কুক সিকিমের সাবেক সম্পদের প্রত্যাবর্তনবিষয়ক নিবন্ধ লিখলে ভারত চরমভাবে অসন্তুষ্ট হয়। ১৯৭৪ সালে সিকিমে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে ৩২ আসনের পার্লামেন্টে লেন্দুপ দর্জির নেতৃত্বাধীন সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস (এসএনসি) ৩১টি আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠন করে। সরকার গঠন-পরবর্তী সিকিমকে ভারতভুক্ত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ২৭ মার্চ লেন্দুপ দর্জির মন্ত্রিসভা সিকিমের রাজতন্ত্র বিলোপের সিদ্ধান্ত নেয়। অতঃপর সিদ্ধান্তটি পার্লামেন্টে অনুমোদন পরবর্তী চারদিনের মাথায় সাজানো ও পাতানো গণভোটের আয়োজন করে বলপ্রয়োগে সিকিমকে ভারতভুক্ত করা হয়।
সিকিমের সচেতন জনগোষ্ঠীর অভিমত, গণভোটটি ছিল নেহায়েত একটি আনুষ্ঠানিকতা। মূলত গণভোট অনুষ্ঠানের আগেই সিকিমের সর্বত্র ছদ্মবেশে ভারতীয় পুলিশ ও সৈন্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যারা বন্দুকের ভয় দেখিয়ে সিকিমের নাগরিকদের গণভোটের সপক্ষে ভোটদানে বাধ্য করেছিল। সিকিমের নামগিয়েল রাজবংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি নেপালি বংশোদ্ভূত হিন্দু জনগোষ্ঠী বৌদ্ধ রাজার শাসনকে কখনও তাদের স্বার্থের অনুকূলে ভাবেনি।
১৯৭৩-৭৫ সালে বৌদ্ধ রাজার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন দেখা গেছে, সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রতি ভারতের সমর্থন এতটাই প্রকাশ্য ছিল যে, রাজার বিরুদ্ধে আন্দোলনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী স্থানীয় সিকিমিদের অংশগ্রহণ নগণ্য হওয়ায় বিক্ষোভকে ব্যাপকতর করার প্রয়াসে দার্জিলিংসহ ভারতের আশপাশের এলাকা থেকে লোক এনে বিক্ষোভ সংগঠিত করা হতো এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে সিকিমে ঢুকে এসব বিক্ষোভে অংশ নিত। ক্ষমতাচ্যুত রাজা চগিয়ালের এডিসি হিসেবে কর্মরত ক্যাপ্টেন সোনাম ইয়াংদার ভাষ্য থেকে উপরোক্ত বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
সিকিমে রাজতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভ ভারতের মদদে যখন বৃদ্ধি পায় তখন ভারতের পক্ষ থেকে ভয় ছিল, সিকিমের অস্থিতিশীলতার সুযোগে চীন এটিকে তিব্বতের অংশ দাবি করে চীনের অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা চালাবে। কিন্তু রাজা চগিয়াল রাজতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে ভারত সবসময় সচেষ্ট থাকবে এ বিশ্বাসে কখনও চীনকে তার নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ গোলযোগে বিজড়িত করতে চাননি।
সিকিমের ক্ষেত্রে ভারতকে বরাবরই দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। ভারত সবসময় রাজা চগিয়াল লামডেনকে বলে এসেছে, যে কোনো মূল্যে সিকিমের রাজতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে লেন্দুপ দর্জিকে বলে আসছিল, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও রাজতন্ত্র উচ্ছেদ করতে হবে। ভারতের মিথ্যা আশ্বাসে সরল রাজা পরবর্তীকালে বোকা বনলেও সে আশ্বাস ক্ষণকালের জন্য হলেও লেন্দুপ দর্জির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আশা পূরণ করেছিল। সিকিমের পার্শ্ববর্তী ভুটান ১৯৭১ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। ভুটানের পথ ধরে সিকিম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করলে তা যে সিকিমের ভারতভুক্তির ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখা দেবে, সে বিষয়টি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সঠিকভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাছাড়া কৌশলগত কারণে হিমালয়ের কোলে নেপাল-ভুটানের মতো ভারত-চীন সীমান্তে তৃতীয় একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটুক তা ভারত কখনও চায়নি। ১৯৭৫ সালে সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হলে লেন্দুপ দর্জি ভারতের ২২তম রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। কিন্তু তার সে গৌরব চার বছরের মাথায় ভূলুণ্ঠিত হয়। ১৯৭৯-এর নির্বাচনে দেখা গেল পূর্ববর্তী নির্বাচনে একটি আসন
No comments