আমেরিকা শুধু বিমান হামলা চালায় by তৌহিদুল ইসলাম
যুক্তরাষ্ট্র
সম্পর্কে প্রচলিত একটি কথা আছে—‘নেতা বদলায়, নীতি বদলায় না।’ বিভিন্ন সময়ে
দেশটিতে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, কিন্তু পররাষ্ট্রনীতিতে তেমন কোনো
পরিবর্তন আসেনি। যুদ্ধবিগ্রহের মানসিকতা ও অন্যান্য দেশের ওপর কর্তৃত্ববাদ
ধরে রাখায় তারা সর্বদা পটু। স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো দেশ বা জাতিগোষ্ঠীর ওপর
বিধ্বংসী হামলা করতেও দ্বিধা করে না যুক্তরাষ্ট্র।
গত প্রায় দুই দশকের ইতিহাস সেটাই বলছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আল–কায়েদাকে দায়ী করে আফগানিস্তানে বিমান হামলায় চালিয়ে বিধ্বস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সহিংস মনোভাবের কারণে ক্ষতবিক্ষত হয় পাহাড়বেষ্টিত আফগানিস্তান। এরপর ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালানো হয়। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে পরাস্ত করে ক্ষমতায় আনা হয় মার্কিন মদদপুষ্ট নেতা নুরি আল মালিকিকে। যুদ্ধ, সহিংসতা ও নৃশংস কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পার হয় ডব্লিউ বুশের আট বছরের শাসনামল।
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থেকে সরে আসার আহ্বান এবং ‘আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন’ স্লোগান নিয়ে ২০০৯ সালে মার্কিন গদিতে বসেন কেনীয় বংশোদ্ভূত বারাক ওবামা। তাঁকে শান্তিতে নোবেল দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করা হলেও তিনি শান্তির বার্তা নিয়ে আসতে পারেননি। তাঁর শাসনামলেই আরব বসন্তের আবির্ভাব ঘটে। ওবামা প্রশাসনের কূটচালে গণবিক্ষোভে মিসর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশ টালমাটাল হয়ে ওঠে। এসব দেশে ক্ষমতায় বসেন মার্কিন মদদপুষ্ট ব্যক্তিরা।
যুদ্ধ ও সহিংসতা থেকে সরে এসে ‘আমেরিকাকে ফের মহান’ বানানোর ঘোষণা দিয়ে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেই ঘোষণাও আছে মুখ থুবড়ে। বরং ‘পা মাড়িয়ে দিয়ে ঝামেলা’ পাকানোর স্বভাব দেখা যায় তাঁর মধ্যে। ক্ষমতায় যাওয়ার পরপরই সিরিয়া, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান—এই ছয় মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে পরিকল্পনা করেন তিনি। সন্ত্রাসী ও আইএস জঙ্গি দমনের নামে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় একের পর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। শত্রু মোকাবিলায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটো আকাশপথকে নিরাপদ মনে করে থাকে। তাই সোমালিয়া, সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানে যত্রতত্র বিমান হামলা চালিয়ে বিমান হামলায় ‘ওস্তাদ’ বনে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিমান হামলার সংখ্যার দিক থেকেও এগিয়ে দেশটি।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে গত মার্চ মাস পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় ১০৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এতে নিহত হয়েছে প্রায় ৮০০ জন। পেন্টাগন বলছে, নিহত সবাই জিহাদি (যোদ্ধা)। অবশ্য পেন্টাগনের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব আল–কায়েদার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সোমালিয়ার এক–চতুর্থাংশ দখলে নিয়েছে। ২০১৬ সালে সেখানে ১৪টি বিমান হামলা হয়েছে, আর গত বছর তিন গুণ বেড়ে সেই হামলার সংখ্যা হয়েছে ৪৫। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিমান হামলার সংখ্যা ২৮।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছরে সোমালিয়ায় ১১০টি মার্কিন বিমান হামলায় আট শতাধিক মানুষ মারা গেছে। ২০১৮ সালে দেশটিতে ৪৭টি ড্রোন ও বিমান হামলা চালানো হয়। আর ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই ২৫টির বেশি বিমান হামলা চালানো হয়। সম্প্রতি সেখানে হামলায় ১৪ জন মারা গেছে।
পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাকশন ওন আর্মড ভায়োলেন্সের (এওএভি) তথ্যমতে, গত এক দশকের চেয়ে ২০১৮ সালে আফগানিস্তানে বেশি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র ফেলেছে আমেরিকা, যা ২০১৫ সালের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। বিমান হামলায় ২০১৭ সালের বেসামরিক লোকের মৃত্যুর হার বেড়ে হয়েছে ৮৭ শতাংশ। আর ২০১৮ সালে নিহত মানুষের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৬৩।
