ভালোবাসায় সব জয় করা যায় by নুরুল ইসলাম বিএসসি
দেহের
ধ্বংসই আত্মার মুক্তি। দেহের অভ্যন্তরে যে কামনা, বাসনা, লোভ, লালসা থাকে,
তা সত্য পথ দেখতে দেয় না। এই বস্তুগুলোকে ‘নফস’ বলতে পারি। নফস ধ্বংস করতে
পারলেই দেহের কর্তৃত্বের অবসান হয় এবং আত্মার স্বাধীনতায় আসে পূর্ণতা।
যারা সাধক তারাই নফসকে দমন করতে পারেন। আর সাধারণ মানুষের আত্মার মুক্তি
আসে তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
যখন নফস সম্পূর্ণ পরাজিত হয়, তখন আত্মার আজ্ঞাবহ হয়। সেদিন কোনো অন্তরায় নাই- তখন হবে বিনয়, তখন হবে ফানা। ফানা মানেই বিলীন হওয়া। আমরা যে চিনি ফানা পান করি, চিনি পানির মধ্যে এমনভাবে বিলীন হয় যা চোখে দেখা যায় না। যখন মানুষ স্রষ্টার প্রেমে বিলীন হয়, তখন তার চোখে সব মানুষ এক কাতারে দাঁড়ায়। না থাকে ধর্মের বন্ধন, না থাকে গোষ্ঠীর বেড়াজাল। এরই নাম অমরত্ব।
আল্লামা রুমী বলে গেছেন, স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা ধর্মের নিয়ম-কানুনের আওতাবহির্ভূত। আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে শুধু আল্লাহর কারণে। আল্লাহর ইবাদত হবে সার্বক্ষণিক। শুধু আল্লাহর উদ্দেশে। গাছ যেমন মাথা উঁচু করে সার্বক্ষণিক আল্লাহর ইবাদত করে। আল্লাহর ইবাদতে কোনো চাওয়া-পাওয়া থাকে না। এর নাম ভালোবাসার ধর্ম, প্রেমিকের ধর্ম এবং ভালোবাসার পাঠশালা। প্রকৃতি ভালোবাসার পাঠশালা। অথচ আমরা সার্বক্ষণিক ওই গাছ ধ্বংস করছি। প্রকৃতিকে কলুষিত করছি।
রুমী বলতেন, নৃত্য ও আনন্দ উল্লাস সব জীবন্ত প্রাণীর স্বভাব, এমনকি সুখী হলে পশুরাও লাফায়। দৌড়ে খেলা করে বেড়ায়। আমরা বানর ছানার দৌড়ঝাঁপ, আনন্দ উল্লাস দেখেছি। মানুষের মধ্যেও একই অনুভূতি আছে। আর এই আনন্দ উল্লাস যদি স্রষ্টার প্রেমে হয়, তার নামই ইবাদত। এখানে অন্য কোনো নিয়মনীতির প্রয়োজনীয়তাই বা কী? এ থেকে বোঝা যায়, সব ধর্মের স্রোতই মিশে গেছে রুমীর অভিজ্ঞানে। প্রথমে রুমী একজন দার্শনিক থাকলেও শমসের তাব্রীজের গুণে কবিতে রূপান্তরিত হন। কবি আর দার্শনিকের একসঙ্গে সমন্বয় জগতে বিরল।
শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। রুমীর জগৎ শুধু সূফিবাদের জগৎ নয়, নয় হিন্দু, নয় ইহুদির, নয় খ্রিস্টানদের। এ যেন মনুষ্যত্বের চরম বিকাশের পরিণতি। তাই যখন খ্রিস্টানদের গির্জায় যাই, বৌদ্ধদের মন্দিরে প্রবেশ করি, এমনকি ঢুকে পড়ি নিউইয়র্কের কোনো শিল্প-সংস্কৃতির আড্ডায়- মসজিদ, মন্দির সব জায়গায় রুমীর উপস্থিতি। এ যেন এক অভাবিত পুরুষ, তার মসনবী। রুমীর রচনা প্রমাণ করে সব ধর্মের লোকরা সুখে-শান্তিতে বসবাসের ক্ষমতা রাখে। রুমীর সব রচনা হৃদয়ের সব ঘৃণা, বিদ্বেষ, লোভ-লালসা ত্যাগ করে মানবতার দিকে টানে। তাই রুমী সব ধর্মের প্রচারক ও অনুরাগী। বর্তমান হিংসার যুগে রুমীর আদর্শ অনুসরণ বড় প্রয়োজন। রুমীর লেখাই পারে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। ভালোবাসা দিয়ে শত্র“, মিত্র সবাইকে জয় করতে রুমীই শিখিয়েছেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
