মোদির ব্যাপারে অবস্থান পাল্টাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ভারতের গুজরাটে দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদির বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এত দিন তাঁকে এড়িয়ে চলত যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় তারা অবস্থান পাল্টাচ্ছে। নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েল সেই মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করছেন। ওয়াশিংটনে একজন মার্কিন কর্মকর্তা গত সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি। এই নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ক্ষমতায় যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে দলটির। এ কারণে ওবামা প্রশাসন ভারতে তাদের অবস্থান পাল্টাতে চাইছে। ন্যান্সি পাওয়েলের পরিকল্পনায় সে ইঙ্গিতই মিলছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই মোদিকে বর্জনের পথ থেকে সরে এসেছে। আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ ভারতের লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে শীর্ষ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের মতবিনিময় শুরু হয়েছে গত নভেম্বর থেকে। মোদি-পাওয়েলের সম্ভাব্য সাক্ষাতের বিষয়টিও সেই উদ্যোগের অংশ।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেখানে ২০০২ সালে সংঘটিত দাঙ্গায় নীরব ভূমিকা নিয়েছিলেন। এতে প্রায় দুই হাজার মানুষ নিহত হয় এবং নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মুসলিমের সংখ্যাই ছিল বেশি। যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সালে ওই দেশের একটি আইনে মোদির ভিসা বাতিল করে দিয়েছিল। ওই আইনে বলা আছে, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনে’ দায়ী কোনো বিদেশি কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবে না। মোদি অবশ্য দাবি করেন, গুজরাটের দাঙ্গা চলাকালে তিনি কোনো ভুল করেননি। দাঙ্গার তদন্তেও তিনি পার পেয়ে গেছেন। তবে ৯৭ জন মুসলিমকে হত্যায় উসকানি দেওয়ার দায়ে তৎকালীন তাঁর রাজ্য সরকারের একজন মন্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। স্নায়ুযুদ্ধের যুগের বিরোধের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অধিকাংশই নয়াদিল্লির সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপনের প্রতি সমর্থন জানান। তবে বামঘেঁষা মার্কিন আইনপ্রণেতারা মোদির ব্যাপারে এত দিন বিরোধিতা করেছেন। তবে তাঁর সঙ্গে পাওয়েলের সম্ভাব্য বৈঠকের পর দৃশ্যপট পাল্টে যাবে বলে মনে হচ্ছে। এএফপি।
No comments