রাজনৈতিক দলের কাছেই অনুমতি চাইছে ইসি by কাজী হাফিজ
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থ-সম্পদের পরিমাণ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশের জন্য দলগুলোর কাছেই অনুমতি চাইছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত চিঠি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার ওই চিঠি দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। চিঠি পাওয়ার পর দলগুলো যদি অনুমতি না দেয়, তাহলে তাদের ওই আর্থিক হিসাব আগের বছরের মতো কমিশন সচিবালয়ের ফাইলে বন্দি থেকে যাবে। জনসাধারণ এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারবে না।
নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলো যদি অনুমতি না দেয়, তাহলে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী আমরা এ হিসাব প্রকাশ করতে পারি না। কারণ তথ্যটি আমাদের নয়, রাজনৈতিক দলের। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনে যদি এ হিসাব প্রকাশের বিধান থাকত, তা হলেও আমরা তা প্রকাশ করতে পারতাম। নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্যের হলফনামা প্রকাশের বিধান আছে বলেই আমরা তা প্রকাশ করতে পারি।'
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়ার আগে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে আইনি পরামর্শক ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলামের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক পরামর্শ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সরাসরি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেই তাদের তথ্য প্রকাশের জন্য অনুমতি চাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইসি।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তন প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'যেহেতু আইনি বাধার বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার, সেহেতু এ বিষয়ে আর কারো পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করছি না।'
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি প্রকাশ করতে নাই পারে, জনগণ যদি তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক তথ্য জানতে না পারে, তাহলে ওই হিসাব কেন নেওয়া হলো? নির্বাচন কমিশনের কাজ হওয়া উচিত জনস্বার্থে।
বদিউল আলম বলেন, 'জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়বদ্ধতা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই দল নিবন্ধন আইন হয়েছে এবং সে আইন অনুযায়ী দলগুলোর আর্থিক হিসাব নেওয়া হয়েছে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু সে হিসাব প্রকাশের বিষয়টি যদি দলগুলোর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে, তাহলে কমিশন সচিবালয়ের ফাইলে বন্দি করে রাখার জন্য এ হিসাব নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। আমাদের ধারণা, তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে ভুল যুক্তি দেখানো হচ্ছে। আইনটি ভালো করে পর্র্যালোচনা করে দেখা দরকার।'
উল্লেখ্য, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক হিসাব প্রকাশের বিষয়ে গত বছর ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এসব তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না। তথ্য অধিকার আইনও এ বিষয়ে কমিশনের ওপর প্রযোজ্য হবে না বলেই ধারণা ছিল নির্বাচন কমিশনারদের। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তখন বলা হয়েছিল, এসব তথ্য রাজনৈতিক দলগুলোর, কমিশনের নয়। কমিশন এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পক্ষ।
ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের একাধিকবার বলা হয়েছিল, এসব হিসাব পরীক্ষা করে দেখার পরই কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণ দেখিয়ে গত বছর জমা দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।
ইসি সচিবালয়ের তথ্য অনুসারে নিবন্ধিত ৩৮টি দলের মধ্যে গত ৩১ জুলাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ মোট ২১টি দল ইসির কাছে তাদের ২০১০ সালের (পঞ্জিকা বছরের) আর্থিক হিসাবের প্রতিবেদন জমা দেয়। পরের দিন ১ আগস্ট জমা দেয় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। আর ৩১ জুলাই ও পরের কয়েক দিনে এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, জাতীয় পার্টি-জেপি, গণতন্ত্রী পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, গণফ্রন্ট ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন। নির্বাচন কমিশন ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ালে সে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ছাড়া অন্য সব দল আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে সচিবালয়সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
২০১০ সালের ৩১ জুলাইয়ের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিএনপিসহ ২১টি রাজনৈতিক দল ২০০৯ সালের আর্থিক হিসাব জমা দেয়। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ায়। বর্ধিত সময়ে অন্য ১৬টি দলও তাদের হিসাব বিবরণী জমা দেয়। সবার শেষে জমা দেওয়া হয় ড. কাজী ফারুকের ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন।
উল্লেখ্য, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিধিমালার শর্ত অনুযায়ী নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়ার আগে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে আইনি পরামর্শক ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলামের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক পরামর্শ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সরাসরি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেই তাদের তথ্য প্রকাশের জন্য অনুমতি চাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইসি।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তন প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'যেহেতু আইনি বাধার বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার, সেহেতু এ বিষয়ে আর কারো পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করছি না।'
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি প্রকাশ করতে নাই পারে, জনগণ যদি তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক তথ্য জানতে না পারে, তাহলে ওই হিসাব কেন নেওয়া হলো? নির্বাচন কমিশনের কাজ হওয়া উচিত জনস্বার্থে।
বদিউল আলম বলেন, 'জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়বদ্ধতা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই দল নিবন্ধন আইন হয়েছে এবং সে আইন অনুযায়ী দলগুলোর আর্থিক হিসাব নেওয়া হয়েছে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু সে হিসাব প্রকাশের বিষয়টি যদি দলগুলোর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে, তাহলে কমিশন সচিবালয়ের ফাইলে বন্দি করে রাখার জন্য এ হিসাব নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। আমাদের ধারণা, তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে ভুল যুক্তি দেখানো হচ্ছে। আইনটি ভালো করে পর্র্যালোচনা করে দেখা দরকার।'
উল্লেখ্য, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক হিসাব প্রকাশের বিষয়ে গত বছর ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এসব তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না। তথ্য অধিকার আইনও এ বিষয়ে কমিশনের ওপর প্রযোজ্য হবে না বলেই ধারণা ছিল নির্বাচন কমিশনারদের। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তখন বলা হয়েছিল, এসব তথ্য রাজনৈতিক দলগুলোর, কমিশনের নয়। কমিশন এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পক্ষ।
ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের একাধিকবার বলা হয়েছিল, এসব হিসাব পরীক্ষা করে দেখার পরই কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণ দেখিয়ে গত বছর জমা দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।
ইসি সচিবালয়ের তথ্য অনুসারে নিবন্ধিত ৩৮টি দলের মধ্যে গত ৩১ জুলাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ মোট ২১টি দল ইসির কাছে তাদের ২০১০ সালের (পঞ্জিকা বছরের) আর্থিক হিসাবের প্রতিবেদন জমা দেয়। পরের দিন ১ আগস্ট জমা দেয় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। আর ৩১ জুলাই ও পরের কয়েক দিনে এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, জাতীয় পার্টি-জেপি, গণতন্ত্রী পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, গণফ্রন্ট ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন। নির্বাচন কমিশন ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ালে সে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ছাড়া অন্য সব দল আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে সচিবালয়সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
২০১০ সালের ৩১ জুলাইয়ের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিএনপিসহ ২১টি রাজনৈতিক দল ২০০৯ সালের আর্থিক হিসাব জমা দেয়। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ায়। বর্ধিত সময়ে অন্য ১৬টি দলও তাদের হিসাব বিবরণী জমা দেয়। সবার শেষে জমা দেওয়া হয় ড. কাজী ফারুকের ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন।
উল্লেখ্য, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিধিমালার শর্ত অনুযায়ী নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
No comments