হঠাৎ বৃষ্টিতে লবণ উৎপাদন বন্ধ
কক্সবাজারে গতকাল সোমবার সকালের হঠাৎ বৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ১০ হাজার একর জমির লবণ উৎপাদন। বিসিকের কক্সবাজার লবণ উন্নয়ন প্রকল্পের উপমহাব্যবস্থাপক মো. আবছার উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, গতকাল সকাল থেকে কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে অনেক লবণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কী পরিমাণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা মঙ্গলবার বলা যাবে। এখন জরিপকাজ চলছে। স্থানীয় সূত্রমতে, মহেশখালীতে পাঁচ হাজার একর, কক্সবাজার সদর উপজেলায় চার হাজার এবং পেকুয়া ও চকরিয়ায় প্রায় এক হাজার একর লবণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মাঠ লবণ উৎপাদনের উপযোগী করতে সময় লাগবে ৮ থেকে ১০ দিন। স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃষ্টিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের নয়াপাড়ার কয়েক শ একর জমির লবণ উৎপাদন বন্ধ গেছে। স্থানীয় লবণচাষি আবদুর রহমান বলেন, তাঁর উৎপাদিত প্রায় ২৬ মণ লবণ মাঠে রাখা ছিল। সকালের বৃষ্টিতে সব লবণ গলে গেছে।
মহেশখালীর কুতুবজোম, কালারমারছড়া, হোয়ানক ও বড় মহেশখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার লবণ মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। কুতুবজোমের লবণচাষি আবুল মনছুর বলেন, বৃষ্টির পানি সরিয়ে মাঠ লবণ উৎপাদনের উপযোগী করে তুলতে সময় লাগবে অন্তত আট দিন। কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলি এলাকার লবণচাষি নুরুল আলম বলেন, ‘প্রায় তিন মাস ধরে পাঁচ একর জমিতে লবণ চাষ করছি। গত রোববার পর্যন্ত প্রায় এক হাজার মণ লবণ উৎপাদিত হয়েছে। আর মাঠে উত্তোলনের উপযোগী ছিল আরও এক শ মণ লবণ। কিন্তু সকালে ভারী বৃষ্টিতে সব লবণ গলে গেছে।’ বাংলাদেশ লবণ চাষি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী বলেন, অন্তত পাঁচ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বিসিক সূত্র জানায়, কক্সবাজারের সাত উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদিত হচ্ছে। চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ লাখ মেট্রিক টন। ৩ মার্চ পর্যন্ত উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
No comments