আবাহনীর কাছে মোহামেডানের বিদায়
ক্রিকেটের চিত্রটা উল্টো: সেমিফাইনালে মোহামেডানকে হতাশ করে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন আবাহনীর ব্যাটসম্যানরা |
এর নামই কি অদৃষ্ট!
পুরো লিগে উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসী ছিল মোহামেডান। অন্য দলগুলোর কাছে অস্পর্শনীয়ই মনে হচ্ছিল তাদের। তামিম ইকবালও দুর্দমনীয়। অথচ আসল মঞ্চ, যেটা ফাইনালে ওঠার সিঁড়ি তো বটেই, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে মর্যাদার লড়াইয়ে শির উঁচিয়ে ধরার উপলক্ষও—মোহামেডান পারল না সেই স্নায়ুর লড়াইয়ে। তামিম ইকবালের ব্যাট কালও দুরন্ত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু লিগে প্রথম খেলতে নামা সাকিব আল হাসানের দ্যুতি আর শেষ মুহূর্তে তামিমকে হারিয়ে যাকে বিকল্প ভেবে আঁকড়ে ধরেছিল আবাহনী, সেই ইমরুল কায়েসের ব্যাটের আলোয় কত না ম্লান হয়ে গেল সেটা!
তুমুল উত্তেজনার ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৫ রান দরকার ছিল আবাহনীর। সেমিফাইনালের চৌকাঠ পেরিয়েছে তারা মাত্র ২ বল বাকি থাকতে চার উইকেটের জয়ে। কিন্তু ক্লাব ক্রিকেটের এই দুই পরাশক্তির লড়াইয়ে যে জয়ের ধরনটা কখনোই বড় নয়, বড় জয়টাই।
নইলে এ ম্যাচে ‘আবাহনী কেন জিতল’ সেটার চেয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ‘মোহামেডান কেন হারল’ সে প্রশ্নই বড় হয়ে ওঠার কথা। মোহামেডানের জন্য বিজয়ীর হাসি হাসার সব রকম উপলক্ষই তৈরি ছিল। তামিমের ব্যাটে আবারও ঝড়—পাঁচ চার আর তিন ছক্কায় ২৬ বলে ৪৭। ৫২ বলে ৫১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস শামসুর রহমানের। এরপর মাহমুদউল্লাহর ১১ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ‘ফিনিশিং টাচ’—সব মিলিয়ে আবাহনীর সামনে ১৬৫ রানের টার্গেট খুব ছোট ছিল না। অথচ ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে মাহমুদউল্লাহর ২৫ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার সাফল্যও বাধা হতে পারেনি আবাহনীর ফাইনালের পথে।
ব্যক্তিগত ৩ রানে ইমন আহমেদের বলে কপালে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ইমরুলই আবাহনীর জয়ের নায়ক। সাকিব আউট হওয়ার পর ফিরলেন কপালে তিনটি সেলাই নিয়ে, সঙ্গে বুকভরা আত্মবিশ্বাস। ম্যাচ শেষে সেটাই বললেন তিনি, ‘সকাল থেকেই আজ (গতকাল) আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। মনে হচ্ছিল হয়ে যাবে...। এরপর মোহামেডানের ব্যাটিং দেখার পর বুঝে গেলাম উইকেটটা খুব সহজ।’ মাহমুদউল্লাহর বলে ফয়সাল হোসেনের হাতে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়ার আগে ৩৮ বলে ৪৬ রান ম্যান অব দ্য ম্যাচ ইমরুলের। আউট হয়েছেন দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে—আবাহনীর রান তখন ১৮.৩ ওভারে ১৫৩। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রায় হাজার পনেরো দর্শকের বিনোদনের খোরাক হয়ে মাঝখানে আলো ছড়িয়েছে আবাহনী অধিনায়ক সাকিবের ব্যাটও। ১৫ বলে ২৮ রান করেছেন ১টি চার আর ৩টি ছক্কায়। এর মধ্যে পরপর দুটি ছক্কা নাবিল সামাদের বলে। আফতাব যে ওভারে দেলোয়ারের ক্যাচ হয়েছেন, তার আগে ওই ওভারেই অপর ছক্কাটি আছড়ে ফেলেছেন গ্যালারিতে।
ম্যাচ শেষে খালেদ মাসুদের অনুপস্থিতিতে মোহামেডানের অধিনায়কত্ব করা মোহাম্মদ আশরাফুল ব্যর্থতার দায় দিলেন বাজে বোলিংকে, ‘আমরা আজ ভালো বল করিনি। প্রতিটা ওভারেই এক-দুইটা বাজে বল ছিল।’ আর আবাহনী অধিনায়ক সাকিব? তখনো তার মধ্যে ছোট্ট একটা হতাশা। যে হতাশায় আউট হওয়ার পর ছুড়ে ফেলেছিলেন ব্যাট, ‘কী বলব? যে প্ল্যানটা সবাইকে আমি করে দিয়েছি, সেটা আমিই নষ্ট করে দিয়েছিলাম...।’ তবে অনেক দিন পর মাঠে নেমে জয় নিয়ে ফেরার আনন্দ তাতে কমছে না, ‘শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলাম। পরে ঠিক হয়ে গেছে। এমন ম্যাচে জয় পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান: ১৬৪/৪ (তামিম ৪৭, শামসুর ৫১, আফতাব ১৩, আশরাফুল ১৯, মাহমুদউল্লাহ ২৭*, মার্শাল ২*। রফিক ২/৩৬, মোক্তার ১/২৮)।
আবাহনী: ১৯.৪ ওভারে ১৬৬/৬ (ইমরুল ৪৬, রনি ১৯, মাহবুবুল ১৮, সাকিব ২৮, নাদিফ ২৩, নাসির ৯, মোক্তার ১*, সগীর ১২*। মাহমুদউল্লাহ ৪/২৫, আফতাব ১/১০, ইমন ১/২৯)।
ফল: আবাহনী ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইমরুল কায়েস (আবাহনী)।
পুরো লিগে উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসী ছিল মোহামেডান। অন্য দলগুলোর কাছে অস্পর্শনীয়ই মনে হচ্ছিল তাদের। তামিম ইকবালও দুর্দমনীয়। অথচ আসল মঞ্চ, যেটা ফাইনালে ওঠার সিঁড়ি তো বটেই, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে মর্যাদার লড়াইয়ে শির উঁচিয়ে ধরার উপলক্ষও—মোহামেডান পারল না সেই স্নায়ুর লড়াইয়ে। তামিম ইকবালের ব্যাট কালও দুরন্ত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু লিগে প্রথম খেলতে নামা সাকিব আল হাসানের দ্যুতি আর শেষ মুহূর্তে তামিমকে হারিয়ে যাকে বিকল্প ভেবে আঁকড়ে ধরেছিল আবাহনী, সেই ইমরুল কায়েসের ব্যাটের আলোয় কত না ম্লান হয়ে গেল সেটা!
