ডলার সংকটের নেপথ্যে-
বৈদেশিক
লেনদেনের অন্যতম মুদ্রা ডলারের সংকটে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে দাম। চলতি
অর্থবছরের শুরুর দিকে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা ৫০ পয়সায়, যা এখন
বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৮৬ টাকার ওপরে। সেই হিসাবে গত ৯ মাসে ডলারের দাম বেড়েছে
প্রায় ৫ টাকা। এতে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে টাকা। শক্তিশালী হচ্ছে ডলার।
হঠাৎ করে ডলারের বাজারে এই অস্থিরতার পেছনে বড় কারণ হিসেবে পাচারের
বিষয়টিকে সামনে আনছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, নির্বাচন সামনে রেখে
অনেকে নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদেশে অর্থ পাচার করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে
দেশীয় মুদ্রা টাকাকে ডলারে রূপান্তর করে পাচার করেন।
তাদের মতে, বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে আমদানি ব্যয়। অথচ দেশে বেসরকারি বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে। এটিই রহস্যজনক। মূলত এই আমদানির নাম করে দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সামপ্রতিক সময়ে দেশের আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এখানে টাকা পাচারের যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনী বছরে টাকা পাচার বাড়ে। কারণ, দেশে টাকা রাখাকে নিরাপদ মনে করেন না সম্পদশালীরা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হলে তাদের জন্য সমস্যা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে টাকা পাচার রোধে তৎপরতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন বছরের শুরু থেকেই ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ডলারের স্বাভাবিক সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়ছে। এছাড়া বিদেশি ও বাংলাদেশি প্রবাসীরা দেশে আসার পরিমাণ হ্রাস হওয়ায় ডলার সংকটের একটি কারণ বলে জানান তারা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে কথা বলে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি ব্যয়ের চাপ বেড়ে যাওয়া, তুলনামূলক রপ্তানি ও রেমিটেন্স কমে যাওয়া, অসাধু ব্যবসায়ীদের ডলার আটকে রাখা ও যুক্তরাষ্ট্রের ডলার সংগ্রহ বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে দাম বাড়ছে ডলারের।
বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য মতে, ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে এখন নগদ ডলারের মূল্য সর্বোচ্চ ৮৬ টাকা ৫০ পয়সায় উঠেছে। আর আমদানি পর্যায়ে দায় মেটাতে নিয়েছে ৮৩ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে ৮৩ টাকার ৮৫ পয়সা।
বসুন্ধরা শপিং মলে অবস্থিত মিয়া মানি একচেঞ্জ হাউজের স্বত্বাধিকারী মো. মহসিন আলী বলেন, আমরা এখন ডলার প্রতি ৮৫ টাকা ৩০ পয়সা করে রাখছি। আর বিক্রি করছি ৮৬ টাকা ৪০ পয়সা। তার মতে, দেশে বিদেশি আসা কমে গেলে বা প্রবাসীরা কম আসলে ডলারের কিছুটা সংকট দেখা দেয়। তবে ডলারের দাম বাড়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই ভালোভাবে বলতে পারবেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কেউ পাসপোর্ট নিয়ে আসলে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ডলার দিয়ে টাকা নিতে পারেন।
বসুন্ধরা শপিং মলে ডলার বিক্রি করতে আসা নাসিদ কামাল বলেন, বড় ভাই বিদেশ থেকে এসেছেন। ডলার প্রতি ৮৫.৩০ পয়সা করে পেয়েছি। তার মতে, এক হাজার ডলার বিক্রি করে ৬ মাস আগের চেয়ে প্রায় ৩ হাজার টাকা বেশি পেয়েছেন বলে জানালেন।
একই রেটের কয়েক পয়সা বেশি রাখছে পলটনস্থ মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ রুপালি মানি এক্সচেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আরিফিন বলেন, ডলারপ্রতি টাকা বেশি পাওয়া গেলে, হুন্ডির ওপর নির্ভরতা কমে যায়। মানুষ তখন বৈধ পথে টাকা পাঠাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এখন সেটাই হচ্ছে।
মানি এক্সচেঞ্জের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী ডলার না ছাড়ায় সংকট বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করছে, সেটি চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া যে পরিমাণ আমদানি এলসি খোলা হয়েছে, সে পরিমাণ ডলার আমাদের হাতে নেই। এজন্য প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট দেখা দিচ্ছে। তবে ডলারের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বাজারের পরিস্থিতি ও চাহিদার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে।
মানি এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তারা বলেন, টাকার দাম কমে যাচ্ছে মূলত ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডলারপ্রতি টাকার দাম আশির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটা ৭৭ টাকার নিচেও ছিল দীর্ঘদিন। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে এটা বাড়তে শুরু করে। তবে ২০১৮ সালের শুরু থেকেই এটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ৬ মাসে ডলারপ্রতি টাকা বেড়েছে ৩ টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে আমদানি এলসি খোলা হয়েছিল ১ হাজার ১১৭ কোটি ডলারের। কিন্তু চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ১ হাজার ৩১৪ কোটি ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে। একইভাবে এ সময়ে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের পরিমাণ না বাড়ায় ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট তীব্র হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ আমদানি এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, সে পরিমাণ রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে খোলা এলসিগুলো আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে। ফলে বাজারে ডলার সংকট আরো তীব্র হবে।
