২০১৬ থেকে আসা রোহিঙ্গারাই শুধু ফেরত যাবে
যৌক্তিক
সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করতে দুইপক্ষ সম্মত হয়েছে বলে
জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম মাহমুদ আলী। গত ২২ থেকে ২৩শে নভেম্বর
মিয়ানমারে দ্বিপক্ষীয় সফর শেষে গতকাল দেশে ফেরেন মন্ত্রী। সফরকালে
বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে
আলোচনা ও একটি দ্বিপক্ষীয় আরেঞ্জমেন্ট
স্বাক্ষরিত হয়। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার গতবছর ৯ই অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৫শে আগস্টের পরে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নেবে। এই চুক্তির অধীনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর গত বছরের ৯ই অক্টোবরের আগে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
বর্তমান চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। মন্ত্রী আরো জানান, মিয়ানমার সফরের আগে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর নির্মাণে তিনি ভারত ও চীন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা এই ক্ষেত্রে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। মিয়ানমার সরকারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে এবং মিয়ানমার সরকার এ বিষয়ে রাজি হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রত্যাবাসনকারীদের সাবেক আবাসস্থল বা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাছাকাছি কোনো স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের আশ্রয়স্থলে সীমিত সময়ের জন্য রাখা হবে। মন্ত্রী জানান, এ সফরে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসন চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ২২শে নভেম্বর পূর্বাহ্ণে দু’দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ আলোচনা করেন। একই দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী খসড়াটি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনা করে। দীর্ঘ আলোচনা শেষে খসড়াটি চূড়ান্ত হয়। চুক্তিটি বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাক্ষরিত হয়। স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার গত বছরের ৯ই অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৫শে আগস্টের পরে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নেবে। এই চুক্তির অধীনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর চলতি বছরের ৯ই অক্টোবরের আগে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। বর্তমান চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ লক্ষ্যে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে এবং টার্মস অব রেফারেন্স চূড়ান্ত করা হবে। মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর রিপ্যাট্রিয়েশন’ নামে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ এই চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবে। দু’পক্ষই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআর-এর সহায়তা নিতে সম্মত হয়েছে। মিয়ানমার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত সময়ে ইউএনএইচসিআরকে প্রক্রিয়ায় যুক্ত করবে। চুক্তি অনুযায়ী জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এ সফরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি’র সঙ্গে বৈঠক করেন এএইচএম মাহমুদ আলী। বৈঠকে শিক্ষা, জ্বালানি, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক যোগাযোগ কাঠামো স্থাপনে বিসিআইএম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার বিষয়ে দু’দেশ একমত পোষণ করেছে। এ সফরকালে নাফ নদের স্থায়ী সীমানা নির্ধারণের উপর ২০০৭-এ চূড়ান্তকৃত একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। তাছাড়া ১৯৯৮ সালে স্বাক্ষরিত নাফ নদের উত্তরে স্থলভাগের সীমানা নির্ধারণ চুক্তির ‘‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেটিফিকেশন” বিনিময় করা হয়। এছাড়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য বাংলাদেশের উপহার হিসেবে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স মিয়ানমারের সমাজসেবা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, এটা একটা প্রাথমিক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে সবকিছু হবে না। এর পরে আরো পদক্ষেপ আছে। আমরা আশা করছি, তাড়াতাড়ি সেগুলো হবে। এখন দু’মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আজকে যদি কিছু ফেরত যায় তাহলে বেশিরভাগ গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে তারা কোথায় যাবে? এটা বাস্তবে তো সম্ভব না। ভারত এবং চীন সরকারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাদের বাড়িঘর স্থাপনে যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। দুই দেশই তাদের সম্মতি