রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: শ্রমিকদের মধ্যে ৫১ ভাগ এখনো বেকার
রানা
প্লাজা দুর্ঘটনার শিকার জীবিত শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ এখন কর্মহীন। যার হার
দু’বছর আগে ছিল ৪২ শতাংশ। শ্রমিকরা শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতার কারণেই কাজ
করতে পারছেন না। এছাড়াও দুর্ঘটনার পরে ঘোষিত শ্রমিকদের জন্য পোশাকখাতে
উন্নয়নে মালিক ও ক্রেতাদের যেসব উদ্যোগের কথা বলেছিলেন সরকার, তা বাস্তবায়ন
হচ্ছে না বলেও জানায় অ্যাকশন এইড।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্রাক সেন্টারে রানা প্লাজায় দুর্ঘটনার শিকার জীবিত শ্রমিকদের উপর করা একটি জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া প্রাতিষ্ঠানিক না হওয়ায় শ্রমিকদের এই অবস্থা। সেই সঙ্গে গতি কমছে পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতেও। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার ৬ বছর স্মরণে অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যাকশন এইড’র বাংলাদেশ‘র ম্যানেজার নুজহাত জেবিন গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে উঠে আসে, আহত ২০ দশমিক ৫ শতাংশ শ্রমিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। গত বছর এই হার ছিল ১২ শতাংশ। এবার ৫১ শতাংশ বলছেন, তাদের শারীরিক অবস্থা কোনরকম স্থিতিশীল। অন্যদিকে ৫১ শতাংশ শ্রমিক কাজ করতে পারছেন না। এরমধ্যে ৭৪ শতাংশ শারীরিক এবং ২৭ শতাংশ মানসিক দুর্বলতায় কর্মহীন। যারা কাজে যেতে পেরেছেন তাদের মধ্যে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ আহত শ্রমিক গার্মেন্টসে ফেরত গেছেন। আহতদের ২০ শতাংশ জানান তাদের পারিবারিক উপার্জন সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা।
অ্যাকশন এইডের ২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে তৈরি একটি টি-শার্টের বৈশ্বিক দাম ৪ দশমিক ২৫ পাউন্ড। বাংলাদেশের শ্রমিক পান মাত্র ১ দশমিক ৫ সেন্ট। আর ২০১৯ সালের গবেষণা অনুযায়ী, ১৮ দশমিক ২৫ ডলার মূল্যের টি-শার্ট তৈরি করে একজন শ্রমিক পান মাত্র ০ দশমিক ৫৪ সেন্ট।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত জীবিত এবং মৃত শ্রমিকদের নিয়ে ১৪শ’ শ্রমিকের একটি ডাটাবেজ তৈরি করে অ্যাকশন এইড, ২০১৩ সালে। তারা এবছর ২শ’ জন আহত শ্রমিকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে।
অ্যাকশন এইড’র বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ক্ষতিপূরণ একটি অধিকার। যদি সংঘবদ্ধভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়া হতো তাহলে রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকদের বর্তমান চিত্রটা হয়তো ভিন্ন হতো। বিছিন্নভাবে দেয়া ক্ষতিপূরণের টাকা কোন উপকারেই আসেনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম বলেন, ৬ বছর পর পরিস্থিতির আরও উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হচ্ছে। দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের জন্য উদ্যোগের প্রতিশ্রুতির গতি কমে গেছে।
সোসালিস্ট লেবার ফ্রন্ট’র সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ঘটেছিল কারণ সেখানে নিরাপত্তার কোন বালাই ছিল না। মালিক বা বিদেশী ক্রেতাদের ছিলো না জবাবদিহিতা। আহত শ্রমিকরা এখানো ফিরতে পারছে না কাজে। তারা খন্ডকালীন ক্ষতিপূরণ পেলেও কোন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দাঁড়ায়নি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)’এর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টউমো পৌটিয়ানেন বলেন, অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু অনেক কিছু করার এখনও বাকি আছে। বিশেষ করে উদ্যোগগুলো প্রাতিষ্ঠানিক করা খুবই জরুরি। সমন্বিত উদ্যোগের অনেক অভাব আছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট কৌশল নেয়া প্রয়োজন। শ্রমিকের নিরাপত্তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। যদি একটি দুর্ঘটনা ঘটে, তার জন্য অবশ্যই একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো থাকা উচিৎ। ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জন্য।
সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভুঁইয়া বলেন, রানা প্লাজা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা খুবই জরুরি। শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো, বাসস্থান ও রান্নাঘর ইত্যাদি বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নেব। মজুরি বাড়ালে বাড়িওয়ালারা সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এটা বন্ধে আমরা উদ্যোগ নেব।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসের ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনাগুলোর একটি। এই দুর্ঘটনায় ইউরোপিয়ান এবং উত্তর আমেরিকান ফ্যাশন ব্র্যান্ডদের জন্য পোশাক প্রস্তুত করা পাঁচটি কারখানার ১ হাজারের বেশি শ্রমিক প্রাণ হারান। আহত হন আরো সমসংখ্যক শ্রমিক। পোশাক খাতের কর্মক্ষেত্রে নিম্নমানের ব্যবস্থাপনা এবং আশঙ্কাজনক কর্ম-পরিবেশের উদাহরণ হয় এই রানা প্লাজা দুর্ঘটনা।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্রাক সেন্টারে রানা প্লাজায় দুর্ঘটনার শিকার জীবিত শ্রমিকদের উপর করা একটি জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া প্রাতিষ্ঠানিক না হওয়ায় শ্রমিকদের এই অবস্থা। সেই সঙ্গে গতি কমছে পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতেও। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার ৬ বছর স্মরণে অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যাকশন এইড’র বাংলাদেশ‘র ম্যানেজার নুজহাত জেবিন গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে উঠে আসে, আহত ২০ দশমিক ৫ শতাংশ শ্রমিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। গত বছর এই হার ছিল ১২ শতাংশ। এবার ৫১ শতাংশ বলছেন, তাদের শারীরিক অবস্থা কোনরকম স্থিতিশীল। অন্যদিকে ৫১ শতাংশ শ্রমিক কাজ করতে পারছেন না। এরমধ্যে ৭৪ শতাংশ শারীরিক এবং ২৭ শতাংশ মানসিক দুর্বলতায় কর্মহীন। যারা কাজে যেতে পেরেছেন তাদের মধ্যে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ আহত শ্রমিক গার্মেন্টসে ফেরত গেছেন। আহতদের ২০ শতাংশ জানান তাদের পারিবারিক উপার্জন সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা।
অ্যাকশন এইডের ২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে তৈরি একটি টি-শার্টের বৈশ্বিক দাম ৪ দশমিক ২৫ পাউন্ড। বাংলাদেশের শ্রমিক পান মাত্র ১ দশমিক ৫ সেন্ট। আর ২০১৯ সালের গবেষণা অনুযায়ী, ১৮ দশমিক ২৫ ডলার মূল্যের টি-শার্ট তৈরি করে একজন শ্রমিক পান মাত্র ০ দশমিক ৫৪ সেন্ট।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত জীবিত এবং মৃত শ্রমিকদের নিয়ে ১৪শ’ শ্রমিকের একটি ডাটাবেজ তৈরি করে অ্যাকশন এইড, ২০১৩ সালে। তারা এবছর ২শ’ জন আহত শ্রমিকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে।
অ্যাকশন এইড’র বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ক্ষতিপূরণ একটি অধিকার। যদি সংঘবদ্ধভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়া হতো তাহলে রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকদের বর্তমান চিত্রটা হয়তো ভিন্ন হতো। বিছিন্নভাবে দেয়া ক্ষতিপূরণের টাকা কোন উপকারেই আসেনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম বলেন, ৬ বছর পর পরিস্থিতির আরও উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হচ্ছে। দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের জন্য উদ্যোগের প্রতিশ্রুতির গতি কমে গেছে।
সোসালিস্ট লেবার ফ্রন্ট’র সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ঘটেছিল কারণ সেখানে নিরাপত্তার কোন বালাই ছিল না। মালিক বা বিদেশী ক্রেতাদের ছিলো না জবাবদিহিতা। আহত শ্রমিকরা এখানো ফিরতে পারছে না কাজে। তারা খন্ডকালীন ক্ষতিপূরণ পেলেও কোন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দাঁড়ায়নি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)’এর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টউমো পৌটিয়ানেন বলেন, অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু অনেক কিছু করার এখনও বাকি আছে। বিশেষ করে উদ্যোগগুলো প্রাতিষ্ঠানিক করা খুবই জরুরি। সমন্বিত উদ্যোগের অনেক অভাব আছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট কৌশল নেয়া প্রয়োজন। শ্রমিকের নিরাপত্তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। যদি একটি দুর্ঘটনা ঘটে, তার জন্য অবশ্যই একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো থাকা উচিৎ। ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জন্য।
সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভুঁইয়া বলেন, রানা প্লাজা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা খুবই জরুরি। শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো, বাসস্থান ও রান্নাঘর ইত্যাদি বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নেব। মজুরি বাড়ালে বাড়িওয়ালারা সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এটা বন্ধে আমরা উদ্যোগ নেব।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসের ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনাগুলোর একটি। এই দুর্ঘটনায় ইউরোপিয়ান এবং উত্তর আমেরিকান ফ্যাশন ব্র্যান্ডদের জন্য পোশাক প্রস্তুত করা পাঁচটি কারখানার ১ হাজারের বেশি শ্রমিক প্রাণ হারান। আহত হন আরো সমসংখ্যক শ্রমিক। পোশাক খাতের কর্মক্ষেত্রে নিম্নমানের ব্যবস্থাপনা এবং আশঙ্কাজনক কর্ম-পরিবেশের উদাহরণ হয় এই রানা প্লাজা দুর্ঘটনা।
No comments