দ্রুত বিচার দাবির মুখেও তদন্ত গড়াচ্ছে ৫ মাসে by উজ্জ্বল মেহেদী
শিশু সাঈদ হত্যা |
সিলেটে
স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে অপহরণ করে পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ
দাবি করা হয়েছিল। মুক্তিপণের টাকা জোগাড়ও করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এরই
মধ্যে সাঈদ অপহরণকারী ব্যক্তিদের চিনে ফেলায় শেষে টাকা না নিয়ে তাকে
হত্যা করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন পুলিশের একজন সদস্য। আলোচিত এ
হত্যার ঘটনায় সিলেট নগরের খুদে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে এলাকাবাসীর পক্ষ
থেকে দ্রুত বিচারের দাবি ওঠে।
ঘটনার পরপরই খুনিরা ধরা পড়ায় ও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় বিচার দ্রুত হবে—এমন আশাই ছিল সবার। তবে ঘটনার পাঁচ মাস কেটে গেলেও পুলিশ এখনো অভিযোগপত্রই (চার্জশিট) দাখিল করতে পারেনি। দ্রুত বিচার দাবির মুখেও তদন্ত গড়াচ্ছে পাঁচ মাসে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনার পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে।
সিলেট নগরের রায়নগরের বাসিন্দা মতিন মিয়ার ছেলে আবু সাঈদ (৯) গত ১১ মার্চ অপহৃত হয়েছিল। রায়নগরের হাজি শাহমীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাঈদকে অপহরণ করে অপহরণকারীরা ওই দিনই পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দুদিন পর ১৪ মার্চ রায়নগরের পাশের এলাকা কুমারপাড়ার ঝরনারপাড় মহল্লায় পুলিশের কনস্টেবল এবাদুর রহমানের বাসা থেকে শিশু সাঈদের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার হয়। অপহরণের পর চিনে ফেলায় সাঈদকে হত্যা করে লাশ গুম করতেই বস্তায় ভরা হয়েছিল। এ ঘটনায় মতিন মিয়া বাদী হয়ে পরদিন কোতোয়ালি থানায় ধরা পড়া তিনজন ও অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকায় নগরজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সিলেটের ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরাম’ সংগঠক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, শিশু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য ও তাদের ‘সোর্স’ জড়িত থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মাত্রা ছিল বেশি। প্রতিটি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে একটিই দাবি উচ্চারিত হয়েছিল—শিশু সাঈদ হত্যার দ্রুত বিচার। কিন্তু পাঁচ মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় দ্রুত বিচারের দাবিটি পূরণের আশা এখন দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
সাঈদের বাবা মতিন মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলা গ্রামে। গৃহস্থ পরিবার, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য নগরের রায়নগর দরজিবন্দ এলাকায় থাকতেন। সাঈদের মামাসহ নিকটাত্মীয়রা প্রবাসী। সবার আদরের সাঈদহীন পরিবারে এখনো চলছে শোকের মাতম।
দুই ভাই, এক বোনের পরিবারে সাঈদ ছিল মেজো। পরিবারের ঘনিষ্ঠ সাঈদের একজন নিকটাত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে এক পুলিশ সদস্য জড়িত থাকায় শুরুতে আমরা এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু পরে পুলিশের ভূমিকা আমাদের কাছে সন্তোষজনকই মনে হয়েছিল। এখন পাঁচ মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় হতাশা ভর করছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপহরণ ও হত্যায় জড়িত পুলিশ কনস্টেবল এবাদুরের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে। তিনি ২০১০ সাল থেকে মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় কর্মরত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে। সাঈদের পরিবারের সঙ্গে এবাদুর পূর্বপরিচিত ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশের কাছে এবাদুরের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ওই রাতেই সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক এন ইসলাম তালুকদার ওরফে রাকীব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত সোর্স হিসেবে পরিচিত গেদা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওলামা লীগ নেতা রাকীবের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর। সোর্স গেদা কুমারপাড়ার বাসিন্দা।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৫ মার্চ এবাদুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১৬ মার্চ রাকীবও জবানবন্দি দেন। গেদাকে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর ২২ মার্চ আদালতে জবানবন্দি দেন। আদালতের কাছে তিনজনই অপহরণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। টাকার জন্য অপহরণ ও পরে সাঈদ তাঁদের চিনে ফেলায় এই হত্যা করা হয় বলে জবানবন্দিতে তিনজনই স্বীকার করেন।
যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. রহমত উল্লাহ গতকালও বলেন, ‘তদন্ত চলছে।’ পাঁচ মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি স্পর্শকাতর। এক পুলিশও জড়িত। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করায় একটু দেরি হচ্ছে। এখানে হতাশার কিছু নেই, শিগগির অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
ঘটনার পরপরই খুনিরা ধরা পড়ায় ও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় বিচার দ্রুত হবে—এমন আশাই ছিল সবার। তবে ঘটনার পাঁচ মাস কেটে গেলেও পুলিশ এখনো অভিযোগপত্রই (চার্জশিট) দাখিল করতে পারেনি। দ্রুত বিচার দাবির মুখেও তদন্ত গড়াচ্ছে পাঁচ মাসে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনার পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে।
সিলেট নগরের রায়নগরের বাসিন্দা মতিন মিয়ার ছেলে আবু সাঈদ (৯) গত ১১ মার্চ অপহৃত হয়েছিল। রায়নগরের হাজি শাহমীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাঈদকে অপহরণ করে অপহরণকারীরা ওই দিনই পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দুদিন পর ১৪ মার্চ রায়নগরের পাশের এলাকা কুমারপাড়ার ঝরনারপাড় মহল্লায় পুলিশের কনস্টেবল এবাদুর রহমানের বাসা থেকে শিশু সাঈদের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার হয়। অপহরণের পর চিনে ফেলায় সাঈদকে হত্যা করে লাশ গুম করতেই বস্তায় ভরা হয়েছিল। এ ঘটনায় মতিন মিয়া বাদী হয়ে পরদিন কোতোয়ালি থানায় ধরা পড়া তিনজন ও অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকায় নগরজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সিলেটের ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরাম’ সংগঠক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, শিশু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য ও তাদের ‘সোর্স’ জড়িত থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মাত্রা ছিল বেশি। প্রতিটি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে একটিই দাবি উচ্চারিত হয়েছিল—শিশু সাঈদ হত্যার দ্রুত বিচার। কিন্তু পাঁচ মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় দ্রুত বিচারের দাবিটি পূরণের আশা এখন দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
সাঈদের বাবা মতিন মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলা গ্রামে। গৃহস্থ পরিবার, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য নগরের রায়নগর দরজিবন্দ এলাকায় থাকতেন। সাঈদের মামাসহ নিকটাত্মীয়রা প্রবাসী। সবার আদরের সাঈদহীন পরিবারে এখনো চলছে শোকের মাতম।
দুই ভাই, এক বোনের পরিবারে সাঈদ ছিল মেজো। পরিবারের ঘনিষ্ঠ সাঈদের একজন নিকটাত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে এক পুলিশ সদস্য জড়িত থাকায় শুরুতে আমরা এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু পরে পুলিশের ভূমিকা আমাদের কাছে সন্তোষজনকই মনে হয়েছিল। এখন পাঁচ মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় হতাশা ভর করছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপহরণ ও হত্যায় জড়িত পুলিশ কনস্টেবল এবাদুরের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে। তিনি ২০১০ সাল থেকে মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় কর্মরত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে। সাঈদের পরিবারের সঙ্গে এবাদুর পূর্বপরিচিত ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশের কাছে এবাদুরের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ওই রাতেই সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক এন ইসলাম তালুকদার ওরফে রাকীব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত সোর্স হিসেবে পরিচিত গেদা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওলামা লীগ নেতা রাকীবের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর। সোর্স গেদা কুমারপাড়ার বাসিন্দা।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৫ মার্চ এবাদুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১৬ মার্চ রাকীবও জবানবন্দি দেন। গেদাকে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর ২২ মার্চ আদালতে জবানবন্দি দেন। আদালতের কাছে তিনজনই অপহরণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। টাকার জন্য অপহরণ ও পরে সাঈদ তাঁদের চিনে ফেলায় এই হত্যা করা হয় বলে জবানবন্দিতে তিনজনই স্বীকার করেন।
যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. রহমত উল্লাহ গতকালও বলেন, ‘তদন্ত চলছে।’ পাঁচ মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি স্পর্শকাতর। এক পুলিশও জড়িত। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করায় একটু দেরি হচ্ছে। এখানে হতাশার কিছু নেই, শিগগির অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
No comments