ভূরাজনীতি- ইউরোপে কট্টরপন্থার ভূতের আছর by জোসেফ ই স্টিগলিৎজ
প্রাচীনকালে বলা হতো, ‘বাস্তবতা যদি তত্ত্বের সঙ্গে না যায়, তাহলে তত্ত্ব পরিবর্তন করতে হবে।’ কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, তত্ত্ব পরিবর্তনের চেয়ে তথ্য পরিবর্তন করা সহজ। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ অন্য কট্টরপন্থী ইউরোপীয় নেতারা এ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন বলেই মনে হয়। যদিও প্রকৃত ঘটনা মুখের ওপর বলে দিচ্ছে তাঁরা ঠিক নন, তাঁরা ক্রমাগত বাস্তবতা অস্বীকার করে যাচ্ছেন।
কট্টরপন্থা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এর প্রবক্তারা দুর্বলতম সাক্ষ্যের ভিত্তিতেও নিজেদের জয় দাবি করে যাচ্ছেন: অর্থনীতিতে ধস নামছে না, ফলে কট্টরপন্থা কাজ করছে। সেটাই যদি মানদণ্ড হয়, তাহলে খাদের কিনার থেকে লাফ দেওয়া পাহাড় থেকে নামার সবচেয়ে ভালো উপায়, কারণ এতে অন্তত পতন ঠেকানো যায়।
কিন্তু প্রতিটি নিম্নমুখী প্রবণতারও শেষ আছে। শেষ পর্যন্ত পুনর্গঠন হয়, এটা দিয়ে কোনো কিছুর সফলতা নির্ণয় করা যায় না। বরং কত তাড়াতাড়ি পুরো ব্যাপারটিকে আমলে নেওয়া যায়, তার ভিত্তিতে সফলতা নির্ধারণ করা হয়। আর মন্দার কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হলো, সেটাও বুঝতে হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে বোঝা যায়, কট্টরপন্থা একটি ঘোরতর ও চরম বিপর্যয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো আবারও মন্দার মুখে পড়েছে, যদিও সেটা তেমন দীর্ঘমেয়াদি কোনো ব্যাপার নয়। ইউরোপে বেকারত্বের হার রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, আর জনপ্রতি প্রকৃত দেশজ উৎপাদন (মুদ্রাস্ফীতি সমন্বয়ের পর) মন্দাপূর্ব সময়ের চেয়েও কম। এমনকি জার্মানির মতো সবচেয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশেও ২০০৮ সালের মন্দার পর প্রবৃদ্ধির হার এত কম যে অন্য কোনো সময় হলে সেটা নীরস হিসেবে বিবেচিত হতো।
সেই মন্দায় সবচেয়ে পীড়িত দেশগুলো এখনো তা কটিয়ে উঠতে পারেনি। স্পেন বা গ্রিসের মতো দেশগুলোর কথা কী আর বলব। সেসব দেশে প্রতি চারজনে একজন ও তরুণদের অর্ধেকেরই কোনো কাজ নেই। বেকারত্বের হার কয়েক পয়েন্ট কমেছে বা প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়েছে—এ যুক্তি দিয়ে যদি বলা হয় ওষুধে কাজ হয়েছে, তাহলে তা মধ্যযুগের শিরা কেটে রক্তপাতের মাধ্যমে চিকিৎসায় রোগী মারা যায়নি বলে এর সফলতা দাবি করার শামিল।
১৯৮০-এর দশক থেকে ইউরোপের শ্লথ প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে হিসাব করে দেখেছি, ২০০৮ সালের মন্দা না হলে ইউরো অঞ্চলের আজ যে পরিমাণ উৎপাদন হওয়ার কথা, তার চেয়ে এখন তা ১৫ শতাংশ কম। এ বছরই ক্ষতি হয়েছে ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার, আর সম্মিলিতভাবে তা ৬ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। আরও চিন্তার বিষয় হচ্ছে, এই পার্থক্য ক্রমেই বাড়ছে, কমছে না (অথচ একটি মন্দার পর সাধারণভাবে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রবৃদ্ধির হার বেশি হওয়ার কথা)।
সহজভাবে বললে, ইউরোপের এই দীর্ঘ মন্দা মহাদেশটির সম্ভাবনা বিনষ্ট করে দিচ্ছে। তরুণেরা নিজেদের দক্ষতা বাড়াবে, সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু বাস্তবে তা ঘটছে না। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে, তাদের জীবদ্দশায় মোট উপার্জনের পরিমাণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সার্বক্ষণিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তাদের জীবনে আসলে এই উপার্জন আরও অনেক বেশি হতো।