এসব বোমা হামলা শুধু মার্কিন বাহিনীর নয়, আফগান বিমানবাহিনীও পাল্টা বিমান হামলা চালিয়ে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অবশ্য তা বেশি শক্তিশালী ছিল না। আফগানিস্তানে কাজ করা ইউনাইটেড ন্যাশনস অ্যাসিস্ট্যান্ট মিশনের (উনামা) মূল্যায়ন এওএভির মতোই। উনামা বলছে, বিমান হামলা–সংশ্লিষ্ট ৬২ শতাংশ নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায়। আর এই বিমানশক্তির উৎস আমেরিকা।
হামলায় হতাহত হওয়ার সংখ্যা কম গণনা করে তালিকাভুক্ত করেছে আমেরিকান কমান্ডাররা। আর কীভাবে হামলার সময় বেসামরিক হতাহত হওয়ার ঘটনা এড়ানো যায়, এ বিষয়ে গবেষণার করছেন ল্যারি লুইস। তিনি পেন্টাগনের সাতটি গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। হামলার আগে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেছেন লুইস। অবশ্য সেই তথ্য কখনোই বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি।
হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার বিষয়ে চোখ বন্ধ করে থাকেনি পেন্টাগন। তারা সব সমালোচনার নোট রেখেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে আগের তিন বছরের হামলায় বেসামরিক হতাহত হওয়ার বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছে তারা। গবেষণায় জোর দিয়ে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত বেসামরিক লোক হতাহত হওয়া কমানোর বিষয়ে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইরে থেকে আসা অভিযোগ অনুযায়ী ৫৮ শতাংশ বেসামরিক লোক হতাহত হওয়ার পরিসংখ্যান ‘বিশ্বাসযোগ্য’। এ বিষয়ে অবশ্য আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীর তথ্য বেসরকারি সংস্থার তথ্যের প্রায়ই একই রকম। লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এয়ারওয়ার্সের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে জোটের এক হাজার ঘটনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেসামরিক লোক হতাহত হওয়ার শিকার হয়েছে।
এয়ারওয়ার্স মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে। নিয়মিতভাবে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ডের তথ্য–উপাত্ত তুলে ধরে। এয়ারওয়্যার্সের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ক্রিস উডস বলেন, হামলায় বেসামরিক লোকদের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ানদের চেয়ে আমেরিকানরা বেশি এগিয়ে। অবশ্য তাঁর এই বক্তব্যে একটি বিষয় পরিষ্কার যে হামলায় হতাহত মানুষের সংখ্যা কমানো বিষয়ে তারা তৎপর। কিন্তু হামলার সংখ্যা কমানোর বিষয়ে তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। সুতরাং স্বার্থ হাসিলে ‘ওস্তাদদের ওস্তাদি’ চলতেই থাকবে—এ নিয়ে সংশয় নেই।
গত প্রায় দুই দশকের ইতিহাস সেটাই বলছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আল–কায়েদাকে দায়ী করে আফগানিস্তানে বিমান হামলায় চালিয়ে বিধ্বস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সহিংস মনোভাবের কারণে ক্ষতবিক্ষত হয় পাহাড়বেষ্টিত আফগানিস্তান। এরপর ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালানো হয়। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে পরাস্ত করে ক্ষমতায় আনা হয় মার্কিন মদদপুষ্ট নেতা নুরি আল মালিকিকে। যুদ্ধ, সহিংসতা ও নৃশংস কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পার হয় ডব্লিউ বুশের আট বছরের শাসনামল।
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থেকে সরে আসার আহ্বান এবং ‘আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন’ স্লোগান নিয়ে ২০০৯ সালে মার্কিন গদিতে বসেন কেনীয় বংশোদ্ভূত বারাক ওবামা। তাঁকে শান্তিতে নোবেল দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করা হলেও তিনি শান্তির বার্তা নিয়ে আসতে পারেননি। তাঁর শাসনামলেই আরব বসন্তের আবির্ভাব ঘটে। ওবামা প্রশাসনের কূটচালে গণবিক্ষোভে মিসর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশ টালমাটাল হয়ে ওঠে। এসব দেশে ক্ষমতায় বসেন মার্কিন মদদপুষ্ট ব্যক্তিরা।
যুদ্ধ ও সহিংসতা থেকে সরে এসে ‘আমেরিকাকে ফের মহান’ বানানোর ঘোষণা দিয়ে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেই ঘোষণাও আছে মুখ থুবড়ে। বরং ‘পা মাড়িয়ে দিয়ে ঝামেলা’ পাকানোর স্বভাব দেখা যায় তাঁর মধ্যে। ক্ষমতায় যাওয়ার পরপরই সিরিয়া, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান—এই ছয় মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে পরিকল্পনা করেন তিনি। সন্ত্রাসী ও আইএস জঙ্গি দমনের নামে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় একের পর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। শত্রু মোকাবিলায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটো আকাশপথকে নিরাপদ মনে করে থাকে। তাই সোমালিয়া, সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানে যত্রতত্র বিমান হামলা চালিয়ে বিমান হামলায় ‘ওস্তাদ’ বনে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিমান হামলার সংখ্যার দিক থেকেও এগিয়ে দেশটি।