ব্রেক্সিটের চাপ নিয়ে যাত্রা শুরু থেরেসা মের
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার প্রক্রিয়া (ব্রেক্সিট) শুরুর আসন্ন চাপ মাথায় নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম পুরো একটি দিন অতিবাহিত করেছেন থেরেসা মে। তাঁর নিয়োগ ইইউ ছাড়ার প্রশ্নে গণভোট নিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে যুক্তরাজ্যে চলমান অস্থিরতার আপাতত অবসান ঘটাবে বলে মনে করছেন জোটের নেতারা। এদিকে বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিজে ইইউ জোটে থাকার পক্ষপাতী হলেও ব্রেক্সিটের পক্ষের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে থেরেসা মে যুক্তরাজ্যকে সুষ্ঠুভাবে জোট থেকে বের করার ব্যাপারে তাঁর অঙ্গীকারকেই তুলে ধরেছেন। থেরেসা মের মন্ত্রিসভায় বেফাঁস মন্তব্যের জন্য পরিচিত লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ শুধু যুক্তরাজ্য নয়, প্রতিবেশী ফ্রান্সসহ পুরো ইউরোপকে বিস্মিত করেছে। এ মন্ত্রিসভায় বিদায়ী ক্যামেরন সরকারের বিচারমন্ত্রী মাইকেল গোভের বিদায়ও আলোচ্য বিষয় হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় আরও নেই শিক্ষামন্ত্রী নিকি মরগান ও সংস্কৃতিমন্ত্রী জন উইটেংডেল। সদ্য বিদায়ী মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ডের দপ্তর পরিবর্তন করে তাঁকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্রেক্সিটের পক্ষের প্রচারণাকারী বরিস জনসনের নিয়োগ বিস্ময় ছড়িয়েছে। ক্যামেরনের পদত্যাগ ঘোষণার পর কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের লড়াইয়ে মের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন বেফাঁস মন্তব্যের জন্য পরিচিত জনসন।
বিগত সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন মের মন্ত্রিসভায় স্বপদে রয়ে গেলেন। আর এত দিন নিজের কাছে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব মে তুলে দিয়েছেন সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী অ্যামবার রুডের হাতে। গণভোটে যুক্তরাজ্যের ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে মন্ত্রিপরিষদে ব্রেক্সিটের পক্ষের দুজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এই দুজনের মধ্যে ইইউ ত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য গঠিত ব্রেক্সিট মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডেভিড ডেভিস। আর লিয়াম ফক্স দায়িত্ব পেয়েছেন এই জোটের বাইরে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার। ক্যামেরন মন্ত্রিসভার পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সদস্য সাজিদ জাভেদকে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বের স্থানীয় সরকারবিষয়ক মন্ত্রণালয় দিয়েছেন মে। অথচ সাজিদ জাভেদকে দলের উঠতি নেতা, এমনকি ভবিষ্যৎ প্রধান হিসেবে দেখছিলেন অনেকে। এদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রধান মার্টিন শুলজ থেরেসা মের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, মের পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভা আগের ‘বিপজ্জনক রকম দুষ্টচক্রকেই’ অব্যাহত রাখবে, যা যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ উভয়ের ক্ষতি করবে। শুলজ বলেন, ক্যামেরনের আমলের মতোই জাতীয় স্বার্থরক্ষার চেয়ে দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটানোই এ মন্ত্রিসভা গঠনের লক্ষ্য।
No comments