বৃক্ষমেলায় বেচাকেনার ধুম
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বৃক্ষমেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় -যুগান্তর |
প্রতিদিনই বাড়ছে বৃক্ষমেলার বেচা-বিক্রি ও দর্শনার্থীর সংখ্যা। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে তার আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি গাছ। বৃক্ষমেলা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মেলার শুরু থেকে ৭ দিনে বিক্রি হয়েছে ৬৭ হাজার ৫১৭টি গাছ। এসব গাছ ও অন্যান্য সামগ্রিসহ মোট বিক্রির পরিমাণ ৭৬ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৪ টাকা। বৃক্ষমেলা প্রাঙ্গণের তথ্য কর্মকর্তা বন বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক ইসরাত জাহান যুগান্তরকে বলেন, মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ দর্শনার্থী এখানে আসে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষই এখানে আসে। অধিকাংশ দর্শনার্থী একটি-দুইটি করে গাছও কিনে নিচ্ছে। তিনি বলেন, মেলা শুরুর দিন ৩১ জুলাই বিক্রি হয় ৩ লাখ টাকা, অপরদিকে পহেলা আগস্ট বিক্রি হয় ৫ লাখ টাকা, তার পরের দিন বিক্রি হয় ১২ লাখ টাকা এবং তার পরের দিন বিক্রি হয় ২২ লাখ টাকা। এভাবে প্রতিদিন বিক্রি বেড়েই যাচ্ছে। সরেজমিন আগারগাঁও বৃক্ষমেলা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে। মোট ৬৮টি প্রতিষ্ঠান এ বছর মেলায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাতটি সরকারি এবং ৫০টি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও ৯টি নন-নার্সারি প্রতিষ্ঠান। মেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফল ও ফুলের গাছ। এর মধ্যে বনরূপা নার্সারিতে কিউ জাই জাতের আমের চারা বিক্রি হচ্ছে ৩৮ হাজার টাকায়।
এছাড়া বিভিন্ন জাতের আমের চারা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে। বিভিন্ন জাতের কমলা ও মাল্টার চারা বিক্রি হচ্ছে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে। এছাড়াও প্রত্যেক স্টলেই রয়েছে আলাদা আলাদা এক-দুইটি স্পেশাল ও ব্যাতিক্রমী গাছ। যদিও এসব গাছের দাম ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। গার্ডেনীয় নার্সারির স্টলে রয়েছে এটা ফাইকাস গাছ। বনসাইয়ের মতো দেখতে এই গাছের বয়স ৪০ বছরেরও বেশি। এটার মূল্য ৪ লাখ টাকা। এছাড়াও জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান ও বলধা বাগানের স্টলে পাওয়া যাচ্ছে ব্রাজিল থেকে আনা ‘আমাজন লিলি’। এগুলো বাঁচে ৭ থেকে ৮ মাস। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বনসাই গাছ, যা বিক্রি হচ্ছে ১০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা দামে। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সৌদি খেজুরের গাছ। এছাড়াও রয়েছে রাবারের গাছ, সেখানে আগত দর্শনার্থীদের গাছ থেকে রাবার সংগ্রহের কৌশল দেখানো হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে রাবার গাছের বীজ। গাজীপুর হরটিকালচার নার্সারির কর্মকর্তা আলমগীর বলেন, দেশী-বিদেশী নানা জাতের গাছ, যেমন- আমেরিকান চেরি, মিসরীয় ডুমুর, লঙ্করবাট, মিষ্টি লেবু, তিন রঙের পাকিস্তানি আঙুরসহ বিভিন্ন গাছের চারার দাম আকার অনুযায়ী ৫০ টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বেশিরভাগ বাড়ির মালিক বাড়ির ছাদে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতে বাগান করতে পারেন সেই চিন্তা রেখেই আমরা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এনেছি। মেলা দেখতে আসা আগারগাঁওয়ের একটি স্কুলের ছাত্রী নাজমা আক্তার যুগান্তরকে বলে, নানা ধরনের গাছ দেখে এতই মুগ্ধ হয়েছি যে, না কিনে পারছি না। সে বলল, কিছু ফুল দেখে অবাক হয়েছি, যেমন ঝুমকোলতা ও ক্যামেলিয়া।
No comments