তাদের মতে, বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে আমদানি ব্যয়। অথচ দেশে বেসরকারি বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে। এটিই রহস্যজনক। মূলত এই আমদানির নাম করে দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সামপ্রতিক সময়ে দেশের আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এখানে টাকা পাচারের যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনী বছরে টাকা পাচার বাড়ে। কারণ, দেশে টাকা রাখাকে নিরাপদ মনে করেন না সম্পদশালীরা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হলে তাদের জন্য সমস্যা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে টাকা পাচার রোধে তৎপরতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন বছরের শুরু থেকেই ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ডলারের স্বাভাবিক সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়ছে। এছাড়া বিদেশি ও বাংলাদেশি প্রবাসীরা দেশে আসার পরিমাণ হ্রাস হওয়ায় ডলার সংকটের একটি কারণ বলে জানান তারা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে কথা বলে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি ব্যয়ের চাপ বেড়ে যাওয়া, তুলনামূলক রপ্তানি ও রেমিটেন্স কমে যাওয়া, অসাধু ব্যবসায়ীদের ডলার আটকে রাখা ও যুক্তরাষ্ট্রের ডলার সংগ্রহ বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে দাম বাড়ছে ডলারের।
বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য মতে, ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে এখন নগদ ডলারের মূল্য সর্বোচ্চ ৮৬ টাকা ৫০ পয়সায় উঠেছে। আর আমদানি পর্যায়ে দায় মেটাতে নিয়েছে ৮৩ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে ৮৩ টাকার ৮৫ পয়সা।
বসুন্ধরা শপিং মলে অবস্থিত মিয়া মানি একচেঞ্জ হাউজের স্বত্বাধিকারী মো. মহসিন আলী বলেন, আমরা এখন ডলার প্রতি ৮৫ টাকা ৩০ পয়সা করে রাখছি। আর বিক্রি করছি ৮৬ টাকা ৪০ পয়সা। তার মতে, দেশে বিদেশি আসা কমে গেলে বা প্রবাসীরা কম আসলে ডলারের কিছুটা সংকট দেখা দেয়। তবে ডলারের দাম বাড়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই ভালোভাবে বলতে পারবেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কেউ পাসপোর্ট নিয়ে আসলে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ডলার দিয়ে টাকা নিতে পারেন।
বসুন্ধরা শপিং মলে ডলার বিক্রি করতে আসা নাসিদ কামাল বলেন, বড় ভাই বিদেশ থেকে এসেছেন। ডলার প্রতি ৮৫.৩০ পয়সা করে পেয়েছি। তার মতে, এক হাজার ডলার বিক্রি করে ৬ মাস আগের চেয়ে প্রায় ৩ হাজার টাকা বেশি পেয়েছেন বলে জানালেন।
একই রেটের কয়েক পয়সা বেশি রাখছে পলটনস্থ মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ রুপালি মানি এক্সচেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আরিফিন বলেন, ডলারপ্রতি টাকা বেশি পাওয়া গেলে, হুন্ডির ওপর নির্ভরতা কমে যায়। মানুষ তখন বৈধ পথে টাকা পাঠাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এখন সেটাই হচ্ছে।
মানি এক্সচেঞ্জের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী ডলার না ছাড়ায় সংকট বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করছে, সেটি চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া যে পরিমাণ আমদানি এলসি খোলা হয়েছে, সে পরিমাণ ডলার আমাদের হাতে নেই। এজন্য প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট দেখা দিচ্ছে। তবে ডলারের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বাজারের পরিস্থিতি ও চাহিদার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে।
মানি এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তারা বলেন, টাকার দাম কমে যাচ্ছে মূলত ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডলারপ্রতি টাকার দাম আশির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটা ৭৭ টাকার নিচেও ছিল দীর্ঘদিন। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে এটা বাড়তে শুরু করে। তবে ২০১৮ সালের শুরু থেকেই এটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ৬ মাসে ডলারপ্রতি টাকা বেড়েছে ৩ টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে আমদানি এলসি খোলা হয়েছিল ১ হাজার ১১৭ কোটি ডলারের। কিন্তু চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ১ হাজার ৩১৪ কোটি ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে। একইভাবে এ সময়ে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের পরিমাণ না বাড়ায় ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট তীব্র হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ আমদানি এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, সে পরিমাণ রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে খোলা এলসিগুলো আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে। ফলে বাজারে ডলার সংকট আরো তীব্র হবে।
No comments