লাল ফড়িঙের জন্মদিন by কামাল হোসাইন
অলংকরণ: মাসুক হেলাল |
বিকেল
বেলা। খোলা জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকছে মিষ্টি হাওয়া। মা বললেন ঘুমাতে। কিন্তু
ঘুম আসছে না তার কিছুতেই। বিছানায় শুয়ে কেবলই এপাশ-ওপাশ। মা মাত্র চোখ
বুজেছেন। এই অপেক্ষাতেই ছিল ফাবিহা।
আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নামল সে।
বাইরে বেরিয়ে বাতাসে কান পাতল। ফিসফিস করে কারা যেন কথা বলছে। গাছের পাতায়-ডালে কেবল ফিসফিসানি। কী বলছে ওরা?
শব্দটা আসছে বাড়ির সামনের ফুলের বাগান থেকে। পায়ে-পায়ে এগিয়ে গেল সে। জায়গাটা ফাবিহার খুব পছন্দের। প্রায়ই একা-একা এখানে চলে আসে সে। গাছ-ফুল-মৌমাছি-প্রজাপতির সঙ্গে কথা বলে। ওদের খোঁজখবর নেয়। দুষ্টু পোকামাকড়ের হাত থেকে ওদের বাঁচায়।
ওরাও ফাবিহাকে পেলে খুশিতে লুটোপুটি খায়। আহ্লাদে আটখানা হয়। আনন্দে কেউ কেউ তাকে ফুলের রেণু উপহার দেয়। কেউ মধু খেতে দেয়। কেউবা গুনগুন গান শোনায়। কেউ আবার গাছের রঙিন পাতা ঝরিয়ে ফাবিহাকে অভিবাদন জানায়।
ফাবিহা বাগানে ঢুকতেই সবার ভেতরে কেমন একটা চঞ্চলতা দেখা গেল। বাগানজুড়ে একটা সাজ সাজ রব। ঠিক অন্য দিনের মতো নয়। অন্য দিন বাগানটা কেমন শান্ত থাকে। কিন্তু আজ একেবারে ব্যতিক্রম।
কিন্তু কী হলো আজ এই বাগানটায়! ফিসফিস শব্দটা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। কানে বাজছে। যেটা ও এর আগে কখনো শোনেনি। কেমন একটা গমগমে ভাব। সবাই নিজেদের মতো ব্যস্ত। হঠাৎ কোথা থেকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এল হলুদ প্রজাপতি।
বলল, ‘ও তুমি এসেছ? খুব ভালো।’ বলেই প্রজাপতি আলতো করে তার গাল ছুঁয়ে দিল। ফাবিহার মজাই লাগল। একটু সুড়সুড়িও লাগল। খিলখিল করে হাসল ও। বলল, ‘সবাই ছোটাছুটি করছে কেন? কী হয়েছে?’
প্রজাপতিটি মিষ্টি করে হাসল। বলল, ‘তুমি জানো না? আজ আমাদের খুব মজার দিন। আজ আমরা আনন্দ করব। নাচব। গাইব।’
প্রজাপতি সব কথাই বলছে। কিন্তু আসল কথাটাই চেপে রাখছে, মানে সে রহস্যটা ভাঙতে চাইছে না এখনই। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ফাবিহাও আর জোর করল না। বলল, ‘ঠিক আছে। তোমরা আনন্দ করো। আমি এখন চলি। ভাবছিলাম, বিকেলটা বাগানেই কাটাব। কিন্তু তোমাদের যখন বিশেষ অনুষ্ঠান আছে, তাহলে থাক...।’
ফাবিহাকে কথা শেষ করতে দিল না প্রজাপতি। বলল, ‘ওমা! তুমি দেখছি রাগ করে বসে আছ। তুমি না থাকলে আজকের এই খুশির সময়টাই তো মাটি হয়ে যাবে।’
ফাবিহা বলল, ‘আমি রাগ করিনি। শুধু তোমাদের আনন্দের সময়ে বিরক্ত করতে চাইনি।’
ফাবিহার কথা শেষ হতেই আরও কয়েকটা প্রজাপতি, ফড়িং, মৌমাছি ছুটে এল। এসেই কেউ ফাবিহার গায়ে, কেউ মাথায় বসে পড়ল। মৌমাছি বলল, ‘হলদে বু দেখি আগেই তোমার কাছে এসে গেছে। কই তোমার তো এখানে আসার কথা ছিল না। হলদে বু, আমাদেরই তো এই সোনামুখো পাকা বুড়িটাকে নিয়ে আসার কথা ছিল!’