এদিকে জার্মানির নীতির কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে গেলেও তারা অন্যদের সেটা অনুসরণ করতে বাধ্য করছে। তাদের গণতন্ত্রও এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জনগণ ক্রমাগত এই নীতি পরিবর্তনের পক্ষে মত দিচ্ছে, কিন্তু তাদের যখন সব সময় বলা হয়, এসব বিষয় অন্যত্র নির্ধারিত হয় বা তাদের কোনো গত্যন্তর নেই, তখন গণতন্ত্র ও ইউরোপীয় প্রকল্প দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ, যেসব নীতি মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস করে, সেগুলো তারা গ্রহণ করে না।
তিন বছর আগে ফ্রান্স এসব পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিল। এর বদলে ভোটারদের ব্যবসাবান্ধব কট্টরপন্থার ডোজ দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতিতে ব্যালান্সড বাজেট মাল্টিপ্লায়ার নামে বহু পুরোনো একটি ধারণা রয়েছে। সে ধারণা অনুযায়ী কর ও ব্যয় বাড়ানো হলে অর্থনীতিতে গতি আসে। করের লক্ষ্যবস্তু যদি ধনীরা হয় আর ব্যয়ের লক্ষ্যবস্তু হয় গরিবেরা, তাহলে মাল্টিপ্লায়ার অনেক উচ্চ হয়। কিন্তু ফ্রান্সের তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক সরকার করপোরেট কর ও ব্যয় হ্রাস করছে। এ নীতিতে অর্থনীতি নিশ্চিতভাবে শ্লথ হয়ে পড়বে, কিন্তু জার্মানরা এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
করপোরেট করের হার কমানো হলে বিনিয়োগ বাড়বে। এটা খুবই বাজে কথা। চাহিদা কম থাকার কারণে উৎপাদন ব্যাহত (ইউরোপ ও আমেরিকা উভয় স্থানেই) হচ্ছে, করের কারণে নয়। কথা হচ্ছে, বিনিয়োগ হয় সাধারণত ঋণের টাকায়, আর এই ঋণের সুদ করযোগ্য, ফলে করপোরেট কর বিনিয়োগে খুব কম প্রভাবই ফেলে।
একইভাবে, ইতালিতে বেসরকারীকরণ উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিন্তু দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাতেও রেনজি জানেন, বাজারমূল্যের কম দামে জাতীয় সম্পদ বিক্রি করে কোনো লাভ নেই। স্বল্পমেয়াদি জরুরি অবস্থার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিবেচনায় বেসরকারি খাত পরিচালিত হওয়া উচিত। কোথায় সবচেয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করা যায়, তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যেটা অধিকাংশ জনগণের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।
পেনশন বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়ে কোনো লাভ হয়নি, যারা এ কাজ করেছে, তারা ভুগেছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাত প্রায় পুরোটাই বেসরকারি, এটা দুনিয়ার সবচেয়ে অদক্ষ। এসব বড়ই জটিল প্রশ্ন। কিন্তু পানির দামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেচে দিয়ে কোনো লাভ হয় না, এটা প্রমাণ করা সহজ। এটা আর্থিক খাতের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে কোনো সুফল বয়ে আনতে পারে না।
ইউরোপ আজ যে দুর্দশায় পড়েছে, সেটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। ফলে সেটা বিয়োগান্ত হয়ে উঠেছে। কিছু মানুষের ধূর্ততার কারণে এটা হয়েছে। কট্টরপন্থায় কোনো কাজ হচ্ছে না, এর সপক্ষে প্রমাণের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তার পরও জার্মানি ও তার সমমনারা এই নীতি আরও কঠিনভাবে আঁকড়ে ধরছে। ফলে ইউরোপের ভবিষ্যৎ দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের আরও প্রমাণ দিয়ে লাভ কী?
