মহিউদ্দিন চৌধুরী কাল আবার সভা ডেকেছেন
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি)
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন সাবেক মেয়র এ বি এম
মহিউদ্দিন চৌধুরী। এর ধারাবাহিকতায় কাল রোববার বিকেলে বন্দর এলাকায় আবার
সভা ডেকেছেন তিনি। তবে তাঁর বিরোধী পক্ষ আপাতত কোনো কর্মসূচি দেয়নি।
বন্দর নাগরিক অধিকার পরিষদের ব্যানারে ডাকা কালকের সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। চাকরিতে স্থানীয় লোকজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং বন্দরের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে। বন্দর নাগরিক অধিকার পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায় করতে চাই।
প্রতিপক্ষ গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধাতে চায়, যার প্রমাণ বৃহস্পতিবারের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ওরা মনে করছে, আমরা বন্দর অচল করে দেব। এ ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের নেই। এনসিটি নিয়ে তাঁদের দুর্নীতি করার পথ বন্ধ করতে আমরা মাঠে নেমেছি।’ এদিকে চট্টগ্রাম চেম্বার আপাতত পাল্টা কর্মসূচি দিতে আগ্রহী নয় বলে জানা গেছে। মামলা-মোকদ্দমাও তারা করবে না। তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম বলেন, ‘অনেক তো হলো। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’ তবে কর্মসূচি দেওয়ার পক্ষে আওয়ামী লীগের সাংসদ এম এ লতিফ। তিনি বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমরাও পাল্টা কর্মসূচি দেব।’ এ ব্যাপারে চেম্বারের পরিচালকেরা বসে তা নির্ধারণ করবেন। চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি দরপত্র নিয়ে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাংসদ এম এ লতিফের বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার চেম্বারে হামলার ঘটনা ঘটে। কারণ, সাংসদ লতিফের সঙ্গে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম যুক্ত হয়েছেন। তাঁদের নেপথ্যে থেকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও আওয়ামী লীগের আরেক সাংসদ শামসুল হক চৌধুরী।
প্রতিক্রিয়া: বন্দরের এনসিটি দরপত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে চট্টগ্রামে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বন্দরের শ্রমিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনাকে ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে আমি জাতীয় স্বার্থের বিষয় দেখছি না। তবে বন্দর নিয়ে এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে আমদানি-রপ্তানি কাজে বিঘ্ন ঘটে।’
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম এনসিটির বিষয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরীর আন্দোলনকে সঠিক বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সাংসদ এম এ লতিফের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম চেম্বার সচেতনভাবে অন্যায় কাজে অংশীদার হয়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী দুই পক্ষের বিরোধকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে এটা আমরা প্রত্যাশা করিনি। কারণ, দুই পক্ষই সচেতন। তারা বরং বন্দরের সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দক্ষতা বাড়ানো এবং আরও কীভাবে গতিশীলতা আনা যায়, সেই কাজ করলে আমরা উপকৃত হব।’
No comments