সৌরবাতিতে আলোকিত হবে রাজধানী by অমিতোষ পাল
রাতের বেলায় রাজধানীর সড়ক আলোকিত রাখতে এবার সূর্যের আলো ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)। রাজপথে সংযোজন করা হচ্ছে সৌরবাতি (সোলার স্ট্রিট লাইট)। এই বাতি ব্যবহার করলে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, যা দিয়ে একটি জেলার বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা যাবে। শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে রাজপথে সোলার স্ট্রিট লাইট সংযোজনের কাজ। এ জন্য এরই মধ্যে দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে। বর্তমানে চলছে দরপত্র জমাদানের কার্যক্রম।
এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি খুঁটিতে চারটি সোলার স্ট্রিট লাইট সংযোজন করে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দুটি বসানো হয়েছে নগর ভবনের দক্ষিণ পাশের আঙিনায়। আর দুটি বঙ্গবাজার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের মধ্যবর্তী চৌরাস্তায়। এগুলো নিয়মিত আলো দিয়ে যাচ্ছে। এই চারটি সোলার স্ট্রিট লাইট সরবরাহ করেছে ডেনমার্কভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইউনিম্যাঙ্ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
ডিসিসির এক কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর ২৩ হাজার বিদ্যুতের খুঁটিতে বাতি জ্বালানোর জন্য প্রতিদিন আট-নয় মেগাওয়াট
বিদ্যুৎ খরচ হয়। এই বিদ্যুৎ দিয়ে দুই লাখ মানুষের বিদুতের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। বাংলাদেশে বিদ্যুতের যে সংকট, সেটা মোকাবিলায়ও এ উদ্যোগ ভালো কাজে আসবে।
ডিসিসির বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সোলার বেজড এলইডি টাইপ স্ট্রিট লাইটিং প্রকল্পের পরিচালক জাফর আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ফান্ডের (বিএমডিএফ) আওতায় সোলার লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কাজে বিদেশি দাতা সংস্থা অর্থায়ন করবে। এর আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য চীন ও ভারত থেকে দুটি প্রতিনিধিদল এসে যাচাই-বাছাই করে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়ে গেছে। পরে পরীক্ষামূলক দুটি পোলের ভালো ফল পাওয়ায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ কাজে সহযোগিতা করছে।
সোলার লাইট স্থাপনের দরপত্র আহ্বানকারী কর্মকর্তা ডিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ বিভাগ) মাহবুব আহমেদ বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত যে কেউ দরপত্র কিনতে পারবেন। ১৩ অক্টোবর দরপত্রগুলো খোলা হবে। আগামী আট মাসের মধ্যেই সড়কগুলোতে বাতি স্থাপন করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
ডিসিসির মেয়র সাদেক হোসেন খোকা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা আপাতত দেখব এটা ভালো ফল বয়ে আনে কি না। যদি বিদ্যুতের সাশ্রয় হয়, খরচ কমে যায়, তাহলে পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সব রাস্তায় সৌরবাতি সংযোজন করা হবে। কারণ প্রতিদিন আট-দশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হলে সেটা তো কম কথা নয়। আর বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের রাস্তায় সৌরবাতির ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের দেশেও তো অনেক বাড়িতে এখন সৌরবাতির ব্যবহার হয়। বাড়িতে ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেলে রাস্তায় বাতি জ্বালাতে ব্যবহার করা যাবে না কেন?'
অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিসিসির এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ভারত ও চীনের কয়েকটি এলাকার রাস্তায় সৌরবাতির ব্যবহার শুরু হয়েছে। কিন্তু এই বাতি সংযোজন অনেকটা ব্যয়বহুল। এ ছাড়া শুধু বাতি সংযোজন করে বসে থাকলে হবে না। এই শহরে ম্যানহোলের ঢাকনা হরহামেশা চুরি হয়। সাধারণ সড়কবাতি চুরি হয়। সেখানে দামি সোলার প্যানেল চুরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কাজেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও জরুরি।'
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে কাকরাইল মসজিদ থেকে আরামবাগের নটর ডেম কলেজ ইন্টারসেকশন পর্যন্ত এলাকার সড়কে সোলার বাতি সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে ডিসিসি। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা। ১২২টি পোলে দুটি করে মোট ২৪৪টি সৌরবাতি সংযোজন করা হবে। প্রতিটি সৌরবাতি হবে ২৫০ ওয়াটের। এই বাতির ওপরে থাকবে দুটি করে সোলার সিস্টেম প্যানেল। এই প্যানেলের কাজ হবে সূর্যের আলো থেকে সিলিকন সঞ্চয় করে তৈরি ইলেক্ট্রনকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা। সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে বাতি জ্বালানোর কাজে। দুটি বাতি জ্বালানোর জন্য থাকবে আলাদা দুটি প্যানেল। বাতির সঙ্গে তার দিয়ে যুক্ত থাকবে প্যানেল। এ দুটি প্যানেলের ওজন হবে প্রায় ১০ কেজি। এই প্যানেল স্থাপনের জন্য রাজপথে বিদ্যমান খুঁটিগুলোও পরিবর্তন করতে হবে। কারণ এগুলো সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য উপযুক্ত নয়। সোলার প্যানেল দুটি সারা দিন সূর্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করবে। সন্ধ্যা হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠবে সৌরবাতিগুলো। আবার দিন হলেই নিভে যাবে। এর জন্য কোনো সুইচও লাগবে না। অবশ্য এর পরও একটি সুইচিং সিস্টেম থাকবে। ১২ ঘণ্টা আলো দেওয়ার জন্য এক-দুই ঘণ্টার রোদই হবে যথেষ্ট। তবে সারা দিন রোদ থাকলে টানা কয়েক দিন আলো দিতে পারবে। কাজেই একটানা তিন দিন বৃষ্টি হলেও রাতে স্বাভাবিক আলো থেকে বঞ্চিত হবে না নগরবাসী। একটি সোলার প্যানেলের গড় আয়ুষ্কাল হবে অন্তত পাঁচ বছর। পরীক্ষামূলকভাবে গৃহীত প্রকল্প থেকে ভালো ফল পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সব সড়ককে সোলার লাইটের আওতায় আনা হবে। এটা করা গেলে প্রতিবছর সড়ক বাতির জন্য ডিসিসির যে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়, সেই ব্যয় সাশ্রয় হবে।