জানিয়েছেন। মিয়ানমারের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনায় বলেছি ভারত এবং চীন সহায়তায় রাজি আছে। মিয়ানমারের মন্ত্রী সোয়ে তিনি বলেছেন, তারা এতে সম্মত। শিগগিরই ওই দুই দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন। আমিও তাদের বলবো যেন তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেন। চুক্তির ধরন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে তারা বলেছিল সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হবে। পরে তারাই আবার বলেছে অ্যারেঞ্জমেন্ট হবে। এটাতে কিছু যায় আসে না। এটা মানার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইন থাকার পরেও তা লঙ্ঘন হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোনো দেশ বা রাষ্ট্র এটা অনুসরণ করে কিনা। তারপরও যুদ্ধ হচ্ছে।
উপযুক্ত সময় একটি ভেক টার্ম কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন- এটা অবশ্যই ফেক টার্ম। এটার টাইম ফ্রেম দেয়া যায় না। এরকম টাইম ফ্রেম দিয়ে কোনো লাভও নেই। আমরা চেষ্টা করব। গোটা পৃথিবী আমাদের সঙ্গে। তারা বলেছে, এটা শেষ করতে হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই চুক্তিকে হাস্যকর বলেছে। এবিষয়ে মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইচ্ছা। বাস্তবায়ন তো হিউম্যান রাইটস ওয়াচ করবে না। করবে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। মন্ত্রী বলেন, ১৯৯২ সালের চুক্তিই মিয়ানমার অনুসরণ করতে চায়। সেভাবেই করা হয়েছে। বাংলাদেশ এ চুক্তির বিরোধিতা করেনি। আমরা শুধু বলেছি, এবারের সংখ্যা বেশি। অল্প সময়ের মধ্যে বেশি লোক এসেছে। গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এদের ফেরত পাঠানো। এর খুঁটিনাটি, ত্রুটিবিচ্যুতি, এটা-ওটা নেই, কেন নেই, কী হবে- এসব কথা বলে তো কোনো লাভ নেই। গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো, রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত নিতে চেয়েছেন। মিয়ানমারের সঙ্গে এই চুক্তিতে দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে- এমন বিতর্কের ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যে চুক্তিটি হয়েছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে স্বার্থ উপেক্ষা করার কথা বলা হয়েছে, এই মন্তব্য অত্যন্ত চমৎকার। আমার মনে হয়, এটি হাস্যকর মন্তব্য। মন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, স্বার্থ কে ঠিক করে? যে সরকার ক্ষমতায়, সে সরকারই ঠিক করে। আমরা স্বার্থ ঠিক রেখেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। এদেরকে নিজের জায়গায় নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।
স্বাক্ষরিত হয়। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার গতবছর ৯ই অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৫শে আগস্টের পরে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নেবে। এই চুক্তির অধীনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর গত বছরের ৯ই অক্টোবরের আগে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
বর্তমান চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। মন্ত্রী আরো জানান, মিয়ানমার সফরের আগে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর নির্মাণে তিনি ভারত ও চীন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা এই ক্ষেত্রে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। মিয়ানমার সরকারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে এবং মিয়ানমার সরকার এ বিষয়ে রাজি হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রত্যাবাসনকারীদের সাবেক আবাসস্থল বা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাছাকাছি কোনো স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের আশ্রয়স্থলে সীমিত সময়ের জন্য রাখা হবে। মন্ত্রী জানান, এ সফরে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসন চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ২২শে নভেম্বর পূর্বাহ্ণে দু’দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ আলোচনা করেন। একই দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী খসড়াটি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনা করে। দীর্ঘ আলোচনা শেষে খসড়াটি চূড়ান্ত হয়। চুক্তিটি বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাক্ষরিত হয়। স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার গত বছরের ৯ই অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৫শে আগস্টের পরে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নেবে। এই চুক্তির অধীনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর চলতি বছরের ৯ই অক্টোবরের আগে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। বর্তমান চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ লক্ষ্যে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে এবং টার্মস অব রেফারেন্স চূড়ান্ত করা হবে। মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর রিপ্যাট্রিয়েশন’ নামে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ এই চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবে। দু’পক্ষই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআর-এর সহায়তা নিতে সম্মত হয়েছে। মিয়ানমার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত সময়ে ইউএনএইচসিআরকে প্রক্রিয়ায় যুক্ত করবে। চুক্তি অনুযায়ী জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এ সফরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি’র সঙ্গে বৈঠক করেন এএইচএম মাহমুদ আলী। বৈঠকে শিক্ষা, জ্বালানি, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক যোগাযোগ কাঠামো স্থাপনে বিসিআইএম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার বিষয়ে দু’দেশ একমত পোষণ করেছে। এ সফরকালে নাফ নদের স্থায়ী সীমানা নির্ধারণের উপর ২০০৭-এ চূড়ান্তকৃত একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। তাছাড়া ১৯৯৮ সালে স্বাক্ষরিত নাফ নদের উত্তরে স্থলভাগের সীমানা নির্ধারণ চুক্তির ‘‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেটিফিকেশন” বিনিময় করা হয়। এছাড়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য বাংলাদেশের উপহার হিসেবে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স মিয়ানমারের সমাজসেবা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, এটা একটা প্রাথমিক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে সবকিছু হবে না। এর পরে আরো পদক্ষেপ আছে। আমরা আশা করছি, তাড়াতাড়ি সেগুলো হবে। এখন দু’মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আজকে যদি কিছু ফেরত যায় তাহলে বেশিরভাগ গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে তারা কোথায় যাবে? এটা বাস্তবে তো সম্ভব না। ভারত এবং চীন সরকারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাদের বাড়িঘর স্থাপনে যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। দুই দেশই তাদের সম্মতি জানিয়েছেন। মিয়ানমারের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনায় বলেছি ভারত এবং চীন সহায়তায় রাজি আছে। মিয়ানমারের মন্ত্রী সোয়ে তিনি বলেছেন, তারা এতে সম্মত। শিগগিরই ওই দুই দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন। আমিও তাদের বলবো যেন তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেন। চুক্তির ধরন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে তারা বলেছিল সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হবে। পরে তারাই আবার বলেছে অ্যারেঞ্জমেন্ট হবে। এটাতে কিছু যায় আসে না। এটা মানার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইন থাকার পরেও তা লঙ্ঘন হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোনো দেশ বা রাষ্ট্র এটা অনুসরণ করে কিনা। তারপরও যুদ্ধ হচ্ছে।
উপযুক্ত সময় একটি ভেক টার্ম কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন- এটা অবশ্যই ফেক টার্ম। এটার টাইম ফ্রেম দেয়া যায় না। এরকম টাইম ফ্রেম দিয়ে কোনো লাভও নেই। আমরা চেষ্টা করব। গোটা পৃথিবী আমাদের সঙ্গে। তারা বলেছে, এটা শেষ করতে হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই চুক্তিকে হাস্যকর বলেছে। এবিষয়ে মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইচ্ছা। বাস্তবায়ন তো হিউম্যান রাইটস ওয়াচ করবে না। করবে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। মন্ত্রী বলেন, ১৯৯২ সালের চুক্তিই মিয়ানমার অনুসরণ করতে চায়। সেভাবেই করা হয়েছে। বাংলাদেশ এ চুক্তির বিরোধিতা করেনি। আমরা শুধু বলেছি, এবারের সংখ্যা বেশি। অল্প সময়ের মধ্যে বেশি লোক এসেছে। গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এদের ফেরত পাঠানো। এর খুঁটিনাটি, ত্রুটিবিচ্যুতি, এটা-ওটা নেই, কেন নেই, কী হবে- এসব কথা বলে তো কোনো লাভ নেই। গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো, রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত নিতে চেয়েছেন। মিয়ানমারের সঙ্গে এই চুক্তিতে দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে- এমন বিতর্কের ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যে চুক্তিটি হয়েছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে স্বার্থ উপেক্ষা করার কথা বলা হয়েছে, এই মন্তব্য অত্যন্ত চমৎকার। আমার মনে হয়, এটি হাস্যকর মন্তব্য। মন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, স্বার্থ কে ঠিক করে? যে সরকার ক্ষমতায়, সে সরকারই ঠিক করে। আমরা স্বার্থ ঠিক রেখেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। এদেরকে নিজের জায়গায় নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।
No comments