সিরীয় যুদ্ধের শেষ কোথায়?
সিরিয়ার আলেপ্পোতে আহত ৫ বছরের নির্বাক শিশুর ছবি হতবাক করেছে গোটা বিশ্বকে। অ্যাম্বুলেন্সে বসা অসহায় ওমরান দাকনিশের ধূলিধূসরিত রক্তাক্ত ছবি-ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। রক্তমাখা মুখে ছোট্ট হাতের পরশে আঙুলে লেগে যাওয়া রক্ত দেখে অবাক হয়েছে শিশুটি। অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ারে তা মুছে দিয়েছে। এর আগে তুর্কি সৈকতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা আয়লানের নিথর দেহ। এমন হাজারও শিশু অজান্তে রক্ত ঝরিয়েছে সিরিয়ায়। কিন্তু এর মাধ্যমেও মুছবে না দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের রেশ। পাঁচটি কারণে শিগগিরই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থামবে না।
অসংস্কারযোগ্য জাতি বিভক্তি : ২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ যে শেষ পর্যন্ত এ অবস্থায় পৌঁছবে তা সুদূর কল্পনাতেও ছিল না। ‘আরব বসন্ত’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে যারা আসাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছিলেন তারা হয়তো এ পরিণতির কথা ভাবেননি। ক্ষমতাসীন আলাওয়াতি সংখ্যালঘুদের (যাদের সহায়তা দেয় ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থীরা) বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামে দেশটির প্রধান সুন্নি গোষ্ঠী। আলাওয়াতি সংখ্যালঘুরা পরে কুর্দি, খ্রিস্টিান ও অন্যান্য সুন্নির সঙ্গে জোট গঠন করে। অতএব শিয়া-সুন্নির ঐতিহাসিক বিভাজন থেকে রক্তপাত শুরু হতে সময় লাগেনি। সেই বিভাজনের দু’দিকে পশ্চিম এশিয়ার দুই শক্তিধর ইরান আর সৌদি আরব। ফলে দেশটির পশ্চিমাঞ্চল দখলে রয়েছে কুর্দি বাহিনীর হাতে আর পূর্বাঞ্চল বিদ্রোহী সুন্নিদের হাতে।
উভয়পক্ষই শক্তিশালী : সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সৈন্য স্বল্পতার কারণে আলেপ্পোর পুরা নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ। এটাই বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চলার একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করেন ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার ইন ওয়াশিংটনের সিনিয়র বিশ্লেষক ক্রিস হারমার। তিনি আরও বলেন, আরব সেনাদের অপ্রতুল সৈন্য থাকায় আলেপ্পো দখল নিতে পারছে না। ফলে বিদ্রোহীরা পাল্টা আক্রমণ করতে পারছে। এছাড়া বিদ্রোহীরা নাছোড়বান্দা, আসাদ সমর্থিত রাশিয়ার বিমান হামলা ঠেকাতে না পারলেও জেদের জোরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন ক্রিস।
বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ : ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় বিমান ঘাঁটি থেকে রাশিয়ার বিমান হামলা সিরিয়ায় আসাদের বাহিনীকে সাহায্য করছে। আদতে এ দুই দেশই সিরিয়াকে সামরিক সখ্য দিয়ে সাহায্য করছে। ইরান শিয়া সামরিকদে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক ও লেবানন থেকে অর্থ ও সামরিক রসদ জুগিয়েছে। অন্যদিকে জর্ডান, সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত ও তুরস্কের কাছ থেকে বিদ্রোহীরা সহায়তা পেয়েছে। লেবানন, সিরিয়া ও আরবের কূটনীতিক রায়ান ক্রকার বলেন, সুন্নি নিয়ন্ত্রিত সৌদি আরব ও শিয়া অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে ধর্মীয় বিরোধ এ অঞ্চলের অন্যতম সমস্যা।
আল কায়দা ও আইএস সম্পৃক্ততা : সংঘাতের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আসাদের ওপর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই আইএসের উত্থান ও সিরিয়ার বৃহৎ অংশ দখলে নেয়ায় বিদ্রোহী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা ও নুসরা ফ্রন্টের সঙ্গে জোট বাঁধে। ফলে একদিকে আসাদবিরোধী নিরপেক্ষ শক্তিকে সমর্থন (অর্থ ও অস্ত্র জুগিয়ে)। অন্যদিকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোট তৈরি যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বিমুখী নীতিতে সিদ্ধান্ত নিতে কঠিন হয়ে পড়ে।