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
জোসেফ ই স্টিগলিৎজ: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
কট্টরপন্থা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এর প্রবক্তারা দুর্বলতম সাক্ষ্যের ভিত্তিতেও নিজেদের জয় দাবি করে যাচ্ছেন: অর্থনীতিতে ধস নামছে না, ফলে কট্টরপন্থা কাজ করছে। সেটাই যদি মানদণ্ড হয়, তাহলে খাদের কিনার থেকে লাফ দেওয়া পাহাড় থেকে নামার সবচেয়ে ভালো উপায়, কারণ এতে অন্তত পতন ঠেকানো যায়।
কিন্তু প্রতিটি নিম্নমুখী প্রবণতারও শেষ আছে। শেষ পর্যন্ত পুনর্গঠন হয়, এটা দিয়ে কোনো কিছুর সফলতা নির্ণয় করা যায় না। বরং কত তাড়াতাড়ি পুরো ব্যাপারটিকে আমলে নেওয়া যায়, তার ভিত্তিতে সফলতা নির্ধারণ করা হয়। আর মন্দার কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হলো, সেটাও বুঝতে হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে বোঝা যায়, কট্টরপন্থা একটি ঘোরতর ও চরম বিপর্যয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো আবারও মন্দার মুখে পড়েছে, যদিও সেটা তেমন দীর্ঘমেয়াদি কোনো ব্যাপার নয়। ইউরোপে বেকারত্বের হার রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, আর জনপ্রতি প্রকৃত দেশজ উৎপাদন (মুদ্রাস্ফীতি সমন্বয়ের পর) মন্দাপূর্ব সময়ের চেয়েও কম। এমনকি জার্মানির মতো সবচেয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশেও ২০০৮ সালের মন্দার পর প্রবৃদ্ধির হার এত কম যে অন্য কোনো সময় হলে সেটা নীরস হিসেবে বিবেচিত হতো।
সেই মন্দায় সবচেয়ে পীড়িত দেশগুলো এখনো তা কটিয়ে উঠতে পারেনি। স্পেন বা গ্রিসের মতো দেশগুলোর কথা কী আর বলব। সেসব দেশে প্রতি চারজনে একজন ও তরুণদের অর্ধেকেরই কোনো কাজ নেই। বেকারত্বের হার কয়েক পয়েন্ট কমেছে বা প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়েছে—এ যুক্তি দিয়ে যদি বলা হয় ওষুধে কাজ হয়েছে, তাহলে তা মধ্যযুগের শিরা কেটে রক্তপাতের মাধ্যমে চিকিৎসায় রোগী মারা যায়নি বলে এর সফলতা দাবি করার শামিল।
১৯৮০-এর দশক থেকে ইউরোপের শ্লথ প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে হিসাব করে দেখেছি, ২০০৮ সালের মন্দা না হলে ইউরো অঞ্চলের আজ যে পরিমাণ উৎপাদন হওয়ার কথা, তার চেয়ে এখন তা ১৫ শতাংশ কম। এ বছরই ক্ষতি হয়েছে ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার, আর সম্মিলিতভাবে তা ৬ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। আরও চিন্তার বিষয় হচ্ছে, এই পার্থক্য ক্রমেই বাড়ছে, কমছে না (অথচ একটি মন্দার পর সাধারণভাবে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রবৃদ্ধির হার বেশি হওয়ার কথা)।
সহজভাবে বললে, ইউরোপের এই দীর্ঘ মন্দা মহাদেশটির সম্ভাবনা বিনষ্ট করে দিচ্ছে। তরুণেরা নিজেদের দক্ষতা বাড়াবে, সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু বাস্তবে তা ঘটছে না। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে, তাদের জীবদ্দশায় মোট উপার্জনের পরিমাণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সার্বক্ষণিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তাদের জীবনে আসলে এই উপার্জন আরও অনেক বেশি হতো।