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে গত মার্চ মাস পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় ১০৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এতে নিহত হয়েছে প্রায় ৮০০ জন। পেন্টাগন বলছে, নিহত সবাই জিহাদি (যোদ্ধা)। অবশ্য পেন্টাগনের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব আল–কায়েদার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সোমালিয়ার এক–চতুর্থাংশ দখলে নিয়েছে। ২০১৬ সালে সেখানে ১৪টি বিমান হামলা হয়েছে, আর গত বছর তিন গুণ বেড়ে সেই হামলার সংখ্যা হয়েছে ৪৫। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিমান হামলার সংখ্যা ২৮।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছরে সোমালিয়ায় ১১০টি মার্কিন বিমান হামলায় আট শতাধিক মানুষ মারা গেছে। ২০১৮ সালে দেশটিতে ৪৭টি ড্রোন ও বিমান হামলা চালানো হয়। আর ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই ২৫টির বেশি বিমান হামলা চালানো হয়। সম্প্রতি সেখানে হামলায় ১৪ জন মারা গেছে।
পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাকশন ওন আর্মড ভায়োলেন্সের (এওএভি) তথ্যমতে, গত এক দশকের চেয়ে ২০১৮ সালে আফগানিস্তানে বেশি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র ফেলেছে আমেরিকা, যা ২০১৫ সালের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। বিমান হামলায় ২০১৭ সালের বেসামরিক লোকের মৃত্যুর হার বেড়ে হয়েছে ৮৭ শতাংশ। আর ২০১৮ সালে নিহত মানুষের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৬৩।
এসব বোমা হামলা শুধু মার্কিন বাহিনীর নয়, আফগান বিমানবাহিনীও পাল্টা বিমান হামলা চালিয়ে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অবশ্য তা বেশি শক্তিশালী ছিল না। আফগানিস্তানে কাজ করা ইউনাইটেড ন্যাশনস অ্যাসিস্ট্যান্ট মিশনের (উনামা) মূল্যায়ন এওএভির মতোই। উনামা বলছে, বিমান হামলা–সংশ্লিষ্ট ৬২ শতাংশ নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায়। আর এই বিমানশক্তির উৎস আমেরিকা।
হামলায় হতাহত হওয়ার সংখ্যা কম গণনা করে তালিকাভুক্ত করেছে আমেরিকান কমান্ডাররা। আর কীভাবে হামলার সময় বেসামরিক হতাহত হওয়ার ঘটনা এড়ানো যায়, এ বিষয়ে গবেষণার করছেন ল্যারি লুইস। তিনি পেন্টাগনের সাতটি গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। হামলার আগে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেছেন লুইস। অবশ্য সেই তথ্য কখনোই বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি।
হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার বিষয়ে চোখ বন্ধ করে থাকেনি পেন্টাগন। তারা সব সমালোচনার নোট রেখেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে আগের তিন বছরের হামলায় বেসামরিক হতাহত হওয়ার বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছে তারা। গবেষণায় জোর দিয়ে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত বেসামরিক লোক হতাহত হওয়া কমানোর বিষয়ে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইরে থেকে আসা অভিযোগ অনুযায়ী ৫৮ শতাংশ বেসামরিক লোক হতাহত হওয়ার পরিসংখ্যান ‘বিশ্বাসযোগ্য’। এ বিষয়ে অবশ্য আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীর তথ্য বেসরকারি সংস্থার তথ্যের প্রায়ই একই রকম। লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এয়ারওয়ার্সের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে জোটের এক হাজার ঘটনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেসামরিক লোক হতাহত হওয়ার শিকার হয়েছে।
এয়ারওয়ার্স মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে। নিয়মিতভাবে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ডের তথ্য–উপাত্ত তুলে ধরে। এয়ারওয়্যার্সের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ক্রিস উডস বলেন, হামলায় বেসামরিক লোকদের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ানদের চেয়ে আমেরিকানরা বেশি এগিয়ে। অবশ্য তাঁর এই বক্তব্যে একটি বিষয় পরিষ্কার যে হামলায় হতাহত মানুষের সংখ্যা কমানো বিষয়ে তারা তৎপর। কিন্তু হামলার সংখ্যা কমানোর বিষয়ে তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। সুতরাং স্বার্থ হাসিলে ‘ওস্তাদদের ওস্তাদি’ চলতেই থাকবে—এ নিয়ে সংশয় নেই।
No comments