সেই ওজাকির তিন সন্তান জাপানে? by আহমেদ জায়িফ
বাংলাদেশ
থেকে আইএসের (ইসলামিক স্টেট) সদস্য সংগ্রহ ও তাদের সিরিয়ায় পাঠানোর অন্যতম
হোতা সাইফুল্লাহ ওজাকির তিন সন্তানকে জাপানে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে খবর
পাওয়া গেছে। জাপানের ফুজি টেলিভিশনে আজ বুধবার প্রকাশিত এক খবরে এ তথ্য
জানানো হয়। তবে ওই প্রতিবেদনে জাপান সরকারের আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি উল্লেখ
করা হয়নি।
ফুজি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গত ১৮ মে সাইফুল্লাহ ওজাকির তিন সন্তানকে স্থানীয় নারিতা বিমানবন্দর দিয়ে জাপানে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে তারা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, কয়েকজন কর্মকর্তা ওজাকির তিন সন্তানের ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্র গাড়িতে তুলছেন।
সাইফুল্লাহ ওজাকি মাস দু-এক আগে কুর্দিস্তান কাউন্টার টেররিজম গ্রুপের (সিটিজি) কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি ইরাকের কুর্দিস্তানের সোলাইমানিয়ার একটি কারাগারে বন্দী রয়েছেন। এ নিয়ে গত সোমবার প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই ওজাকির তিন সন্তানকে জাপানে ফিরিয়ে আনার সংবাদ জানা গেল।
বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সম্প্রতি ওজাকি সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে। সংস্থাটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, সিরিয়ার বাঘুজে আইএসের শেষ ঘাঁটির পতনের পর অন্তত নয়জন বাংলাদেশি জঙ্গি আটক বা আত্মসমর্পণের খবর পেয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। ওজাকি ছাড়া বাকি দুজন হলেন জুনায়েদ হাসান খান ও তাহমিদ শাফি। তাঁরা মার্কিন-সমর্থিত বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) হাতে আটক হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সম্প্রতি কুর্দিস্তান কাউন্টার টেররিজম গ্রুপ (সিটিজি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে পাঠানো একটি বার্তা তাঁদের হাতে পৌঁছায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সাইফুল্লাহ ওজাকি গত ১৫ মার্চ সিরিয়ার বাঘুজ শহরে কুর্দি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এরপর তাঁকে উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তানের সোলাইমানিয়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
আরও জানা গেছে, ওজাকি ২০১৫ সালে সপরিবার জাপান থেকে বুলগেরিয়া হয়ে সিরিয়ায় যান। পরে এক বিমান হামলায় তাঁর জাপানি স্ত্রী এবং দুই সন্তান মুহাম্মাদ ও উম্মে সিরিয়ায় নিহত হন। তখন জানা গিয়েছিল যে, ওজাকির আরও তিন সন্তান ঈসা (৭), ইউসুফ (৩) ও সারাহ (১) এখনো সিরিয়ায় আছে। কিন্তু এখন জাপানের ফুজি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ওজাকির তিন সন্তানকে জাপানে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল্লাহ ওজাকি আগে হিন্দুধর্মাবলম্বী ছিলেন। নাম ছিল সুজিত দেবনাথ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কড়ই গ্রামের জনার্দন দেবনাথের ছেলে তিনি। ২০০১ সালে সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ২০০২ সালে জাপান সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানকার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। বাবার ধারণা, জাপানে যাওয়ার পর সুজিত ধর্মান্তরিত হয়ে সাইফুল্লাহ ওজাকি নাম নেন। তিনি জাপানের নাগরিকত্ব লাভ করেন এবং এক জাপানি নারীকে বিয়ে করে সেখানেই সংসার শুরু করেন।
জাপানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র অনুযায়ী, ২০১১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার পর রিতসুমেইকান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় যোগ দেন ওজাকি। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে অনুপস্থিত থাকায় ওই বছরের মার্চে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করে।
জঙ্গি বিষয়ে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ থেকে যাঁরা সিরিয়া গেছেন, তাঁদের বড় অংশই গেছেন এই সাইফুল্লাহ ওজাকির মাধ্যমে, যাঁরা মূলত বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজে পড়ালেখা করেছেন।
ওজাকির হাত ধরে ঠিক কতজন বাংলাদেশি আইএসে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিরিয়া গেছেন, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মাধ্যমে সিরিয়ায় গিয়ে পরে দেশে ফিরে আসা মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও প্রকৌশলী গাজী কামরুস সালাম ওরফে সোহান ২০১৬ সালে দেশে ফিরে আটক হন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গাজী কামরুস সালাম বলেছিলেন, তিনি ছাড়াও সিলেট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মো. মহিবুর রহমান ও রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মেরিন ইঞ্জিনিয়ার নজিবুল্লাহ আনসারী সিরিয়ায় গেছেন ওজাকির মাধ্যমে।