এদিকে জার্মানির নীতির কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে গেলেও তারা অন্যদের সেটা অনুসরণ করতে বাধ্য করছে। তাদের গণতন্ত্রও এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জনগণ ক্রমাগত এই নীতি পরিবর্তনের পক্ষে মত দিচ্ছে, কিন্তু তাদের যখন সব সময় বলা হয়, এসব বিষয় অন্যত্র নির্ধারিত হয় বা তাদের কোনো গত্যন্তর নেই, তখন গণতন্ত্র ও ইউরোপীয় প্রকল্প দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ, যেসব নীতি মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস করে, সেগুলো তারা গ্রহণ করে না।
তিন বছর আগে ফ্রান্স এসব পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিল। এর বদলে ভোটারদের ব্যবসাবান্ধব কট্টরপন্থার ডোজ দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতিতে ব্যালান্সড বাজেট মাল্টিপ্লায়ার নামে বহু পুরোনো একটি ধারণা রয়েছে। সে ধারণা অনুযায়ী কর ও ব্যয় বাড়ানো হলে অর্থনীতিতে গতি আসে। করের লক্ষ্যবস্তু যদি ধনীরা হয় আর ব্যয়ের লক্ষ্যবস্তু হয় গরিবেরা, তাহলে মাল্টিপ্লায়ার অনেক উচ্চ হয়। কিন্তু ফ্রান্সের তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক সরকার করপোরেট কর ও ব্যয় হ্রাস করছে। এ নীতিতে অর্থনীতি নিশ্চিতভাবে শ্লথ হয়ে পড়বে, কিন্তু জার্মানরা এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
করপোরেট করের হার কমানো হলে বিনিয়োগ বাড়বে। এটা খুবই বাজে কথা। চাহিদা কম থাকার কারণে উৎপাদন ব্যাহত (ইউরোপ ও আমেরিকা উভয় স্থানেই) হচ্ছে, করের কারণে নয়। কথা হচ্ছে, বিনিয়োগ হয় সাধারণত ঋণের টাকায়, আর এই ঋণের সুদ করযোগ্য, ফলে করপোরেট কর বিনিয়োগে খুব কম প্রভাবই ফেলে।
একইভাবে, ইতালিতে বেসরকারীকরণ উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিন্তু দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাতেও রেনজি জানেন, বাজারমূল্যের কম দামে জাতীয় সম্পদ বিক্রি করে কোনো লাভ নেই। স্বল্পমেয়াদি জরুরি অবস্থার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিবেচনায় বেসরকারি খাত পরিচালিত হওয়া উচিত। কোথায় সবচেয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করা যায়, তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যেটা অধিকাংশ জনগণের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।
পেনশন বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়ে কোনো লাভ হয়নি, যারা এ কাজ করেছে, তারা ভুগেছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাত প্রায় পুরোটাই বেসরকারি, এটা দুনিয়ার সবচেয়ে অদক্ষ। এসব বড়ই জটিল প্রশ্ন। কিন্তু পানির দামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেচে দিয়ে কোনো লাভ হয় না, এটা প্রমাণ করা সহজ। এটা আর্থিক খাতের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে কোনো সুফল বয়ে আনতে পারে না।
ইউরোপ আজ যে দুর্দশায় পড়েছে, সেটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। ফলে সেটা বিয়োগান্ত হয়ে উঠেছে। কিছু মানুষের ধূর্ততার কারণে এটা হয়েছে। কট্টরপন্থায় কোনো কাজ হচ্ছে না, এর সপক্ষে প্রমাণের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তার পরও জার্মানি ও তার সমমনারা এই নীতি আরও কঠিনভাবে আঁকড়ে ধরছে। ফলে ইউরোপের ভবিষ্যৎ দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের আরও প্রমাণ দিয়ে লাভ কী?
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
জোসেফ ই স্টিগলিৎজ: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
No comments