প্রধানমন্ত্রী ও এমপিদের স্বাৰর জালের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ- সংসদে ডেপুটি স্পীকার

সংসদ রিপোর্টার প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বার জাল করে সুবিধা নেয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সরকারী দলের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের পয়েন্ট অব অর্ডারের জবাবে সংসদ অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পীকার এ নির্দেশ দেন।
এদিকে মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে আত্তীকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বয়স নিয়ে সংসদে প্রশ্ন উঠেছে। মাগরিবের নামাজের বিরতির পর মঙ্গলবার ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব) শওকত আলীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরম্ন হলে এনামুল হক ও এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়া পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিষয়গুলো উত্থাপন করেন। তবে মুজিবনগর সরকারের আত্তীকৃত নিয়ে ফজলে রাবি্ব মিয়ার উত্থাপিত বিষয়টি গ্রহণ না করে ডেপুটি স্পীকার এ ব্যাপারে পৃথক নোটিস দেয়ার জন্য তাঁকে পরামর্শ দেন।
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সরকারী দলের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, বর্তমান সরকার মতায় আসার পরে নানা ষড়যন্ত্র শুরম্নু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের একটি সিন্ডিকেট প্রধানমন্ত্রীর স্বার জাল করে এবং আমার প্যাড ব্যবহার করে ডিও স্বার জাল করে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। ৩/৪ দিন আগে এমন তিনজনকে ধরা হয়েছে। পুলিশের কাছে এসব প্রতারক স্বীকার করেছে ঢাকার একটি সিন্ডিকেট তাদের সহায়তা করেছে।
চীফ হুইপ উপাধ্য আব্দুশ শহীদ তাঁর বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি ইনস্টিটিউশন। অথচ তাঁর স্বার জাল করে বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করা হচ্ছে। এটা খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়। প্রধানমন্ত্রী দিনরাত যেখানে জাতির জন্য পরিশ্রম করছেন, আর একটি মহল সরকারের বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরম্নদ্ধে দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মি প্রদানের দাবি জানান।
জবাবে ডেপুটি স্পীকার শওকত আলী বলেন, দেশের প্রচলতি আইনে এই ধরনের জাল জালিয়াতির বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর স্বার জাল করা হয়েছে সেহেতু এর বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মুজিবনগর সরকারের আত্তীকৃত নিয়ে প্রশ্ন
এর আগে সংসদে প্রশ্নোত্তরপর্বে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সরবরাহকৃত তালিকার সূত্র ধরে মঙ্গলবার সংসদে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়া পয়েন্ট অব অর্ডারে মুজিবনগর সরকারে আত্তীকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে আত্তীকৃত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্ম তারিখ ও এসএসসি পাসের সালের উদাহরণ তুলে ধরে তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কী না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।
একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাইবাছাই করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতি দাবি জানান। তবে ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব) শওকত আলী এ পয়েন্ট অব অর্ডার গ্রহণ না করে বিষয়টি নোটিস আকারে উত্থাপনের পরামর্শ দেন।
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ফজলে রাবি্ব মিয়া মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রীর উত্তরদানের জন্য নির্ধারিত তারকা চিহ্নিত ৯২৯ নম্বর প্রশ্নটি ডেপুটি স্পীকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রীর সরবারাহকৃত তালিকার (সংলগি্ন-১ ও ৩) কয়েকটি সিরিয়াল নম্বর তুলে ধরে ফজলে রাবি্ব বলেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের অনেকে ১৯৮২, '৮৩ সালে এসএসসি পাস করেছে। এই হিসেবে দেখা যাচ্ছে ওই সব কর্মচারী ১৯৭১ সালে ৩য়, ৪র্থ কিংবা ৫ম শ্রেণীতে পড়ত। এই বয়সের ছেলেরা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিল এ প্রশ্ন রেখে তিনি অনতিবিলম্বে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সনি্নবেশিত করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। তাই এই তালিকা যাচাইবাছাই করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ দিতে হবে। তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্তকারীদের চিহ্নিত করে তাদের কাছ থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ইতোপূর্বে বরাদ্দ দেয়া ভাতা ফেরত আনার দাবি জানান।

No comments

Powered by Blogger.