হলুদ প্রজাপতি একটু অপ্রস্তুত হলো। বলল, ‘আমি তো এখানে আসতে চাইনি মৌ। এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম। এই পাকা বুড়ির সঙ্গে দেখা, তাই কথা বলছিলাম। জিজ্ঞেস করে দেখো, আমি গোপন কথার কিছুই বলিনি।’
ফাবিহা বলল, ‘হলুদ ঠিকই বলেছে। ও এখনো আমাকে তেমন কিছু বলেনি। তোমরাই বলো, আসল ব্যাপারটা কী? সেই কখন থেকে কেমন একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি!’
ফড়িং আর মৌমাছি মুখ টিপে হেসে উঠল। এরপর হলুদ প্রজাপতি, ফড়িং আর মৌমাছি প্রায় একসঙ্গেই বলল, ‘আজ আমাদের লক্ষ্মী মেয়ে লাল ফড়িঙের জন্মদিন।’
ফাবিহা হাসিতে মুখ ভরিয়ে বলল, ‘ওমা! তাই নাকি! এ তো দারুণ খবর। তোমরা যে ওর জন্মদিনের কথা মনে রেখে একটা উৎসবের আয়োজন করেছ, এটা জেনে খুব ভালো লাগছে।’
ফাবিহার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে হলুদ প্রজাপতি এবার বলল, ‘কেবল ভালো লাগলে চলবে না গো পাকা বুড়ি। আমাদের সঙ্গে তোমাকেও যেতে হবে। ফড়িং আর মৌমাছি তো এ জন্যই এসেছে।’
অন্যরাও বলল, ‘হ্যাঁ, তোমাকে আমাদের এই আয়োজনে থাকতেই হবে। থাকতেই হবে।’
ফাবিহা বুঝল, আর উপায় নেই। না থাকলে ওরা খুব মন খারাপ করবে। বলল, ‘ঠিক আছে। আর কোনো কথা নয়। চলো।’
প্রজাপতি, মৌমাছিরা উড়ে উড়ে পথ দেখিয়ে আগে আগে চলল। ফাবিহা চলল ওদের দেখানো পথে। বাগানের ঠিক মাঝখানটায় গিয়ে থামল ওরা।
ফাবিহা দেখল, চারদিকের ছোট ছোট ফুলের গাছগুলো দারুণ ঝকঝকে। তকতকে। মনে হচ্ছে এইমাত্র কেউ ওদের শ্যাম্পু মেখে গোসল করিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ করেই দলে দলে একঝাঁক ফড়িং, প্রজাপতি, মৌমাছি এসে হাজির। সবাই ফাবিহাকে ঘিরে উড়তে লাগল। আর গুনগুন করে গান করতে লাগল। সবাই রীতিমতো সেজেগুজে ফিটফাট হয়ে এসেছে। দেখে ফাবিহা মুগ্ধ হয়ে গেল। সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল, একটা করমচার ঝোপ সুন্দর করে ফুলের পাপড়ি দিয়ে সাজানো। ফুলের রেণু মাখিয়ে আলাদা একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
কিছুক্ষণ পর আরও কয়েকটা প্রজাপতি আর মৌমাছি ধরাধরি করে কী যেন একটা নিয়ে এল। রাখল ঝোপের ওপর সুন্দর করে সাজানো জট পাকানো পাতার ওপর।
এতক্ষণে ফাবিহা বুঝল, ওটা একটা কেক। খুব ছোট ছোট পোকা আর ফুলের মধু দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ওটাকে। ফাবিহার হাসি পেল। আবার ভালোও লাগল। বলল, ‘বাহ্, তোমরা তো ভারি সুন্দর জন্মদিন পার্টির আয়োজন করেছ! আমি এখানে না এলে তো এই মজার আয়োজনটাই মিস করতাম! কিন্তু যাকে ঘিরে এত আয়োজন, সে কোথায়?’
