সিন্ধুর নির্বাচনে একজন বিন্দিয়া
পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে বৈচিত্র্যতার শেষ নেই। ধর্মীয় নেতা, শ্রমিক নেতা থেকে শুরু করে ভাববাদীরা পর্যন্ত লড়াই করছেন নির্বাচনে। বাদ যাননি বিন্দিয়া রানাও। তাঁর মতো আরও কয়েকজন হিজড়া নির্বাচনে লড়াই করছেন। প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতার পালাবদলের এই নির্বাচন হয়তো এ কারণেও পাকিস্তানিদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অথচ এই পাকিস্তানেই হিজড়ারা উপহাসের পাত্র। সমাজের অচ্ছুত লোক হিসেবে প্রায়ই হামলার শিকার হন তাঁরা। জনবহুল বন্দরনগর করাচির ছোট্ট একটি অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস বিন্দিয়ার। সিন্ধুর প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী তিনি। বিন্দিয়া বলেন, ‘হিজড়ারা প্রথম পরিবার থেকেই বঞ্চনার শিকার হন। আসলে লোকজন আমাদের নিয়ে বাজে যেসব মন্তব্য করে তা সহ্য করা কঠিন।’ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ২০১১ সালে ঘোষণা দেন, হিজড়ারাও জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন। এবার অন্তত চারজন হিজড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পাকিস্তান ও প্রতিবেশী ভারতে হিজড়ারা প্রায়ই হামলা ও ধর্ষণের শিকার হন। এসব নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে চান বিন্দিয়া (৪৫)। আগে নর্তকী হিসেবে কাজ করলেও এখন সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। পাঁচ বছর আগের একটি ছোট্ট ঘটনা বিন্দিয়ার জীবন বদলে দিয়েছে। ক্যানসারে আক্রান্ত এক হিজড়ার সাহায্যার্থে অর্থ তোলার উদ্দেশে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তপ্ত গরমে সারা দিন সাহায্য চেয়েও মাত্র এক মার্কিন ডলার পান। নির্বাচনে বিন্দিয়ার জয়ের সম্ভাবনা কম। একদিকে পাকিস্তানে হিজড়াদের করুণ বাস্তবতা, অন্যদিকে নির্বাচনী তহবিলের অভাবে ঠিকঠাকমতো প্রচারণা চালাতে পারেননি তিনি। তা ছাড়া তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের সাবেক এক মন্ত্রীও আছেন।
No comments