ফুজি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গত ১৮ মে সাইফুল্লাহ ওজাকির তিন সন্তানকে স্থানীয় নারিতা বিমানবন্দর দিয়ে জাপানে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে তারা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, কয়েকজন কর্মকর্তা ওজাকির তিন সন্তানের ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্র গাড়িতে তুলছেন।
সাইফুল্লাহ ওজাকি মাস দু-এক আগে কুর্দিস্তান কাউন্টার টেররিজম গ্রুপের (সিটিজি) কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি ইরাকের কুর্দিস্তানের সোলাইমানিয়ার একটি কারাগারে বন্দী রয়েছেন। এ নিয়ে গত সোমবার প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই ওজাকির তিন সন্তানকে জাপানে ফিরিয়ে আনার সংবাদ জানা গেল।
বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সম্প্রতি ওজাকি সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে। সংস্থাটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, সিরিয়ার বাঘুজে আইএসের শেষ ঘাঁটির পতনের পর অন্তত নয়জন বাংলাদেশি জঙ্গি আটক বা আত্মসমর্পণের খবর পেয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। ওজাকি ছাড়া বাকি দুজন হলেন জুনায়েদ হাসান খান ও তাহমিদ শাফি। তাঁরা মার্কিন-সমর্থিত বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) হাতে আটক হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সম্প্রতি কুর্দিস্তান কাউন্টার টেররিজম গ্রুপ (সিটিজি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে পাঠানো একটি বার্তা তাঁদের হাতে পৌঁছায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সাইফুল্লাহ ওজাকি গত ১৫ মার্চ সিরিয়ার বাঘুজ শহরে কুর্দি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এরপর তাঁকে উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তানের সোলাইমানিয়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
আরও জানা গেছে, ওজাকি ২০১৫ সালে সপরিবার জাপান থেকে বুলগেরিয়া হয়ে সিরিয়ায় যান। পরে এক বিমান হামলায় তাঁর জাপানি স্ত্রী এবং দুই সন্তান মুহাম্মাদ ও উম্মে সিরিয়ায় নিহত হন। তখন জানা গিয়েছিল যে, ওজাকির আরও তিন সন্তান ঈসা (৭), ইউসুফ (৩) ও সারাহ (১) এখনো সিরিয়ায় আছে। কিন্তু এখন জাপানের ফুজি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ওজাকির তিন সন্তানকে জাপানে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল্লাহ ওজাকি আগে হিন্দুধর্মাবলম্বী ছিলেন। নাম ছিল সুজিত দেবনাথ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কড়ই গ্রামের জনার্দন দেবনাথের ছেলে তিনি। ২০০১ সালে সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ২০০২ সালে জাপান সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানকার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। বাবার ধারণা, জাপানে যাওয়ার পর সুজিত ধর্মান্তরিত হয়ে সাইফুল্লাহ ওজাকি নাম নেন। তিনি জাপানের নাগরিকত্ব লাভ করেন এবং এক জাপানি নারীকে বিয়ে করে সেখানেই সংসার শুরু করেন।
জাপানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র অনুযায়ী, ২০১১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার পর রিতসুমেইকান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় যোগ দেন ওজাকি। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে অনুপস্থিত থাকায় ওই বছরের মার্চে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করে।
জঙ্গি বিষয়ে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ থেকে যাঁরা সিরিয়া গেছেন, তাঁদের বড় অংশই গেছেন এই সাইফুল্লাহ ওজাকির মাধ্যমে, যাঁরা মূলত বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজে পড়ালেখা করেছেন।
ওজাকির হাত ধরে ঠিক কতজন বাংলাদেশি আইএসে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিরিয়া গেছেন, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মাধ্যমে সিরিয়ায় গিয়ে পরে দেশে ফিরে আসা মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও প্রকৌশলী গাজী কামরুস সালাম ওরফে সোহান ২০১৬ সালে দেশে ফিরে আটক হন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গাজী কামরুস সালাম বলেছিলেন, তিনি ছাড়াও সিলেট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মো. মহিবুর রহমান ও রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মেরিন ইঞ্জিনিয়ার নজিবুল্লাহ আনসারী সিরিয়ায় গেছেন ওজাকির মাধ্যমে।
No comments