ফাবিহার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুটো সোনালি রঙের প্রজাপতি একটা লাল ফড়িংকে নিয়ে হাজির। লাল ফড়িংকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। সারা শরীর উজ্জ্বল আলোয় যেন ঝলমল করছে। একদিকে বিকেলের চমৎকার সোনা-রোদের আনাগোনা। সেই রোদ গায়ে মাখার কারণে দিব্যি রোশনাই ছড়াচ্ছে চারদিকে।
লাল ফড়িংটা ফাবিহার দিকে চোখ পিটপিট করে তাকাল। ফাবিহা ওকে হাতে নিয়ে আলতো করে আদর বুলিয়ে দিল। লাল ফড়িং পাখা নাড়িয়ে আনন্দ প্রকাশ করল।
এরপর এল কেক কাটার সময়। সবাই হাজির। ফাবিহা ছোট্ট কেকটাকে হাতে তুলে নিল। ঘাসফড়িঙের লম্বা শুঁড় ছুরির ভূমিকা পালন করল। লাল ফড়িঙের মা-বাবা এলে কেক কাটা শুরু হলো।
সবাই গেয়ে উঠল—
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ প্রিয় লাল ফড়িং।
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ...
গানের তালে তালে সবাই নাচতে লাগল। আর একটু একটু করে কেক খেতে লাগল। ওদের এই আনন্দে শামিল হতে পেরে ফাবিহার খুব ভালো লাগল। ভাবল, জন্মদিনে তো উপহারও দিতে হয়। কালই একটু ভেবেচিন্তে একটা উপহার আনবে লাল ফড়িঙের জন্য।
আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নামল সে।
বাইরে বেরিয়ে বাতাসে কান পাতল। ফিসফিস করে কারা যেন কথা বলছে। গাছের পাতায়-ডালে কেবল ফিসফিসানি। কী বলছে ওরা?
শব্দটা আসছে বাড়ির সামনের ফুলের বাগান থেকে। পায়ে-পায়ে এগিয়ে গেল সে। জায়গাটা ফাবিহার খুব পছন্দের। প্রায়ই একা-একা এখানে চলে আসে সে। গাছ-ফুল-মৌমাছি-প্রজাপতির সঙ্গে কথা বলে। ওদের খোঁজখবর নেয়। দুষ্টু পোকামাকড়ের হাত থেকে ওদের বাঁচায়।
ওরাও ফাবিহাকে পেলে খুশিতে লুটোপুটি খায়। আহ্লাদে আটখানা হয়। আনন্দে কেউ কেউ তাকে ফুলের রেণু উপহার দেয়। কেউ মধু খেতে দেয়। কেউবা গুনগুন গান শোনায়। কেউ আবার গাছের রঙিন পাতা ঝরিয়ে ফাবিহাকে অভিবাদন জানায়।
ফাবিহা বাগানে ঢুকতেই সবার ভেতরে কেমন একটা চঞ্চলতা দেখা গেল। বাগানজুড়ে একটা সাজ সাজ রব। ঠিক অন্য দিনের মতো নয়। অন্য দিন বাগানটা কেমন শান্ত থাকে। কিন্তু আজ একেবারে ব্যতিক্রম।
কিন্তু কী হলো আজ এই বাগানটায়! ফিসফিস শব্দটা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। কানে বাজছে। যেটা ও এর আগে কখনো শোনেনি। কেমন একটা গমগমে ভাব। সবাই নিজেদের মতো ব্যস্ত। হঠাৎ কোথা থেকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এল হলুদ প্রজাপতি।
বলল, ‘ও তুমি এসেছ? খুব ভালো।’ বলেই প্রজাপতি আলতো করে তার গাল ছুঁয়ে দিল। ফাবিহার মজাই লাগল। একটু সুড়সুড়িও লাগল। খিলখিল করে হাসল ও। বলল, ‘সবাই ছোটাছুটি করছে কেন? কী হয়েছে?’