আন্তর্জাতিক চুক্তি কাজে আসছে না : কূটনীতির অন্তহীন কূটকচালের পরও সিরিয়ায় কোনো সমাধান সূত্রের দেখা মিলছে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার সমর্থনপুষ্টরা, সিরিয়া, রাশিয়া ও ইরানের প্রতিনিধিরা জেনেভায় রাজনৈতিক সমাধানের জন্য বসলেও কোনো কাজে আসেনি। জাতিসংঘের সিরীয় দূত স্টেফান ডি মিসতুরা বহু যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ সহায়তায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়েছে। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও তার মিত্ররা আসাদকে টিকিয়ে রাখতে চায়। অন্যদিকে বিদ্রোহীরা ও যুক্তরাষ্ট্র আসাদকে সরাতে চায়।
অসংস্কারযোগ্য জাতি বিভক্তি : ২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ যে শেষ পর্যন্ত এ অবস্থায় পৌঁছবে তা সুদূর কল্পনাতেও ছিল না। ‘আরব বসন্ত’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে যারা আসাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছিলেন তারা হয়তো এ পরিণতির কথা ভাবেননি। ক্ষমতাসীন আলাওয়াতি সংখ্যালঘুদের (যাদের সহায়তা দেয় ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থীরা) বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামে দেশটির প্রধান সুন্নি গোষ্ঠী। আলাওয়াতি সংখ্যালঘুরা পরে কুর্দি, খ্রিস্টিান ও অন্যান্য সুন্নির সঙ্গে জোট গঠন করে। অতএব শিয়া-সুন্নির ঐতিহাসিক বিভাজন থেকে রক্তপাত শুরু হতে সময় লাগেনি। সেই বিভাজনের দু’দিকে পশ্চিম এশিয়ার দুই শক্তিধর ইরান আর সৌদি আরব। ফলে দেশটির পশ্চিমাঞ্চল দখলে রয়েছে কুর্দি বাহিনীর হাতে আর পূর্বাঞ্চল বিদ্রোহী সুন্নিদের হাতে।
উভয়পক্ষই শক্তিশালী : সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সৈন্য স্বল্পতার কারণে আলেপ্পোর পুরা নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ। এটাই বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চলার একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করেন ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার ইন ওয়াশিংটনের সিনিয়র বিশ্লেষক ক্রিস হারমার। তিনি আরও বলেন, আরব সেনাদের অপ্রতুল সৈন্য থাকায় আলেপ্পো দখল নিতে পারছে না। ফলে বিদ্রোহীরা পাল্টা আক্রমণ করতে পারছে। এছাড়া বিদ্রোহীরা নাছোড়বান্দা, আসাদ সমর্থিত রাশিয়ার বিমান হামলা ঠেকাতে না পারলেও জেদের জোরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন ক্রিস।
বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ : ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় বিমান ঘাঁটি থেকে রাশিয়ার বিমান হামলা সিরিয়ায় আসাদের বাহিনীকে সাহায্য করছে। আদতে এ দুই দেশই সিরিয়াকে সামরিক সখ্য দিয়ে সাহায্য করছে। ইরান শিয়া সামরিকদে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক ও লেবানন থেকে অর্থ ও সামরিক রসদ জুগিয়েছে। অন্যদিকে জর্ডান, সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত ও তুরস্কের কাছ থেকে বিদ্রোহীরা সহায়তা পেয়েছে। লেবানন, সিরিয়া ও আরবের কূটনীতিক রায়ান ক্রকার বলেন, সুন্নি নিয়ন্ত্রিত সৌদি আরব ও শিয়া অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে ধর্মীয় বিরোধ এ অঞ্চলের অন্যতম সমস্যা।
আল কায়দা ও আইএস সম্পৃক্ততা : সংঘাতের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আসাদের ওপর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই আইএসের উত্থান ও সিরিয়ার বৃহৎ অংশ দখলে নেয়ায় বিদ্রোহী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা ও নুসরা ফ্রন্টের সঙ্গে জোট বাঁধে। ফলে একদিকে আসাদবিরোধী নিরপেক্ষ শক্তিকে সমর্থন (অর্থ ও অস্ত্র জুগিয়ে)। অন্যদিকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোট তৈরি যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বিমুখী নীতিতে সিদ্ধান্ত নিতে কঠিন হয়ে পড়ে।
আন্তর্জাতিক চুক্তি কাজে আসছে না : কূটনীতির অন্তহীন কূটকচালের পরও সিরিয়ায় কোনো সমাধান সূত্রের দেখা মিলছে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার সমর্থনপুষ্টরা, সিরিয়া, রাশিয়া ও ইরানের প্রতিনিধিরা জেনেভায় রাজনৈতিক সমাধানের জন্য বসলেও কোনো কাজে আসেনি। জাতিসংঘের সিরীয় দূত স্টেফান ডি মিসতুরা বহু যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ সহায়তায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়েছে। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও তার মিত্ররা আসাদকে টিকিয়ে রাখতে চায়। অন্যদিকে বিদ্রোহীরা ও যুক্তরাষ্ট্র আসাদকে সরাতে চায়।
No comments