তুমুল উত্তেজনার ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৫ রান দরকার ছিল আবাহনীর। সেমিফাইনালের চৌকাঠ পেরিয়েছে তারা মাত্র ২ বল বাকি থাকতে চার উইকেটের জয়ে। কিন্তু ক্লাব ক্রিকেটের এই দুই পরাশক্তির লড়াইয়ে যে জয়ের ধরনটা কখনোই বড় নয়, বড় জয়টাই।
নইলে এ ম্যাচে ‘আবাহনী কেন জিতল’ সেটার চেয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ‘মোহামেডান কেন হারল’ সে প্রশ্নই বড় হয়ে ওঠার কথা। মোহামেডানের জন্য বিজয়ীর হাসি হাসার সব রকম উপলক্ষই তৈরি ছিল। তামিমের ব্যাটে আবারও ঝড়—পাঁচ চার আর তিন ছক্কায় ২৬ বলে ৪৭। ৫২ বলে ৫১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস শামসুর রহমানের। এরপর মাহমুদউল্লাহর ১১ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ‘ফিনিশিং টাচ’—সব মিলিয়ে আবাহনীর সামনে ১৬৫ রানের টার্গেট খুব ছোট ছিল না। অথচ ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে মাহমুদউল্লাহর ২৫ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার সাফল্যও বাধা হতে পারেনি আবাহনীর ফাইনালের পথে।
ব্যক্তিগত ৩ রানে ইমন আহমেদের বলে কপালে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ইমরুলই আবাহনীর জয়ের নায়ক। সাকিব আউট হওয়ার পর ফিরলেন কপালে তিনটি সেলাই নিয়ে, সঙ্গে বুকভরা আত্মবিশ্বাস। ম্যাচ শেষে সেটাই বললেন তিনি, ‘সকাল থেকেই আজ (গতকাল) আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। মনে হচ্ছিল হয়ে যাবে...। এরপর মোহামেডানের ব্যাটিং দেখার পর বুঝে গেলাম উইকেটটা খুব সহজ।’ মাহমুদউল্লাহর বলে ফয়সাল হোসেনের হাতে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়ার আগে ৩৮ বলে ৪৬ রান ম্যান অব দ্য ম্যাচ ইমরুলের। আউট হয়েছেন দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে—আবাহনীর রান তখন ১৮.৩ ওভারে ১৫৩। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রায় হাজার পনেরো দর্শকের বিনোদনের খোরাক হয়ে মাঝখানে আলো ছড়িয়েছে আবাহনী অধিনায়ক সাকিবের ব্যাটও। ১৫ বলে ২৮ রান করেছেন ১টি চার আর ৩টি ছক্কায়। এর মধ্যে পরপর দুটি ছক্কা নাবিল সামাদের বলে। আফতাব যে ওভারে দেলোয়ারের ক্যাচ হয়েছেন, তার আগে ওই ওভারেই অপর ছক্কাটি আছড়ে ফেলেছেন গ্যালারিতে।
ম্যাচ শেষে খালেদ মাসুদের অনুপস্থিতিতে মোহামেডানের অধিনায়কত্ব করা মোহাম্মদ আশরাফুল ব্যর্থতার দায় দিলেন বাজে বোলিংকে, ‘আমরা আজ ভালো বল করিনি। প্রতিটা ওভারেই এক-দুইটা বাজে বল ছিল।’ আর আবাহনী অধিনায়ক সাকিব? তখনো তার মধ্যে ছোট্ট একটা হতাশা। যে হতাশায় আউট হওয়ার পর ছুড়ে ফেলেছিলেন ব্যাট, ‘কী বলব? যে প্ল্যানটা সবাইকে আমি করে দিয়েছি, সেটা আমিই নষ্ট করে দিয়েছিলাম...।’ তবে অনেক দিন পর মাঠে নেমে জয় নিয়ে ফেরার আনন্দ তাতে কমছে না, ‘শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলাম। পরে ঠিক হয়ে গেছে। এমন ম্যাচে জয় পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান: ১৬৪/৪ (তামিম ৪৭, শামসুর ৫১, আফতাব ১৩, আশরাফুল ১৯, মাহমুদউল্লাহ ২৭*, মার্শাল ২*। রফিক ২/৩৬, মোক্তার ১/২৮)।
আবাহনী: ১৯.৪ ওভারে ১৬৬/৬ (ইমরুল ৪৬, রনি ১৯, মাহবুবুল ১৮, সাকিব ২৮, নাদিফ ২৩, নাসির ৯, মোক্তার ১*, সগীর ১২*। মাহমুদউল্লাহ ৪/২৫, আফতাব ১/১০, ইমন ১/২৯)।
ফল: আবাহনী ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইমরুল কায়েস (আবাহনী)।
No comments