প্রজাপতিটি মিষ্টি করে হাসল। বলল, ‘তুমি জানো না? আজ আমাদের খুব মজার দিন। আজ আমরা আনন্দ করব। নাচব। গাইব।’
প্রজাপতি সব কথাই বলছে। কিন্তু আসল কথাটাই চেপে রাখছে, মানে সে রহস্যটা ভাঙতে চাইছে না এখনই। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ফাবিহাও আর জোর করল না। বলল, ‘ঠিক আছে। তোমরা আনন্দ করো। আমি এখন চলি। ভাবছিলাম, বিকেলটা বাগানেই কাটাব। কিন্তু তোমাদের যখন বিশেষ অনুষ্ঠান আছে, তাহলে থাক...।’
ফাবিহাকে কথা শেষ করতে দিল না প্রজাপতি। বলল, ‘ওমা! তুমি দেখছি রাগ করে বসে আছ। তুমি না থাকলে আজকের এই খুশির সময়টাই তো মাটি হয়ে যাবে।’
ফাবিহা বলল, ‘আমি রাগ করিনি। শুধু তোমাদের আনন্দের সময়ে বিরক্ত করতে চাইনি।’
ফাবিহার কথা শেষ হতেই আরও কয়েকটা প্রজাপতি, ফড়িং, মৌমাছি ছুটে এল। এসেই কেউ ফাবিহার গায়ে, কেউ মাথায় বসে পড়ল। মৌমাছি বলল, ‘হলদে বু দেখি আগেই তোমার কাছে এসে গেছে। কই তোমার তো এখানে আসার কথা ছিল না। হলদে বু, আমাদেরই তো এই সোনামুখো পাকা বুড়িটাকে নিয়ে আসার কথা ছিল!’
হলুদ প্রজাপতি একটু অপ্রস্তুত হলো। বলল, ‘আমি তো এখানে আসতে চাইনি মৌ। এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম। এই পাকা বুড়ির সঙ্গে দেখা, তাই কথা বলছিলাম। জিজ্ঞেস করে দেখো, আমি গোপন কথার কিছুই বলিনি।’
ফাবিহা বলল, ‘হলুদ ঠিকই বলেছে। ও এখনো আমাকে তেমন কিছু বলেনি। তোমরাই বলো, আসল ব্যাপারটা কী? সেই কখন থেকে কেমন একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি!’
