আইনি বাধ্যবাধকতা নেই, নৈতিক আছে -ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাব
বাংলাদেশের নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাব অনুসরণের আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। তবে রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাম্প্রতিক প্রস্তাবটি মেনে চলার নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা গতকাল রোববার প্রথম আলোর কাছে এমন অভিমত দেন।
১৬ জানুয়ারি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে চলমান সংকট নিরসনে সব বৈধ রাজনৈতিক দল সম্মত হলে আগাম নির্বাচনসহ সব ধরনের বিকল্প বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। ওই প্রস্তাবে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের কাছ থেকে স্পষ্টত দূরত্ব বজায় রাখতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
গতকাল এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপের সময় একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুসরণে একধরনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এ প্রস্তাবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে না। তবে নির্বাচনসহ সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এ প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় এটি অনুসরণে একধরনের নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অন্য একজন কর্মকর্তা মনে করেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ করে দিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ফলে সরকার ও বিরোধী দল দুই পক্ষকেই নিজেদের অবস্থানে ছাড় দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এ প্রস্তাব অনুসরণে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো কতটা কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে—এ ব্যাপারে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট ইউরোপীয় ইউনিয়ন খোঁজ রাখবে।
জানতে চাইলে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবীর বলেন, বাংলাদেশ নৈতিকভাবে ভালো কাজ করার মধ্য দিয়ে ভাবমূর্তি তৈরি করে আসছে। চলমান রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের গৃহীত প্রস্তাবের ফলে সামগ্রিক ভাবমূর্তির ক্ষতি হলো।
এদিকে সরকারি কর্মকর্তারা মনে করেন, চলমান রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে সহিংসতার ব্যাপারে এই প্রথমবারের মতো খুব স্পষ্ট করেই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। কারণ, পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সহিংসতার উসকানিদাতা জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের একাংশকে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করছে বিএনপি। এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের কাছ থেকে স্পষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। পাশাপাশি যেসব রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, খুব স্পষ্ট করেই বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে সহিংসতার পথ ছাড়ার পাশাপাশি দেশের প্রধান ইসলামি দলের কাছ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে দৃশ্যত ইউরোপের একধরনের চাপের মুখে পড়েছে বিএনপি।
তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাব নিয়ে সরকারের আত্মতুষ্টি থাকলেও নির্বাচনের আগে ও পরের পরিস্থিতি নিয়ে ইইউভুক্ত ২৯ দেশের পার্লামেন্ট সরকারের ব্যাপারে তাদের নেতিবাচক পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনসহ অনুকূল পরিবেশ না থাকায় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক না পাঠানো ও নির্বাচনে কম ভোটারের উপস্থিতির কথা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট উল্লেখ করেছে। তাদের নেতিবাচক অবস্থান তুলে ধরেছে। পাশাপাশি বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে হামলা-নির্যাতন বন্ধের পাশাপাশি নিপীড়নমূলক মামলায় আটক সব বিরোধী নেতা-কর্মীর মুক্তি এবং নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় যুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ সবার বিরুদ্ধে দ্রুত, স্বচ্ছ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বাংলাদেশ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে চারটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ ও ২১ নভেম্বরের প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য ছিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এ ছাড়া গত বছরের ১৭ জানুয়ারি ও ২৩ মের গৃহীত অন্য দুটি প্রস্তাবের বিষয়বস্তু ছিল কর্মপরিবেশের নিরাপত্তাসহ তৈরি পোশাকশিল্পের সামগ্রিক পরিস্থিতি।
সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা গতকাল রোববার প্রথম আলোর কাছে এমন অভিমত দেন।
১৬ জানুয়ারি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে চলমান সংকট নিরসনে সব বৈধ রাজনৈতিক দল সম্মত হলে আগাম নির্বাচনসহ সব ধরনের বিকল্প বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। ওই প্রস্তাবে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের কাছ থেকে স্পষ্টত দূরত্ব বজায় রাখতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
গতকাল এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপের সময় একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুসরণে একধরনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এ প্রস্তাবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে না। তবে নির্বাচনসহ সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এ প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় এটি অনুসরণে একধরনের নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অন্য একজন কর্মকর্তা মনে করেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ করে দিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ফলে সরকার ও বিরোধী দল দুই পক্ষকেই নিজেদের অবস্থানে ছাড় দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এ প্রস্তাব অনুসরণে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো কতটা কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে—এ ব্যাপারে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট ইউরোপীয় ইউনিয়ন খোঁজ রাখবে।
জানতে চাইলে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবীর বলেন, বাংলাদেশ নৈতিকভাবে ভালো কাজ করার মধ্য দিয়ে ভাবমূর্তি তৈরি করে আসছে। চলমান রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের গৃহীত প্রস্তাবের ফলে সামগ্রিক ভাবমূর্তির ক্ষতি হলো।
এদিকে সরকারি কর্মকর্তারা মনে করেন, চলমান রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে সহিংসতার ব্যাপারে এই প্রথমবারের মতো খুব স্পষ্ট করেই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। কারণ, পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সহিংসতার উসকানিদাতা জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের একাংশকে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করছে বিএনপি। এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের কাছ থেকে স্পষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। পাশাপাশি যেসব রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, খুব স্পষ্ট করেই বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে সহিংসতার পথ ছাড়ার পাশাপাশি দেশের প্রধান ইসলামি দলের কাছ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে দৃশ্যত ইউরোপের একধরনের চাপের মুখে পড়েছে বিএনপি।
তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাব নিয়ে সরকারের আত্মতুষ্টি থাকলেও নির্বাচনের আগে ও পরের পরিস্থিতি নিয়ে ইইউভুক্ত ২৯ দেশের পার্লামেন্ট সরকারের ব্যাপারে তাদের নেতিবাচক পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনসহ অনুকূল পরিবেশ না থাকায় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক না পাঠানো ও নির্বাচনে কম ভোটারের উপস্থিতির কথা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট উল্লেখ করেছে। তাদের নেতিবাচক অবস্থান তুলে ধরেছে। পাশাপাশি বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে হামলা-নির্যাতন বন্ধের পাশাপাশি নিপীড়নমূলক মামলায় আটক সব বিরোধী নেতা-কর্মীর মুক্তি এবং নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় যুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ সবার বিরুদ্ধে দ্রুত, স্বচ্ছ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বাংলাদেশ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে চারটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ ও ২১ নভেম্বরের প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য ছিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এ ছাড়া গত বছরের ১৭ জানুয়ারি ও ২৩ মের গৃহীত অন্য দুটি প্রস্তাবের বিষয়বস্তু ছিল কর্মপরিবেশের নিরাপত্তাসহ তৈরি পোশাকশিল্পের সামগ্রিক পরিস্থিতি।
No comments