অভিবাসী আইন কঠোর করার ইঙ্গিত জার্মানির
অভিবাসী আইন কঠোর করার ইঙ্গিত দিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। সম্প্রতি দেশটির কোলন শহরে নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত অভিবাসী-শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো সহজ করতেই এই পদক্ষেপ। এদিকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে শহরটিতে গতকাল শনিবার বিক্ষোভ করেছে কট্টর ডানপন্থীরা। খবর এএফপি ও বিবিসির। ইংরেজি নববর্ষের দিন কোলন শহরে ভিড়ের মধ্যে ওই যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে জার্মানদের মাঝে এখনো প্রচণ্ড উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। শরণার্থীদের জন্য জার্মানির দরজা খুলে দেওয়ার নীতি সঠিক কি না, তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়, ওই ঘটনার পর পরিস্থিতি সামলাতে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে শহরটির পুলিশপ্রধানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জার্মানির বর্তমান আইন অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থীরা অন্তত তিন বছর দণ্ডিত হলেই কেবল তাঁদের স্বদেশে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো যাবে। পাশাপাশি নিজ দেশে গেলে তাঁদের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে কি না, সেটাও বিবেচ্য। এই নিয়মে বদল আনতে জার্মান চ্যান্সেলর মেরকেলের ক্ষমতাসীন দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটের নেতারা চাপ দিয়ে আসছেন। তাঁদের প্রস্তাব, যেকোনো মেয়াদে দণ্ডিত হলেই শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর সুযোগ রাখতে হবে। চ্যান্সেলর মেরকেলও গতকাল আইনে পরিবর্তন আনার পক্ষে ইঙ্গিত দিলেন।
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তন অবশ্যই ঘটবে, এমন কিছু ইঙ্গিত রয়েছে বলে আমি মনে করি। আমরা কোথায় কোথায় উন্নতি ঘটাতে পারি, তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও বিচারমন্ত্রী আলোচনা করছেন।’ বিষয়টি নিয়ে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট দলের শীর্ষ নেতারা গতকাল জার্মানির মাইনজ শহরে এক নীতিনির্ধারণী বৈঠক করেছেন। কোলন শহরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই উত্তর আফ্রিকা ও আরবের শরণার্থী বলে শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জন আলজেরিয়ার, আটজন মরক্কোর, চারজন সিরিয়ার, পাঁচজন ইরানের এবং একজন ইরাকের নাগরিক। এর বাইরে জার্মানির দুজন এবং সার্বিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের একজন করে রয়েছেন। গত এক বছরে জার্মানিতে ১০ লাখের বেশি অভিবাসী-শরণার্থী পৌঁছেছে, যাদের বেশির ভাগই উত্তর আফ্রিকা ও আরব এলাকার যুদ্ধ ও দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোর নাগরিক। জার্মানির কট্টর ডানপন্থীরা শরণার্থীদের এভাবে আসতে দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, জার্মানির কট্টর ডানপন্থী আন্দোলন পেগিডার আয়োজনে গতকাল গ্রিনিচ মান সময় বেলা একটায় কোলন শহরের কেন্দ্রীয় চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। পেগিডার অভিযোগ, ওই যৌন হয়রানির ঘটনা প্রমাণ করে, মেরকেলের উদার অভিবাসীনীতি দেশকে বিশৃঙ্খলার দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।
No comments