পুলিশ-মুরসিপন্থী সংঘর্ষ, নিহত ১৭
মিসরের নসর সিটিতে পুলিশ ও মুরসিপন্থীদের মধ্যে শুক্রবার সংঘর্ষের একপর্যায়ে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় যাত্রীরা দৌড়ে বেরিয়ে প্রাণ বাঁচান। এএফপি |
মিসরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে পুনর্বহাল করার দাবিতে গত শুক্রবার নতুন করে দেশজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর সমর্থকেরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ খবর নিশ্চিত করেছে। আগামী বুধবার মুরসির মামলার শুনানি সামনে রেখে তাঁর সমর্থক ইসলামপন্থীদের একটি জোট শুক্রবার নতুন করে বিক্ষোভের ডাক দেয়।
তবে মুরসির সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডকে গত সপ্তাহে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে ঘোষণার পর পুলিশ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিল, তারা ব্রাদারহুডের কোনো বিক্ষোভ সহ্য করবে না। তাই শুক্রবার ইসলামপন্থীরা রাস্তায় নামার পরপরই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে গুলি চালায়। মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সংঘর্ষে রাজধানী কায়রোতে ১০ জন নিহত হন। এ ছাড়া ফাইউম শহরে তিনজন, আলেক্সান্দ্রিয়ায় দুজন এবং ইসমালিয়া ও মিনায়া শহরে একজন করে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ৫৭ জন। তবে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। অবশ্য হতাহত ব্যক্তিরা বিক্ষোভকারী, পথচারী, নাকি পুলিশ, তা নিশ্চিত করেনি মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১২২ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা কায়রোতে একটি পুলিশের গাড়িতে পেট্রলবোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেন বলে জানান একজন নিরাপত্তাকর্মী।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভান বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। কায়রোর মাদি এলাকার একটি সামরিক হাসপাতালের কাছে পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজি করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরা ‘সামরিক শাসন নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দেন। দেশটির সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তাঁরা। এই সিসিই গত ৩ জুলাই মুরসিকে উৎখাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মুরসিকে উৎখাতের পর থেকে তাঁর সমর্থকেরা প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ করে আসছেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর তাঁরা জড়ো হয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ করছেন। তবে সরকার দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ায় বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা কমে আসছে। মুরসি উৎখাত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সংঘর্ষে এক হাজারের বেশি ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই ইসলামপন্থী। এ ছাড়া হাজার হাজার মুরসি-সমর্থককে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এএফপি ও আল-জাজিরা।
No comments