যখন নফস সম্পূর্ণ পরাজিত হয়, তখন আত্মার আজ্ঞাবহ হয়। সেদিন কোনো অন্তরায় নাই- তখন হবে বিনয়, তখন হবে ফানা। ফানা মানেই বিলীন হওয়া। আমরা যে চিনি ফানা পান করি, চিনি পানির মধ্যে এমনভাবে বিলীন হয় যা চোখে দেখা যায় না। যখন মানুষ স্রষ্টার প্রেমে বিলীন হয়, তখন তার চোখে সব মানুষ এক কাতারে দাঁড়ায়। না থাকে ধর্মের বন্ধন, না থাকে গোষ্ঠীর বেড়াজাল। এরই নাম অমরত্ব।
আল্লামা রুমী বলে গেছেন, স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা ধর্মের নিয়ম-কানুনের আওতাবহির্ভূত। আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে শুধু আল্লাহর কারণে। আল্লাহর ইবাদত হবে সার্বক্ষণিক। শুধু আল্লাহর উদ্দেশে। গাছ যেমন মাথা উঁচু করে সার্বক্ষণিক আল্লাহর ইবাদত করে। আল্লাহর ইবাদতে কোনো চাওয়া-পাওয়া থাকে না। এর নাম ভালোবাসার ধর্ম, প্রেমিকের ধর্ম এবং ভালোবাসার পাঠশালা। প্রকৃতি ভালোবাসার পাঠশালা। অথচ আমরা সার্বক্ষণিক ওই গাছ ধ্বংস করছি। প্রকৃতিকে কলুষিত করছি।
রুমী বলতেন, নৃত্য ও আনন্দ উল্লাস সব জীবন্ত প্রাণীর স্বভাব, এমনকি সুখী হলে পশুরাও লাফায়। দৌড়ে খেলা করে বেড়ায়। আমরা বানর ছানার দৌড়ঝাঁপ, আনন্দ উল্লাস দেখেছি। মানুষের মধ্যেও একই অনুভূতি আছে। আর এই আনন্দ উল্লাস যদি স্রষ্টার প্রেমে হয়, তার নামই ইবাদত। এখানে অন্য কোনো নিয়মনীতির প্রয়োজনীয়তাই বা কী? এ থেকে বোঝা যায়, সব ধর্মের স্রোতই মিশে গেছে রুমীর অভিজ্ঞানে। প্রথমে রুমী একজন দার্শনিক থাকলেও শমসের তাব্রীজের গুণে কবিতে রূপান্তরিত হন। কবি আর দার্শনিকের একসঙ্গে সমন্বয় জগতে বিরল।
শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। রুমীর জগৎ শুধু সূফিবাদের জগৎ নয়, নয় হিন্দু, নয় ইহুদির, নয় খ্রিস্টানদের। এ যেন মনুষ্যত্বের চরম বিকাশের পরিণতি। তাই যখন খ্রিস্টানদের গির্জায় যাই, বৌদ্ধদের মন্দিরে প্রবেশ করি, এমনকি ঢুকে পড়ি নিউইয়র্কের কোনো শিল্প-সংস্কৃতির আড্ডায়- মসজিদ, মন্দির সব জায়গায় রুমীর উপস্থিতি। এ যেন এক অভাবিত পুরুষ, তার মসনবী। রুমীর রচনা প্রমাণ করে সব ধর্মের লোকরা সুখে-শান্তিতে বসবাসের ক্ষমতা রাখে। রুমীর সব রচনা হৃদয়ের সব ঘৃণা, বিদ্বেষ, লোভ-লালসা ত্যাগ করে মানবতার দিকে টানে। তাই রুমী সব ধর্মের প্রচারক ও অনুরাগী। বর্তমান হিংসার যুগে রুমীর আদর্শ অনুসরণ বড় প্রয়োজন। রুমীর লেখাই পারে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। ভালোবাসা দিয়ে শত্র“, মিত্র সবাইকে জয় করতে রুমীই শিখিয়েছেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
No comments