ফড়িং আর মৌমাছি মুখ টিপে হেসে উঠল। এরপর হলুদ প্রজাপতি, ফড়িং আর মৌমাছি প্রায় একসঙ্গেই বলল, ‘আজ আমাদের লক্ষ্মী মেয়ে লাল ফড়িঙের জন্মদিন।’
ফাবিহা হাসিতে মুখ ভরিয়ে বলল, ‘ওমা! তাই নাকি! এ তো দারুণ খবর। তোমরা যে ওর জন্মদিনের কথা মনে রেখে একটা উৎসবের আয়োজন করেছ, এটা জেনে খুব ভালো লাগছে।’
ফাবিহার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে হলুদ প্রজাপতি এবার বলল, ‘কেবল ভালো লাগলে চলবে না গো পাকা বুড়ি। আমাদের সঙ্গে তোমাকেও যেতে হবে। ফড়িং আর মৌমাছি তো এ জন্যই এসেছে।’
অন্যরাও বলল, ‘হ্যাঁ, তোমাকে আমাদের এই আয়োজনে থাকতেই হবে। থাকতেই হবে।’
ফাবিহা বুঝল, আর উপায় নেই। না থাকলে ওরা খুব মন খারাপ করবে। বলল, ‘ঠিক আছে। আর কোনো কথা নয়। চলো।’
প্রজাপতি, মৌমাছিরা উড়ে উড়ে পথ দেখিয়ে আগে আগে চলল। ফাবিহা চলল ওদের দেখানো পথে। বাগানের ঠিক মাঝখানটায় গিয়ে থামল ওরা।
ফাবিহা দেখল, চারদিকের ছোট ছোট ফুলের গাছগুলো দারুণ ঝকঝকে। তকতকে। মনে হচ্ছে এইমাত্র কেউ ওদের শ্যাম্পু মেখে গোসল করিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ করেই দলে দলে একঝাঁক ফড়িং, প্রজাপতি, মৌমাছি এসে হাজির। সবাই ফাবিহাকে ঘিরে উড়তে লাগল। আর গুনগুন করে গান করতে লাগল। সবাই রীতিমতো সেজেগুজে ফিটফাট হয়ে এসেছে। দেখে ফাবিহা মুগ্ধ হয়ে গেল। সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল, একটা করমচার ঝোপ সুন্দর করে ফুলের পাপড়ি দিয়ে সাজানো। ফুলের রেণু মাখিয়ে আলাদা একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
কিছুক্ষণ পর আরও কয়েকটা প্রজাপতি আর মৌমাছি ধরাধরি করে কী যেন একটা নিয়ে এল। রাখল ঝোপের ওপর সুন্দর করে সাজানো জট পাকানো পাতার ওপর।
এতক্ষণে ফাবিহা বুঝল, ওটা একটা কেক। খুব ছোট ছোট পোকা আর ফুলের মধু দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ওটাকে। ফাবিহার হাসি পেল। আবার ভালোও লাগল। বলল, ‘বাহ্, তোমরা তো ভারি সুন্দর জন্মদিন পার্টির আয়োজন করেছ! আমি এখানে না এলে তো এই মজার আয়োজনটাই মিস করতাম! কিন্তু যাকে ঘিরে এত আয়োজন, সে কোথায়?’
ফাবিহার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুটো সোনালি রঙের প্রজাপতি একটা লাল ফড়িংকে নিয়ে হাজির। লাল ফড়িংকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। সারা শরীর উজ্জ্বল আলোয় যেন ঝলমল করছে। একদিকে বিকেলের চমৎকার সোনা-রোদের আনাগোনা। সেই রোদ গায়ে মাখার কারণে দিব্যি রোশনাই ছড়াচ্ছে চারদিকে।
লাল ফড়িংটা ফাবিহার দিকে চোখ পিটপিট করে তাকাল। ফাবিহা ওকে হাতে নিয়ে আলতো করে আদর বুলিয়ে দিল। লাল ফড়িং পাখা নাড়িয়ে আনন্দ প্রকাশ করল।
এরপর এল কেক কাটার সময়। সবাই হাজির। ফাবিহা ছোট্ট কেকটাকে হাতে তুলে নিল। ঘাসফড়িঙের লম্বা শুঁড় ছুরির ভূমিকা পালন করল। লাল ফড়িঙের মা-বাবা এলে কেক কাটা শুরু হলো।
সবাই গেয়ে উঠল—
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ প্রিয় লাল ফড়িং।
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ...
গানের তালে তালে সবাই নাচতে লাগল। আর একটু একটু করে কেক খেতে লাগল। ওদের এই আনন্দে শামিল হতে পেরে ফাবিহার খুব ভালো লাগল। ভাবল, জন্মদিনে তো উপহারও দিতে হয়। কালই একটু ভেবেচিন্তে একটা উপহার আনবে লাল ফড়িঙের জন্য।
No comments