ডিসিসির এক কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর ২৩ হাজার বিদ্যুতের খুঁটিতে বাতি জ্বালানোর জন্য প্রতিদিন আট-নয় মেগাওয়াট
বিদ্যুৎ খরচ হয়। এই বিদ্যুৎ দিয়ে দুই লাখ মানুষের বিদুতের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। বাংলাদেশে বিদ্যুতের যে সংকট, সেটা মোকাবিলায়ও এ উদ্যোগ ভালো কাজে আসবে।
ডিসিসির বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সোলার বেজড এলইডি টাইপ স্ট্রিট লাইটিং প্রকল্পের পরিচালক জাফর আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ফান্ডের (বিএমডিএফ) আওতায় সোলার লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কাজে বিদেশি দাতা সংস্থা অর্থায়ন করবে। এর আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য চীন ও ভারত থেকে দুটি প্রতিনিধিদল এসে যাচাই-বাছাই করে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়ে গেছে। পরে পরীক্ষামূলক দুটি পোলের ভালো ফল পাওয়ায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ কাজে সহযোগিতা করছে।
সোলার লাইট স্থাপনের দরপত্র আহ্বানকারী কর্মকর্তা ডিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ বিভাগ) মাহবুব আহমেদ বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত যে কেউ দরপত্র কিনতে পারবেন। ১৩ অক্টোবর দরপত্রগুলো খোলা হবে। আগামী আট মাসের মধ্যেই সড়কগুলোতে বাতি স্থাপন করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
ডিসিসির মেয়র সাদেক হোসেন খোকা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা আপাতত দেখব এটা ভালো ফল বয়ে আনে কি না। যদি বিদ্যুতের সাশ্রয় হয়, খরচ কমে যায়, তাহলে পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সব রাস্তায় সৌরবাতি সংযোজন করা হবে। কারণ প্রতিদিন আট-দশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হলে সেটা তো কম কথা নয়। আর বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের রাস্তায় সৌরবাতির ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের দেশেও তো অনেক বাড়িতে এখন সৌরবাতির ব্যবহার হয়। বাড়িতে ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেলে রাস্তায় বাতি জ্বালাতে ব্যবহার করা যাবে না কেন?'
অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিসিসির এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ভারত ও চীনের কয়েকটি এলাকার রাস্তায় সৌরবাতির ব্যবহার শুরু হয়েছে। কিন্তু এই বাতি সংযোজন অনেকটা ব্যয়বহুল। এ ছাড়া শুধু বাতি সংযোজন করে বসে থাকলে হবে না। এই শহরে ম্যানহোলের ঢাকনা হরহামেশা চুরি হয়। সাধারণ সড়কবাতি চুরি হয়। সেখানে দামি সোলার প্যানেল চুরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কাজেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও জরুরি।'
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে কাকরাইল মসজিদ থেকে আরামবাগের নটর ডেম কলেজ ইন্টারসেকশন পর্যন্ত এলাকার সড়কে সোলার বাতি সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে ডিসিসি। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা। ১২২টি পোলে দুটি করে মোট ২৪৪টি সৌরবাতি সংযোজন করা হবে। প্রতিটি সৌরবাতি হবে ২৫০ ওয়াটের। এই বাতির ওপরে থাকবে দুটি করে সোলার সিস্টেম প্যানেল। এই প্যানেলের কাজ হবে সূর্যের আলো থেকে সিলিকন সঞ্চয় করে তৈরি ইলেক্ট্রনকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা। সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে বাতি জ্বালানোর কাজে। দুটি বাতি জ্বালানোর জন্য থাকবে আলাদা দুটি প্যানেল। বাতির সঙ্গে তার দিয়ে যুক্ত থাকবে প্যানেল। এ দুটি প্যানেলের ওজন হবে প্রায় ১০ কেজি। এই প্যানেল স্থাপনের জন্য রাজপথে বিদ্যমান খুঁটিগুলোও পরিবর্তন করতে হবে। কারণ এগুলো সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য উপযুক্ত নয়। সোলার প্যানেল দুটি সারা দিন সূর্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করবে। সন্ধ্যা হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠবে সৌরবাতিগুলো। আবার দিন হলেই নিভে যাবে। এর জন্য কোনো সুইচও লাগবে না। অবশ্য এর পরও একটি সুইচিং সিস্টেম থাকবে। ১২ ঘণ্টা আলো দেওয়ার জন্য এক-দুই ঘণ্টার রোদই হবে যথেষ্ট। তবে সারা দিন রোদ থাকলে টানা কয়েক দিন আলো দিতে পারবে। কাজেই একটানা তিন দিন বৃষ্টি হলেও রাতে স্বাভাবিক আলো থেকে বঞ্চিত হবে না নগরবাসী। একটি সোলার প্যানেলের গড় আয়ুষ্কাল হবে অন্তত পাঁচ বছর। পরীক্ষামূলকভাবে গৃহীত প্রকল্প থেকে ভালো ফল পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সব সড়ককে সোলার লাইটের আওতায় আনা হবে। এটা করা গেলে প্রতিবছর সড়ক বাতির জন্য ডিসিসির যে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়, সেই ব্যয় সাশ্রয় হবে।
No comments